Advertisement
২২ মে ২০২৪

প্রতিষ্ঠান বিরোধিতায় আশা দেখছে বিরোধীরা

একক ভাবে তৃণমূল কখনও মালবাজার পুরবোর্ডের দখল নিতে পারেনি। বরাবরই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পুরবোর্ড চালাতে হয়েছে তাদের। এ বার তাই একক ভাবে পুরবোর্ড গড়ার লক্ষ্যেই ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের এই অতি সক্রিয়তাতেই অশান্তির মেঘ দেখতে পাচ্ছে বিরোধী বাম শিবির। ইতিমধ্যেই মালবাজার পুরসভার ১৫টির মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডেই অশান্তি হতে পারে বলে আগাম লিখিত ভাবে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছে বামফ্রন্ট।

মালবাজারে ঢোকার মুখে তল্লাশি। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

মালবাজারে ঢোকার মুখে তল্লাশি। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালবাজার শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৫
Share: Save:

একক ভাবে তৃণমূল কখনও মালবাজার পুরবোর্ডের দখল নিতে পারেনি। বরাবরই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে পুরবোর্ড চালাতে হয়েছে তাদের। এ বার তাই একক ভাবে পুরবোর্ড গড়ার লক্ষ্যেই ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। শাসক দলের এই অতি সক্রিয়তাতেই অশান্তির মেঘ দেখতে পাচ্ছে বিরোধী বাম শিবির। ইতিমধ্যেই মালবাজার পুরসভার ১৫টির মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডেই অশান্তি হতে পারে বলে আগাম লিখিত ভাবে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ দাবি করেছে বামফ্রন্ট।

বামেদের আশঙ্কা, শুক্রবার রাত থেকেই মালবাজার লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকা থেকে তৃণমূল বহিরাগতদের পুর এলাকায় ঢুকিয়ে দেবে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে বুথ জ্যাম, ওয়ার্ডে ঢুকে হুমকির মতো ঘটনাও ঘটাতে পারে বলে অভিযোগ তুলেছে বামেরা। ইতিমধ্যেই শাসক দলের তরফে প্রলোভন দিয়ে ভোট কেনার চেষ্টা, প্রচ্ছন্ন চোখ রাঙানি বিভিন্ন এলাকায় শুরুও হয়েছে বলে বাম শিবিরের দাবি। ভোটের ক্যাম্প অফিস তৈরির জায়গাতেও কার্যত জমি দখলের কায়দা নিয়েছে বলেই শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা।

তবে ২০০৯তে ১৫টি ওয়ার্ডের আটটিতে জিতে ক্ষমতায় আসা বামেরা সাড়ে চার বছর পুরবোর্ড চালিয়ে ১৫নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে যখন তৃণমূল ও কংগ্রেস জোট বামেদের হারিয়ে পুরসভা দখল করে। তৃণমূল বোর্ড পাওয়ার পরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে প্রচার করেছে শাসক দল। বিরোধীদের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যদি তাই হয়ে থাকে এখন তাহলে একক বোর্ড দখল করতে এতো ঘাম ঝরাতে হচ্ছে কেন?’’ মালবাজারের ভোটারদের মধ্যে বরাবর প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ঝোঁক রয়েছে বলে বিরোধী শিবিরের মত। ১৯৯৯, ২০০৪ সালে যখন বামফ্রন্ট সর্বত্র জিতেছে, তখনও মালবাজারে কংগ্রেস, তৃণমূল জোটকে জিতিয়ে এনেছেন ভোটাররা। ২০০৯তেও ১৫টির মধ্যে ৭টি ওয়ার্ড কংগ্রেস এবং তৃণমূল পেয়ে যায়। এই প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার ‘ঐতিহ্য’ই এ বারে বাড়তি শক্তি জোগাচ্ছে বিরোধীদের।

মালবাজার সিপিএম নেতা চানু দের কথায়, ‘‘রাজ্য যা চলছে তা মানুষ দেখছেন। তাই মানুষ যদি ভোট দিতে পারেন, তা হলে ফল আমাদের অনুকূলে যাবে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সেটা আঁচ করেই অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে শাসকদল। আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের আশঙ্কার কথা প্রশাসনিক স্তরে জানিয়েও দিয়েছি।’’ বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা মজদুর মোর্চার সভাপতি তথা মালবাজার পুরভোটের প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দেবব্রত মিত্র জানালেন, ‘‘মালবাজারের মানুষের প্রতিষ্ঠান বিরোধী মনোভাব যে তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে সে বিষয়ে কার্যত কোনও সন্দেহ নেই। তাই শেষ মুহূর্তে ওরা উঠে পড়ে লেগে পরিস্থিতিকে নিজেদের দিকে ঘোরানোর যাবতীয় ব্যর্থ চেষ্টা করে চলেছে।’’

তবে বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের মালবাজার টাউন সভাপতি মানসকান্তি সরকারের কথায়া, ‘‘আমরা ৯০ শতাংশের বেশি ভোটদান হবে বলে মনে করছি। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ভোট তৃণমূলের অনুকূলেই রয়েছে। এর আগে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার যে ঝোঁক ছিল সেটা আসলে বামফ্রন্ট বিরোধিতারই নামান্তর। সেটার সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতিকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। অশান্তির যে আশঙ্কা বাম শিবিরের থেকে তোলা হয়েছে, সেটা ওদের পরাজয়কে ঢাকারই কৌশলমাত্র।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE