Advertisement
E-Paper

কাউন্সিলরের পদত্যাগে গোপন আঁতাতের নালিশ

পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সৌমেন সরকার আচমকা ইস্তফা দিয়েছেন। তাতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সৌমেনবাবুর ইস্তফার পিছনে রয়েছে তৃমমূলের সঙ্গে আঁতাত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৫ ০২:৩৯

পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সৌমেন সরকার আচমকা ইস্তফা দিয়েছেন। তাতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, সৌমেনবাবুর ইস্তফার পিছনে রয়েছে তৃমমূলের সঙ্গে আঁতাত। সৌমেনবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি কাজ করতে পারছেন না বলেই ইস্তফা দিয়েছেন।

বিরোধীদের অভিযোগ, সৌমেনবাবু কাউন্সিলরের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হবে। উপনির্বাচন হলে এখানে তৃণমূল প্রার্থী পদে প্রধান দাবিদার হবেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা দলের শহর সভাপতি বিভূতিভূষণ ঘোষ। সৌমেনবাবুর কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পিছনে বিভূতিবাবুর সঙ্গে গোপন আতাঁত রয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী বিপ্লব ঘোষ বলেন, ‘‘আর এখন ভোটে জিতে মানুষের সঙ্গে তিনি প্রতারণা করলেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা করে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এর জবাব আগামী সময়ে মানুষই দেবেন।’’

যদিও সৌমেনবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে কোনও কাজ হচ্ছে না। আমাকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই আমি কাউন্সিলরের পদ থেকে ইস্তফা চেয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়েছি। এখানে কারও সঙ্গে গোপন আঁতাতের প্রশ্ন নেই।’’ আতাঁতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিভূতিবাবুও। তিনি বলেন, ‘‘সৌমেনের ইস্তফা দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই ওয়ার্ডে উপনির্বাচন হলে আমর প্রার্থী হওয়া আমার হাতে নেই। প্রার্থী কে হবেন তা ঠিক করবে দল। অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান স্বাধীন ঘোষকে সরাতে বিরোধী দলগুলি অলিখিত মহাজোট করেছিল। এই ওয়ার্ডে জয়ী হয়ে কাউন্সিলর হন বিজেপি প্রার্থী সৌমেন সরকার। পুরসভার বিরোধী দলনেতাও করা হয় তাঁকে। গত ৯ অগস্ট কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা চেয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান এবং মালদহের জেলা শাসকের কাছে চিঠি পাঠান তিনি। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শহর জুড়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দলের অন্য কাউন্সিলরেরাও হতবাক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘বিরোধীদের কাজ করতে দেওয়া হবে না এটাই এখন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তা বলে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত সমর্থনযোগ্য নয়। এখানে গোপনে আঁতাত হলেও হতে পারে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সৌমেনবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের পুরাতন মালদহের দাপুটে নেতা বিভূতিবাবুর বোঝাপড়া হয়ে থাকতে পারে। কারণ এ বারের পুরসভার নির্বাচনে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ছিলেন বিভূতিবাবু। এই ওয়ার্ডের মহাজোটের প্রার্থী পরিতোষ সরকারের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে জেতার জন্য মরিয়া প্রয়াস করেছিলেন তিনি। হেরে যাওয়ার পর থেকে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এই দাপুটে নেতা। নিজের অস্তিত্ব কায়েম রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছেন তিনি। তৃণমূলের একাংশ জানিয়েছেন, এমন পরিস্থিতিতে পুরসভায় উপনির্বাচন হলে দলের প্রার্থী পদের প্রধান দাবি দার বিভূতিবাবুই। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বিভূতিবাবুকে বাড়তি সুযোগ দেওয়ার জন্যই কি তড়িঘড়ি এমন সিদ্ধান্ত নিলেন সৌমেনবাবু? ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের প্রার্থী পলাশ ঘোষ বলেন, ‘‘যে কোনও ওয়ার্ডে বিভূতিবাবু উপনির্বাচন করতে মরিয়া। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে কাউন্সিলর সৌমেন বাবুর ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের পিছনে তাঁরই হাত থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে উপনির্বাচন হলে ফের আমরা জোটবদ্ধ হয়ে লড়ব।’’

সৌমেনবাবু ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের মুখে শুনেছি। উনি আমাদের কিছু জানাননি।’’ পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ বলেন, ‘‘আমি এমন কোনও চিঠি পাইনি।’’ মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘ইস্তফা দেওয়ার চিঠি পেয়েছি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

BJP Malda soumen sarkar congress trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy