কোথাও দিশি। কোথাও আবার একটু ‘ব্র্যান্ডেড’। সেই সঙ্গে ‘মাংস’। মাংস বলতে ‘ছাট’। ‘ভুরি’, ‘টেংরি’। কোথাও রেডিমেড। দোকান থেকে তৈরি করে এনে পাত পেড়ে বসে পড়ছেন। কোথাও রীতিমতো রান্নার আসর বসে পড়ছে।
গজেন বর্মন বলেন, “ভোটের কী জ্বালা। এতদিন কাওয়ে খোঁজ না ন্যায়। অ্যালা রোজে খাবার বাদে ডাকে।” আরেক ভোটার নয়ন দত্ত বলেন, “একেবারে জামাই আদর পাচ্ছি। খুব ভাল লাগছে। মাঝে মাঝে এমন ভোট হলে ভালো হয়।” বিজেপির অভিযোগ, মদ, মাংসের সঙ্গে টাকাও বিলি করছে রাজ্যের শাসক দলের কর্মীরা। ভোট পিছু ৫০০ টাকা। কেউ কেউ একটু জোর করলে হাজারও দিয়ে দিচ্ছে। তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, ওই সংস্কৃতি বিজেপির। তারাই এমনটা করার চেষ্টা করছে।
গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচনের এই অভিযোগ নতুন নয়। ভোটের মুখেই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়। অনেক ভোটারও গোপনে জানিয়ে দেন কার কাছে কতো পেলেন। কেউ কেউ আবার সবদিক থেকেই টাকা নেওয়ার ঝুঁকিও নিয়ে নেন। এবারে কোচবিহারে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল ও বিজেপি। তাঁদের মধ্যেই এই চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, দিনহাটা, কোচবিহার দক্ষিণ থেকে নাটবাড়ি, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জ, সিতাই, তুফানগঞ্জ সর্বত্র একই ছবি। অভিযোগ, রাতে বা দিনে গেলেও শাসক দলের আস্তানায় এমন আয়োজন চোখে পড়বে। কোচবিহার উত্তর, মেখলিগঞ্জে আবার বিজেপির বিরুদ্ধেও এমন অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে পোয়াবারো মাংস বিক্রেতা থেকে মদ বিক্রেতাদের।
ছাট মাংসের দামও এক লাফে বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছে। পাঁঠার ছাটের ক্ষেত্রে ২০০ টাকা থেকে তা ২৫০ টাকায় চলে গিয়েছে। আর মুরগির (ব্রয়লার) ছাঁট পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকার মধ্যেও। এক মাংস বিক্রেতা বলেন, “এখন চাহিদা বেশি। আগে শুধু কিছু হোটেল কর্মী বা খুব গরিব লোকেরা নিয়ে যেত। এখন তো লম্বা লাইন পড়ে যায়। তাই একটু দাম বাড়িয়েছি।” আর গ্রামে গ্রামে তো দিশি মদ বিক্রেতাদের বিক্রি একলাফে কয়েক গুণ বেড়েছে।
চিলকিহাটের এক দেশি মদ বিক্রেতার কথায়, “ঝুঁকি একটু বেড়েছে। তাতেও যা চাহিদা এই সময় তাতে কয়েক গুণ লাভ থাকছে। তাই ঝুঁকি নিয়েই অর্ডার নিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছি।” পুলিশ ও প্রশাসনের তরফ থেকে অবশ্য ওই ব্যাপার ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “এমন অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy