Advertisement
০৫ মে ২০২৪

হাসপাতালেই বেড়ে উঠছে বাবুই-দোয়েল

এই ফুটফুটে দুই শিশু যাতে আর পাঁচটা শিশুর মত বেড়ে ওঠে, সেই দাবিতে সরব হয়েছে জলপাইগুড়ির একটি মহিলাদের সমাজসেবী সংগঠন ‘সুচেতনা’। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে ওই চেষ্টা চলছে।

খুদে: হাসপাতালে বাবুই ও দোয়েল।

খুদে: হাসপাতালে বাবুই ও দোয়েল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৮ ০৩:১২
Share: Save:

বাবুই আর দোয়েল। সমবয়সী ফুটফুটে দুই ভাই বোন। কিন্তু ওদের বাবা মা আলাদা। ওরা বেড়ে উঠছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের শিশুদের ওয়ার্ডে।

এই ফুটফুটে দুই শিশু যাতে আর পাঁচটা শিশুর মত বেড়ে ওঠে, সেই দাবিতে সরব হয়েছে জলপাইগুড়ির একটি মহিলাদের সমাজসেবী সংগঠন ‘সুচেতনা’। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে ওই চেষ্টা চলছে।

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চার মাস আগে ওদের এক জনকে ময়নাগুড়ির দিক থেকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে আনা হয়। আর এক জনের মা অপ্রকৃতিস্থ থাকায় তার ঠাঁই হয় সদর হাসপাতালে। তারপর থেকে দুই শিশুই সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বেড়ে উঠছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বন্দোবস্তে দু’বেলা চারজন আয়া তাদের দেখভাল করে। তাদের শিশুখাদ্যও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সরবরাহ করে। নিয়মমতো খাওয়া, ঘুম এমনকী, কোলে করে ঘুরে বেড়ানো সবই হয়। রবিবার সকালে গিয়ে দেখা গেল বাবুই ঘুমোচ্ছে। আর দোয়েল হাঁ করে তাকিয়ে সব কিছু দেখছে।

সোমবার দিনের বেলা তাদের দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন সন্ধ্যা বারুই এবং দীপা রায়। তারা বলেন, “ওদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সবসময় হাসিখুশি থাকে। বাকি সময় ঘুমিয়ে থাকে।” বাবুই আর দোয়েল নামদু’টিও ওদের হাসপাতালের কর্মীরা দিয়েছেন। চার মাসের মধ্যে ওরা হাসপাতালের সবার কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। শিশুদের ওয়ার্ডে যারাই যান ওদের একবার করে আদর করে আসেন। ওরাও সবসময় সবার দিকে পরিচিতের মতো তাকিয়ে থাকে। নার্সদের দাবি, হয়তো অবচেতন মনে ওদের চোখ খুঁজে বেড়ায় হারিয়ে যাওয়া বাবা মাকে।

খবর পেয়ে ২মে তারিখে ওদের দেখতে যান ‘সুচেতনা’র সদস্যরা। তারা ওদের খাওয়ার জন্য বেবি ফুড, এবং খেলনা দিয়ে আসেন। সংগঠনের সভাপতি বনানী মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চাই এরকম ফুটফুটে দু’টি শিশু যেন কোনও পরিবারের মধ্যে অন্য শিশুদের মতো বেড়ে ওঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা সেই ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন করেছি।”

জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “আমরা কলকাতায় চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে সব কিছু জানিয়ে চিঠি দিয়েছি। তার যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা কোনও উত্তর পাইনি।”

জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “এরকম শিশু অনেক হাসপাতালে বড় হচ্ছে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির উচিৎ দায়িত্ব নিয়ে আইন মেনে কোনও নিঃসম্তান দম্পতির কাছে শিশুগুলোকে দত্তক দেওয়া। তাহলে ওই দম্পতিরাও সন্তান পাবে এবং শিশুগুলোও একটা পরিবারের মধ্যে বেড়ে উঠবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child welfare committee New born babies
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE