বোমাবাজির পরে সুনসান জালালপুর।
কংগ্রেস ও তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মালদহের চাঁচল থানার জালালপুর এলাকা। তৃণমূল কর্মীদের পঁচিশটি বাড়িতে লুঠপাট চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতের এক কংগ্রেস সদস্যের বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সংঘর্ষ চলাকালীন এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি হয়। বোমায় কেউ হতাহত না হলেও সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে দুজনকে মালতিপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
সোমবার রাত থেকে দু’দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। শুরু হয় ব্যপক বোমাবাজিও। বোমার শব্দে লাগোয়া এলাকাগুলিতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পৌঁছায়। কিছুক্ষণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে থাকার পর ফের পুলিশি টহলদারির মধ্যেই চলতে থাকে বোমাবাজি। অভিযোগ, ভোর চারটে নাগাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য তফিজুদ্দিন হকের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাকে মারধরের পাশাপাশি তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় তৃণমূল। এরপর তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের পঁচিশটি বাড়িতে লুঠপাট সহ ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ।
সকালেও বোমাবাজি চলতে থাকায় এলাকায় ছিল বনধের চেহারা। কোনও দোকানপাট খোলেনি। পাশাপাশি পুলিশি ধড়পাকড়ের ভয়ে ঘর ছেড়েছেন পুরুষরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ, কমব্যাট ফোর্স টহল দিচ্ছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠীর গ্রাম্য বিবাদকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে। এরমধ্যে রাজনীতি নেই। এলাকায় পুলিশ টহল দিচ্ছে। গন্ডগোলের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’
কংগ্রেসের অভিযোগ, সম্প্রতি এলাকার এক দুষ্কৃতী পাইপগান থেকে গুলি ছোঁড়ার সময় তা ফেটে গিয়ে তার দুহাত পুড়ে যায়। বাইরে থেকে চিকিত্সা করিয়ে সে দিনকয়েক আগে বাড়ি ফেরে। মাসরেফুল আলম নামে ওই দুষ্কৃতীকে এলাকায় দেখে পুলিশ ডেকে তাকে কংগ্রেস কর্মীরা ধরিয়ে দেন। ওই দুষ্কৃতী আগে সিপিএম করলেও এখন তৃণমূলের আশ্রয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার জেরেই সোমবার রাতে কংগ্রেসীদের উপর তৃণমূলীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
চাঁচল-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মানজারুল ইসলাম বলেন, ‘‘পরিকল্পনা করেই কংগ্রেস কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। ওরা হামলা চালানোয় আমাদের কর্মীরা প্রাণ বাঁচাতেই বাধা দিয়েছে। অথচ পুলিশ বেছে বেছে কংগ্রেসীদেরকেই ধরছে।’’এই ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘‘কংগ্রেস মিথ্যা কথা বলছে। জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ওদের দখলে। কারণ ছাড়াই এলাকা দখলে রাখতে প্রধানের নেতৃত্বে ওরা বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর ও লুঠপাট করছে। আমাদের ৮ কর্মী আহত হয়েছেন। কংগ্রেসের ভয়ে দলের কর্মীরা এলাকায় ঢুকতে পারছে না। প্রধান সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি।
কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আহাদ আলি অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রশাসনের সঙ্গে থেকে সাহায্য করেছি। পুলিশ সেটা দেখেছে। আমরাও পুলিশে অভিযোগ জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy