Advertisement
০৪ জুন ২০২৪
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল

অভিযুক্তরা হস্টেলেই, ক্ষোভ বাড়ছে

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে র‌্যাগিং কাণ্ডে অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের চার ছাত্রকে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এখনও কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। ওই চার ছাত্র এখনও হস্টেলেই রয়েছেন। তা নিয়ে ছাত্র, অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৭
Share: Save:

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে র‌্যাগিং কাণ্ডে অভিযুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের চার ছাত্রকে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এখনও কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেননি বলে অভিযোগ। ওই চার ছাত্র এখনও হস্টেলেই রয়েছেন। তা নিয়ে ছাত্র, অভিভাবকদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। অভিযুক্তরা শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র সঙ্গে যুক্ত বলেই তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিতে চাইছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে যোগ দিতে এসে জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্ত চার ছাত্রকে হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে নোটিস দেওয়া হয়নি কেন, তা খোঁজ নেব।’’

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলে এ দিন ডিএসও অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি দফতর থেকে বেরিয়ে যান। তিনি কথা বলতে চাননি বলে অভিযোগ। অভিযুক্তদের হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা আগে অধ্যক্ষ জানালেও এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে অভিযুক্তদের হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। সে কথাই বলতে চেয়েছি।’’

শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের চাপেই কর্তৃপক্ষ ব্যাবস্থা নিতে চাইছে না বলে অভিযোগ ডিএসও-র। ডিএসও-র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের সম্পাদক সৌম্যদীপ রায়, সাহরিয়ার আলমরা বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ স্পষ্টতই অভিযুক্তদের আড়াল করতে চাইছেন।’’ র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের মুখ খুলতে নিষেধ করা, নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। অভিযোগ অস্বীকার করেছে টিএমসিপি। সংগঠনের নেতা তথা জুনিয়র চিকিৎসক অভীক দে এ দিন প্রথম বর্ষের ছাত্রদের বক্তব্য রাখতে বলেন। ওই ছাত্ররা বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা এ ধরনের কাজ করতে পারে বলে আমরা মনে করি না।’’ যদিও তাদের ওই কথা টিএমসিপি-র শিখিয়ে দেওয়া বলে দাবি ডিএসও-র। অভীক বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’

প্রথম বর্ষের এক ছাত্র সম্প্রতি অভিযোগ তোলেন, রাত ১১টার পরে তাঁদের হস্টেলের কমনরুমে ডেকে মানসিক নির্যাতন চালান হয়। তিনি যেতে অস্বীকার করলে গভীর রাতে হস্টেলে তার ঘরের দরজায় লাঠি মারতে থাকে চার ছাত্র। দরজা খোলা হলে তারা প্রাণনাশের হুমকি দেয়, হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে শাসায়। কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ জানালেও কোনও ফল হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়। তাতে কলেজ কর্তৃপক্ষকেও অভিয়োগ জানাতে ভরসা পায়নি ছাত্রটি। ই-মেলে জাতীয় অ্যান্টি র‌্যাগিং সেলে অভিযোগ জানালে সেখান থেকে পুলিশ এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরেই ১৫ নভেম্বর কলেজের অ্যান্টি র‌্যাগিং সেলের সদস্য, ডিন, পুলিশ প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন অধ্যক্ষ। সেখানেই অভিযুক্ত চার ছাত্রকে হস্টেল থেকে বার করে দেওয়া এবং বিস্তারিত তদন্তের সিদ্ধান্ত হয় বলে অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন। পরে ছাত্রটি পুলিশে অভিযোগ জানালে মামলাও রুজু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

students hostel ragging
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE