পরীক্ষার আগেই ফাঁস প্রশ্নপত্র। প্রতীকী চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের একাদশ শ্রেণির সংস্কৃত পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই আলিপুরদুয়ার জেলায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তুলল বিজেপি। শনিবার দুপুর ২টো নাগাদ ওই পরীক্ষা হয়। কিন্তু বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, বেলা ১১টা নাগাদ প্রশ্নপত্র সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত-সহ শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানায় বিজেপি। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অবশ্য বক্তব্য, একাদশ দ্বাদশের পরীক্ষা পুরোপুরি স্কুলের দায়িত্বে হয়।
সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় মোট ১০৯টি পরীক্ষাকেন্দ্রে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। তার মধ্যে ৮২টি কেন্দ্রে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা হচ্ছে। আর ২৭টি স্কুলে শুধু একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা চলছে। শনিবার একাদশের পরীক্ষা শুরুর প্রায় তিন ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সঙ্গে একাদশ শ্রেণির সংস্কৃত পরীক্ষার প্রশ্নও মিলে যায় বলে খবর। বিষয়টি সামনে আসতেই শাসক দলকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিজেপি। তবে তৃণমূলের দাবি, এই প্রশ্ন আলিপুরদুয়ার জেলা থেকে ছড়িয়েছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। অন্য কোনও জেলা থেকেও এ ঘটনা ঘটতে পারে।
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাস বলেন, ‘‘একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগেরদাবি জানাই।’’
আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা উচ্চ মাধ্যমিকের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডভাইজ়ারি কমিটির জয়েন্ট কনভেনার ভাস্কর মজুমদার বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি দেখে, সংশ্লিষ্ট জায়গায় জানিয়েছি। তারা দেখছে, কোথা থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। যাঁরা প্রশ্ন প্রথমে পাচ্ছেন, তাদের কাছে অনুরোধ করব, উৎস সামনে আনুন। এখনও পর্যন্ত যা খবর, আমাদের জেলায় প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। এই জেলায় কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে, আইনি ব্যবস্থা নেব।’’ তিনি বিজেপিকে কটাক্ষ করেন বলেন, ‘‘বিজেপি সব কিছুই রাজনীতি খোঁজে। মানুষ ওদের যথা সময়ে যোগ্য জবাব দেবে।’’
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পাশাপাশি যে স্কুলে একাদশ থেকে দ্বাদশের পরীক্ষা হচ্ছে, তার প্রশ্নপত্র যায় উচ্চ মাধ্যমিকের প্রশ্ন যখন থানা থেকে যায়, তখনই। অর্থাৎ, সকালেই। কিন্তু যে স্কুলগুলিতে শুধু একাদশ থেকে দ্বাদশের পরীক্ষা হচ্ছে, সেখানে যখন পরে প্রশ্ন যায়, তখন আর পুলিশি পাহারা যাকে না। তাই জানা সম্ভব নয়, স্কুলে কী হচ্ছে। পড়ুয়ারা হোম-সেন্টারে পরীক্ষা দিচ্ছে, গার্ড দিচ্ছেন নিজের স্কুলের শিক্ষকেরা এবং খাতাও দেখছেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই।’’ শিক্ষকদের একাংশ অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, কিছু স্কুলে সকালে প্রশ্ন পত্র যাওয়া নিয়ে। তাঁদের বক্তব্য, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত প্রশ্ন পড়ে থাকে স্কুলে। দেখা যচ্ছে, বেশিরভাগ ফাঁস হয় এই সময়েই।
পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির রাজ্য সভাপতি হিরালাল মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘কিছু শিক্ষক টিউশনের পসার বাড়াতে প্রশ্ন ফাঁস করছেন। তদন্ত করে, উপযুক্ত শাস্তি দিক সংসদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy