Advertisement
E-Paper

পাহাড়ে রক্ষণাত্মক মোর্চা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরকে সামনে রেখে সাজো সাজো রব পাহাড়ে। কেউ দলের শক্তি কতটা বেড়েছে তা দেখাতে আসরে নেমে পড়েছেন। কেউ পাহাড়ি রাস্তায় প্রায় ৪৫ কিলোমিটার মানব-বন্ধন করে নিজেদের ক্ষমতা জাহিরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০২:১৭
পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।

পাহাড়ে মুখ্যমন্ত্রী। ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরকে সামনে রেখে সাজো সাজো রব পাহাড়ে। কেউ দলের শক্তি কতটা বেড়েছে তা দেখাতে আসরে নেমে পড়েছেন। কেউ পাহাড়ি রাস্তায় প্রায় ৪৫ কিলোমিটার মানব-বন্ধন করে নিজেদের ক্ষমতা জাহিরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রাজ্যের শাসক দল ও তাদের সহযোগীদের উদ্দীপনা দেখে সাবধানে পা ফেলছেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুঙ্গও। তাই দলের একাংশের চাপ থাকলেও আপাতত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও সংঘাতে যাবেন না বলে স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছেন গুরুঙ্গ।

যেমন, শুক্রবার গুরুঙ্গরা ঘোষণা করেছেন, ফি বছর ১৩ জুলাই জিটিএ-এর পক্ষ থেকে নেপালি কবি ভানুভক্তের জন্মদিন পালন হলেও এবার তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই অনুষ্ঠান হবে ২২ জুলাই। গুরুঙ্গের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বিনয় তামাঙ্গের বক্তব্য, ‘‘আসলে মুখ্যমন্ত্রী ওই সময় পাহাড়ে কবির জন্মদিন পালন করবেন। একই দিনে দু’টি অনুষ্ঠান হলে ভাল দেখাবে না। ভুল বার্তা যাবে। তাই জিটিএ সভাপতি পরে অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’

জিএনএলএফ ও তৃণমূলের পাহাড় শাখার অনেকেই মনে করছেন, বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীরা প্রায় ঘাড়ের কাছে নিশ্বাস ফেলায় গুরুঙ্গরা উদ্বিগ্ন। উপরন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর যে দিন পাহাড়ে পৌঁছবেন, সেই ১১ জুলাই জিএনএলএফ রোহিণী থেকে দার্জিলিং রেল স্টেশন পর্যন্ত মানব-বন্ধন করে তাঁকে স্বাগত জানাবে বলে ঘোষণা করেছে। গত বিধানসভায় জিএনএলএফ তৃণমূলকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছিল। সম্প্রতি জিএনএলএফ প্রধান মন ঘিসিঙ্গকে একাধিক সরকারি কমিটির পদে বসিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী বছর পাহাড়ে জিটিএ ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে জিএনএলএফ ও হরকাবাহাদুর ছেত্রীর জন আন্দোলন পার্টির সঙ্গে জোটের সুবাদে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছেন তৃণমূলের পাহাড় নেতারা। সে জন্য ইতিমধ্যেই পাহাড়ের তিন মহকুমায় কোমর বেঁধে নেমেছেন তাঁরা।

এই অবস্থায়, তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে আগের মতো ‘সুসম্পর্ক’ গড়ে তোলা যায় কি না সেই চেষ্টায় নেমেছেন মোর্চার একাংশ। মোর্চার অন্দরের খবর, দলের একটা অংশ ভানুভক্তের জন্মদিন একই দিনে করার উপরে জোর দিলেও গুরুঙ্গরা সেই প্রস্তাব সটান উড়িয়ে দিয়েছেন। মোর্চার একাধিক নেতা একান্তে জানান, অতীতে যখন মমতা-গুরুঙ্গ সম্পর্ক ভাল ছিল, সে সময়ে পাহাড়ে তৃণমূল শক্তি প্রদর্শন কিংবা জোট গড়ার ব্যাপারে কখনও আন্তরিক হয়নি। বরং, জিটিএ ভোটে অনেক আসনে প্রার্থী দিয়েও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি তৃণমূল।

পাহাড়ে তৃণমূল-জিএনএলএফ-জন আন্দোলন পার্টি তো আছেই, গোর্খা লিগও তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন। সে কারণেই গুরুঙ্গকে মেপে পা ফেলতে হচ্ছে বলে দলের অনেকেই একান্তে মানছেন। তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেন মুখিয়া বলেন, ‘‘বাম আমলে গুরুঙ্গদের জেদের কাছে নতি স্বীকার করে শাসক দল সিপিএমের জেলা সম্মেলন পাহাড় থেকে সরাতে হয়েছিল সমতলে। কিন্তু, এখন সে সবই অতীত। গত বিধানসভা ভোটে দার্জিলিঙের মানুষ বুজিয়ে দিয়েছেন, পাহাড়ে একচেটিয়া দাদাগিরির দিন শেষ। সেটা যাঁরা যত তাড়াতাড়ি বোঝেন, ততই মঙ্গল।’’ (সহ প্রতিবেদন: রেজা প্রধান)

Mamata Banerjee Bimal Gurung
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy