Advertisement
০৪ মে ২০২৪

আর কতদিন, ওষ্ঠাগত প্রাণ

একই পরিস্থিতি বালুরঘাট জেলা আদালতেও।

সুনসান: আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে সে রকম কাজ নেই। সদাচঞ্চল কোর্ট চত্বর তাই চুপচাপ। গ্রীষ্মের দুপুরে বটের ছায়ায় বিশ্রামই বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত

সুনসান: আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে সে রকম কাজ নেই। সদাচঞ্চল কোর্ট চত্বর তাই চুপচাপ। গ্রীষ্মের দুপুরে বটের ছায়ায় বিশ্রামই বালুরঘাটে। ছবি: অমিত মোহান্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
বুনিয়াদপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৯ ০৫:৪২
Share: Save:

কার্যত সুনসান আদালত চত্বর। শুক্রবার দুপুরে আদালতের ইতিউতি জটলা কিছু সাধারণ মানুষের। কেউ এসেছেন পরিবারের সদস্যের জামিনের জন্য, কেউ আবার এসেছেন পুরনো মামলার বিচারের আশায়। কিন্তু আইনজীবীদের কর্মবিরতি চলায় সেই আশা কবে মিটবে, তার কোনও দিশা পাচ্ছেন না তাঁরা।

বাতাসকুড়ির বাসিন্দা কিরণ সরকার এ দিন এসেছিলেন একমাত্র ছেলের জামিনের আশায়। গত ১৫ দিন থেকে তিনি বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর দুই আদালতেই ঘুরছেন জামিনের আশায়। পুরনো এক মামলায় তাঁর ছেলে প্রকাশকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু এ দিনও গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে সকাল থেকে ঠায় বসে থেকেও জামিন না হওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। কিরণ বলেন, ‘‘আমার বয়স হয়েছে প্রতিদিন কোর্টে আসতে পারি না। বিনা দোষে পুরনো একটি গন্ডগোলে জড়িয়ে দিয়ে ছেলেকে পুলিশ ধরেছে। তার জামিনের জন্য প্রতিদিন কোর্টে আসতে হচ্ছে। কিন্তু এখানে এসে প্রতিদিনই শুনি যে কোর্ট বন্ধ। এই ভাবে কোর্ট বন্ধ থাকলে আমরা কোথায় যাবো বিচারের জন্য? ছেলেই উপার্জন করত। সে জেলে যাওয়ায় আমাদের কে খাওয়াবে?’’

একই পরিস্থিতি বালুরঘাট জেলা আদালতেও। কিছুদিন আগে মারামারির ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল কুমারগঞ্জের বাসিন্দা সনাতন সরকারকে। তাঁর জামিনের জন্য বালুরঘাট জেলা আদালতে গত এক সপ্তাহ থেকে ঘুরছেন সনাতনের দাদা মঙ্গল সরকার। মঙ্গল বলেন, ‘‘কুমারগঞ্জ থেকে প্রতিদিন বালুরঘাটে আসতে হচ্ছে ভাইয়ের জামিনের জন্য। কিন্তু কোর্ট বন্ধ থাকায় জামিন নিতে পারছি না। খুবই সমস্যায় পড়েছি। প্রতিদিন হয়রানি হচ্ছে, আসা-যাওয়ায় টাকা খরচ হচ্ছে।’’ আদালত সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা আদালত ও গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার মানুষ বিভিন্ন বিচারের জন্য আসেন। কিন্তু হাওড়ায় আইনজীবীদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জ ও হামলার ঘটনার প্রতিবাদে গত ২৫ এপ্রিল থেকে গোটা রাজ্যে কর্মবিরতি করছেন আইনজীবীরা। তারপর থেকেই এই সমস্যা হচ্ছে। সূত্রের খবর, শুক্রবার আইনজীবীদের উপরে হামলার মামলার শেষ শুনানি ছিল। ২১ মে-র মধ্যে যদি মামলার রায়দান হয়ে যায় তাহলে আইনজীবীরা কর্মবিরতি তুলে নিয়ে আদালতের কাজ স্বাভাবিক করবেন। এখন সেই দিকেই তাকিয়ে আছেন মানুষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court Lawyers' Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE