Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নির্মাণ সংস্থার অফিসে বোমা, নালিশ

ফোনে হুমকি দিয়ে একাধিকবার টাকা চাওয়া হয়েছিল নির্মাণ সংস্থার কাছে। দাবি মতো টাকা না মেলায় নির্মাণ সংস্থার ক্যাম্পে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। রবিবার গভীর রাতে মালদহের মানিকচকের ভুতনির শঙ্করটোলায়, এই ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩০
Share: Save:

ফোনে হুমকি দিয়ে একাধিকবার টাকা চাওয়া হয়েছিল নির্মাণ সংস্থার কাছে। দাবি মতো টাকা না মেলায় নির্মাণ সংস্থার ক্যাম্পে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। রবিবার গভীর রাতে মালদহের মানিকচকের ভুতনির শঙ্করটোলায়, এই ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

বিরোধীদের অভিযোগ, গোটা রাজ্যের মতো মানিকচকেও সিন্ডিকেট রাজ চলছে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা টাকা না পেয়ে নির্মাণ সংস্থার ক্যাম্পে বোমা বাজি করেছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিকে, ঘটনার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই নির্মাণ সংস্থার কর্মীরা।

সোমবার সকালে সংস্থার তরফে ভুতনি থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা বলেন, ‘‘ঘটনার পরই পুলিশ গিয়েছিল। আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

মানিকচক থেকে ভুতনিকে পৃথক করেছে ফুলহার নদী। উত্তর ও দক্ষিণ চন্ডীপুর এবং হীরানন্দপুর এই তিনটি পঞ্চায়েত রয়েছে ভুতনিতে। ভুতনির মানুষ দীর্ঘদিন ধরে সেতুর দাবি করে আসছিলেন। ২০১৪ সালে ফুলহার নদীর উপরে পাকা সেতুর তৈরি উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১২০ কোটি টাকা বরাদ্দে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। বরাত পায় কলকাতার এক ঠিকাদার সংস্থা।

ওই ঠিকাদার সংস্থা ভুতনির উত্তর চন্ডীপুরের শঙ্করটোলা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে। ওই ক্যাম্পে এক ইঞ্জিনিয়র সহ ৩২ জন কর্মী থাকেন। অভিযোগ, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ওই নির্মাণ সংস্থার মালদহ শাখার এক ম্যানেজারকে ফোন করে একাধিকবার টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে একটি নম্বর থেকেই একাধিকবার ফোন করা হয়েছিল। ১০ মার্চ ভুতনি থানাতে ওই ফোন নম্বর দিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ওই সংস্থা।

এরপরেও অন্য নম্বর থেকে ফোন করে ফের হুমকি দেওয়া হয়। এ দিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ক্যাম্পে যখন আধিকারিক ও কর্মীরা ঘুমিয়ে ছিলেন সেই সময় পরপর দু’টি বোমা পড়ে বলে অভিযোগ। গভীর রাতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রাতেই ঘটনাস্থলে আসে ভুতনি ফাঁড়ির পুলিশ। ওই নির্মাণ সংস্থার এক ইঞ্জিনিয়ার সাবিয়া খান বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষকে ফোন করে হুমকি দেওয়ার মতো ঘটনা আগেই ঘটেছিল। এবার বোমা বাজির ঘটনা ঘটল। আমরা খুবই আতঙ্কে রয়েছি। কারা এমন করল তা আমরা বলতে পারব না। তবে পুলিশের উচিৎ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করা।’’ ওই নির্মাণ সংস্থার এক আধিকারিক জানান, পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়ে একাধিকবার ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে। থানায় ফোন নম্বর দিয়ে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।

এদিকে, এই তৃণমূলের যোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে বিরোধী দলগুলি। মানিকচকের কংগ্রেস প্রার্থী মোত্তাকিন আলম বলেন, ‘‘ভোটে প্রচুর টাকা খরচ করেছে তৃণমূল। সেই টাকা তোলার জন্য ওই নির্মাণ সংস্থাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বোমাবাজি করা হচ্ছে।’’

যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে আমল দিতে চাননি বিদায়ী মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘ভুতনি ব্রিজ আমাদেরই উদ্যোগে করা হচ্ছে। আমাদের জিনিসে আমরা কেন বোমা মারব। বিরোধীরা অপপ্রচার করছে। পুলিশকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bomb Construction Company Office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE