Advertisement
E-Paper

বন্ধ চা বাগানে বোনাস

মালিক বাগান বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকেরা তারপরে নিজেরা কমিটি গড়ে বাগান চালাচ্ছেন। তাঁরাই এ বার পুজোর সময় বোনাসও দিলেন। জয়বীর পাড়া চা বাগানের এই ঘটনায় খুশি ডুয়ার্সের অন্য চা বাগানের শ্রমিকেরাও।

রাজকুমার মোদক

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৫
শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে বোনাস। — নিজস্ব চিত্র

শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে বোনাস। — নিজস্ব চিত্র

মালিক বাগান বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকেরা তারপরে নিজেরা কমিটি গড়ে বাগান চালাচ্ছেন। তাঁরাই এ বার পুজোর সময় বোনাসও দিলেন। জয়বীর পাড়া চা বাগানের এই ঘটনায় খুশি ডুয়ার্সের অন্য চা বাগানের শ্রমিকেরাও।

এ বছর ২২ মার্চ বাগান বন্ধের নোটিস টাঙিয়ে রাতের অন্ধকারে পালিয়ে যায় বাগান কর্তৃপক্ষ। তারপরে গত এপ্রিল মাসে প্রসাশনের মৌখিক অনুমতি নিয়ে বাগানের শ্রমিক নেতা ও শ্রমিকরা মিলে গঠন করে ৪৫ জনের অর্গানাইজিং ম্যানেজিং কমিটি। দেবীপক্ষের শুরুতে ওই কমিটিই শ্রমিকদের ১৫ শতাংশ পুজো বোনাস দিল।

এই কমিটিই পাতা তুলে বিক্রি করে। উপার্জিত টাকা থেকে শ্রমিকদের বেতন ও যাবতীয় খরচ করে তার থেকে কিছু কিছু করে টাকা জমাতে থাকে কমিটি। কমিটি শুরুর সময় থেকেই পূজা বোনাসের কথা মাথায় রেখেছিল। শারদীয়ার গন্ধ পেতেই শুরু হয় বোনাস দেওয়ার হিসেব নিকেশ। সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বোনাসের জন্য ৭ লক্ষ টাকা জমা হয়। ওএমসি কমিটির সভাপতি হরি রাই জানান, “আমরা প্রথম থেকেই সম্পদ তৈরি করছিলাম। ওই কমিটি থেকেই বোনাস দেওয়া হয়। বন্ধ বাগানে ১৫ শতাংশ বোনাস হওয়াতে আমরা সবাই খুশি। শ্রমিকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকাতে বোনাস দেওয়া সম্ভব হল। তবে আমাদের দাবি বাগান খুলুক ”

বাগানে পুজোর বোনাস পাওয়ায় খুশিও শ্রমিক মহল্লাতে। তাঁরা ভাবতেও পারেননি বোনাস মিলবে।

বাগানের বড়া লাইনের শ্রমিক সুশিলা তাঁতি ও হিরালাল ওড়াঁও বলেন, “মা দুর্গার আশীর্বাদে বাগানে বোনাস পেয়ে দারুণ খুশি হয়েছি। পুজোয় আর চুপ করে বসে থাকব না। পরিবার নিয়ে আনন্দ খবর। আর দেবীর পায়ে কামনা করব, বাগানটা খুলে দাও।”

বাগানটি বন্ধ হওয়ার পর থেকে মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক জন শ্রমিক। কমিটি হওয়ার পর থেকে সাপ্তাহিক মজুরি পেতে থাকেন শ্রমিকরা। মজুরি দিনে ১০০ টাকা এবং অতিরিক্ত সময়ের জন্য পাতা তুললে ঘন্টায় ৪ টাকা কেজি পান শ্রমিকরা। এখনও জলের কিছুটা সমস্যা আছে বাগানে। অচিরেই সেই সমস্যা মিটবে বলে দাবি কমিটির। ৬৩৬ জন বাগানের শ্রমিক-কর্মচারি সেই দুঃখ ভুলে আস্তে আস্তে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছে শ্রমিকরা।

মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের বিডিও রাজীব দাশগুপ্ত বলেন, “ ওই বাগানের বোনাসের ব্যাপারে আমাকে জানান হয়নি। তবে বাগানের শ্রমিকরা বোনাস পেলে ভাল হয়।”

ডুয়ার্সের ও ডানকানের অচল বীরপাড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা রবিনসন কুজুর বলেন, “জয়বীরপাড়া চা বাগানের কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই। বীরপাড়া চা বাগানে সে রকম কোন কমিটি নেই। ডিভিশন সহ ছোট ছোট ১৪ টি কমিটি করে কোন রকমে বাগান চলছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে দেখি পুজোর মুখে শ্রমিকদের হাতে দুই চার’শ টাকা দেওয়া যায় কি না।”

ডুয়ার্সের বন্ধ সুরেন্দ্রনগর চা বাগানের শ্রমিক জয়া মিনজ বলেন, “ বন্ধ বাগানে আবার পুজোর বোনাস? তবে, মাসিক ১৫০০ টাকা ভাতার মত পুজোর মাসে ১৫০০ টাকা বেশি পাই। তবে এবার এখনও পাইনি। সেটাও দেবে কিনা জানি না।”

dooars tea estate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy