চা-বাগান। ফাইল চিত্র।
ময়নাগুড়ির সভায় প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন তাঁর সরকার উত্তরবঙ্গের বন্ধ চা বাগান খুলে দিয়েছে। সেই দাবি নিয়ে স্থানীয় নেতাদের অনেককেই যে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে তা একান্তে স্বীকারও করে নিচ্ছেন তাঁরা। এটাও বলছেন যে চা বলয়ে বাগান খোলানো নিয়ে কিছু বলার সময়ে আরও সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে বিজেপির ৮ জেলার বৈঠকেও চা বাগানে প্রচারে বাড়তি সাবধানতার প্রসঙ্গ উঠেছে। ওই বৈঠকের পরে বীরপাড়া-মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘বন্ধ বাগান খোলানোর বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। তা নিয়ে কিছু বলার আগে কিংবা সেখানে প্রচারের সময়ে অতি সতর্ক থাকতে হবে। যাতে কোনও ভুল বোঝাবুঝি না হয়।’’
দল সূত্রের খবর, সোমবার চার্চ রোডের মারোয়াড়ি ভবনে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-সমতলের জেলার শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্য বিজেপির প্রতিনিধিরা। সেই বৈঠকে মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক চলাকালীন আসন্ন লোকসভা ভোটের মাইকবিহীন প্রচার কী ভাবে চলবে তা নিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। তখনই চা বলয়ে প্রচার করতে গেলে নানা প্রশ্নের মুখে পড়ার আশঙ্কা করেন কয়েকজন।
৮ ফেব্রুয়ারি ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে দলের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বন্ধ বাগান খুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন। যদিও কোন কোন বাগান খোলা হয়েছে তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি। এই নিয়ে বিজেপির বাগান এলাকার নেতারা সমালোচনার মুখে পড়েন। তৃণমূলের তরফে সৌরভ চক্রবর্তী, মোহন শর্মারা জানান, কয়েক বছর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ডানকানের বন্ধ বাগানগুলো অধিগ্রহণ করে খোলানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপরে আর কাজ হয়নি। তৃণমূল নেতাদের আরও দাবি, রাজ্য সরকারের চেষ্টায় ৫টি বাগান খুলেছে এবং আরও ২টি খোলানোর প্রক্রিয়া চলছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরে বাগানে যে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে, সেটা বিজেপির অনেক নেতাই একান্তে মানছেন। জলপাইগুড়ির তৃণমূল জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘বিজেপির স্বরূপ চা বাগানের বাসিন্দারা বুঝে গিয়েছে। এখন সতর্ক হয়ে লাভ হবে না।’’
এ দিনের বৈঠকে জন বার্লা ছিলেন না। তাঁর কয়েকজন অনুগামী জানান, তাঁদের দলের লোকজনদের বোঝাতেই ঘাম ঝরাতে হচ্ছে। এই উদ্বেগ যে যুক্তিসঙ্গত সেটা মেনে নিয়েছেন জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের বিজেপির কয়েকজন শীর্ষ নেতাও। সেটা তাঁরা প্রদেশ নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়দের জানিয়েও দিয়েছেন। এ দিনের বৈঠকের পরে বীরপাড়া-মাদারিহাটের বিধায়ক বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের চাহিদা খুবই কম। কিন্তু, তাঁরা অতি মাত্রায় সংবেদনশীল। ফলে, সেখানে প্রচারের সময়ে অতি সাবধানী থাকাই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy