Advertisement
E-Paper

আজ ডুয়ার্সের বাগানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক এবং সুরেন্দ্রনগর চা বাগান। বানারহাটের এই দুই বাগানকেই পরিদর্শনের জন্য বেছে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। সাম্প্রতিক কালে বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে অর্ধাহার-অপুষ্টিতে ৩৭ জন শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জলের অভাবে দিন কাটাতে হয় দুই বাগানের শ্রমিকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৫ ০২:১৩

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক এবং সুরেন্দ্রনগর চা বাগান। বানারহাটের এই দুই বাগানকেই পরিদর্শনের জন্য বেছে নিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ। সাম্প্রতিক কালে বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে অর্ধাহার-অপুষ্টিতে ৩৭ জন শ্রমিকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ, পানীয় জলের অভাবে দিন কাটাতে হয় দুই বাগানের শ্রমিকদের। বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের একাংশ পাথর ভাঙার কাজ খুঁজতে ভূটানে, কেউ বা ভিনরাজ্যে চলে গিয়েছে। বাগান বন্ধ থাকায় মেয়ে পাচার চক্রও সক্রিয় হয়েছে বলে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী দুই বন্ধ বাগানে আসায় আশার সঞ্চার হয়েছে চা শ্রমিকদের মধ্যে। স্বেচ্ছাসেবী এবং চা শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য বৈঠকের ফলাফল না দেখে উচ্ছসিত হতে রাজি নয়। তাঁদের বক্তব্য, এর আগেও রাজ্য এবং কেন্দ্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বন্ধ চা বাগান ঘুরে গিয়েছেন। পরিদর্শন-বৈঠকের পরে সরকারি সাহায্য বাড়লেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বন্ধ বাগান খোলা সম্ভব হয়নি বলে অভিযোগ।

চা পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডুয়ার্সে যাবেন। দুটি বাগান পরিদর্শন সেরে রাতে শিলিগুড়িতে ফিরবেন তিনি। পরদিন, রবিবার শিলিগুড়ির একটি হোটেলে বন্ধ বাগান খোলা এবং উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করবেন। বৈঠকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। এর আগে গত বছর কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী অসমের গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের চা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। সে সময়েই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরে আসার কথা থাকলেও, কয়েক দফায় পিছিয়ে যায়। তা নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছিল চা শ্রমিক সংগঠগুলির মধ্যে। গত এপ্রিল মাসে ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীক সফর চূড়ান্ত হলেও, পুরভোটের বিধি-নিষেধ চলতে থাকায় সেই সফর পিছিয়ে যায়।

তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি অলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনেকদিন ধরেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসবেন বলে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্ত তা হয়নি। রাজ্যের চা শিল্পের জন্য কেন্দ্রের যে দায়িত্ব রয়েছে, তার অনেকটাই উপেক্ষিত থেকেছে। দেখা যাক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এসে কী বলেন। তবে উনি সব বাগানে গেলেই ভাল করতেন।’’

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সরকারি সফর সূচিতে দু’টি বাগান পরিদর্শনের কথাই বলা রয়েছে।

২০০৩ সালে প্রথমবারের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ডুয়ার্সের রেডব্যাঙ্ক চা বাগান। তারপরে কয়েকবার বাগানটি খুললেও, বেশিদিনের জন্য খোলা থাকেনি। রেডব্যাঙ্ক চা বাগানের শ্রমমিক সংখ্যা ন’শোর কাছাকাছি। অস্থায়ী শ্রমিক অনান্য কর্মী এবং তাঁদের পরিবার মিলিয়ে রেডব্যাঙ্কে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা রয়েছেন। পাশের সুরেন্দ্রনগর চা বাগানের স্থায়ী শ্রমিক সংখ্যা সাড়ে তিনশো। ডুয়ার্সে বর্তমানে ৭টি বাগান বন্ধ রয়েছে। এই দু’টি বাগান ছাড়াও, ঢেকলাপাড়া, বান্দাপানি, ধরণীপুর, সোনালি, মধু বাগান বন্ধ রয়েছে। নিমর্লা সীতারামনের আগে জয়রাম রমেশ কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী থাকার সময়ে একাধিকবার ডুয়ার্সের বন্ধ চা বাগান পরিদর্শনে এসেছিলেন। সে সময় ডুয়ার্সে ১৪টি বাগান বন্ধ ছিল। বিভিন্ন চা শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, সে সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফরের পরেও বাগান খোলেনি।

২৩টি চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের আহ্বায় জিয়াউর আলমের কথায়, ‘‘রাজ্য এবং কেন্দ্র দু’পক্ষ একসঙ্গে উদ্যোগী না হলে চা বাগান খোলা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সফরে আসছেন, তাঁকে স্বাগত। সফর কতটা ফলপ্রসূ হল, তা বৈঠকের পরেই বোঝা যাবে।’’ কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সফর ঘিরে বড় বাগানের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ছোট চা বাগানগুলিতেও আশা তৈরি হয়েছে। ছোট চা চাষিরা পাতার নূন্যতম দাম পান না বলে অভিযোগ। চা পর্ষদ থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর পাতার যে দাম বেঁধে দেয়, তা উৎপাদন খরচের থেকে কম বলে চা চাষিদের দাবি। এই বিষয়গুলি নিয়েও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করবে বলে জানিয়েছে ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা। সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পাতার নূন্যতম দাম বেঁধে দেওয়া, ছোট এবং অতি ক্ষুদ্র চা কারখানা তৈরির অনুমতি দেওয়া চা চাষিদের প্রশিক্ষণের জন্য আরও উদ্যোগী হওয়ার দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানাব।’’

banarhat closed tea gardens doors tea garden banarhat tea garden nirmala sitaraman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy