মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর আসনে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রচারে নেমে পড়লেন মোস্তাক আলম। হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ও জেলা পরিষেদের প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আলম হরিশ্চন্দ্রপুরেরই বাসিন্দা। রবিবার সকাল থেকেই প্রার্থী হিসেবে ময়দানে নেমে কয়েকটি এলাকায় ছোট ছোট সভাও করলেন। পাশাপাশি এ দিন থেকে প্রার্থীর সমর্থনে শুরু হয়েছে দেওয়াল লিখনও।
বাম-কংগ্রেস জোট প্রক্রিয়া শুরু হতেই হরিশ্চন্দ্রপুর ও মালতিপুর আসন দু’টি নিয়ে দুই শিবিরে টানাপড়েন শুরু হয়েছিল। দু’টি আসনে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে অনড় ছিল দুই শিবিরই। কিন্তু শুধু হরিশ্চন্দ্রপুর বা মালতিপুর নয়। আরও একাধিক আসনে ওই টানাপড়েন আঁচ করে গত বৃহস্পতিবারই পাশের জেলা গঙ্গারামপুরে এসে জোটের অন্যতম উদ্যোক্তা সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছিলেন যে, ‘‘আসন নিয়ে বোঝাপড়া না হলে তোমার-আমার লড়াইয়ে তৃণমূল জিতে যাবে!’’ ফলে তেমন হলে এক পক্ষকে ‘বসে যেতে হবে’ বলেও বাম-কংগ্রেসকে বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আসন নিয়ে সেই টানাপড়েনের আবহেই চার দিন আগে হরিশ্চন্দ্রপুর আসনে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছিল বামফ্রন্ট। তারপর এ দিন থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর আসনে মোস্তাক সাহেবও প্রার্থী হিসেবে প্রচারে নেমে পড়ায় ওই আসনে জোটের জট যে আর কাটছে না, তা কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেত পেয়েই ওই আসনে প্রচারে নামা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে। জোট ভেস্তে যাওয়ায় বাম নেতারা আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করলেও পাশাপাশি অবশ্য উচ্ছ্বসিত তৃণমূল শিবির। ফরওয়ার্ড ব্লক শিবির অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বাম নেতৃত্বের কাছে এর মধ্যেই নালিশ ঠুকেছেন।
কংগ্রেস প্রচারে নামায় ক্ষুব্ধ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র এদিন বলেন, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব বলেছেন যে, হরিশ্চন্দ্রপুর আসন নিয়ে জোটে কোনও জট নেই। তারপরেও মোস্তাক সাহেব কেন প্রচারে নামলেন, সেটা তিনিই ভাল বলতে পারবেন। আমরা দলের রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’
জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নুর বলেন, ‘‘হরিশ্চন্দ্রপুর আসন যে কোনওভাবেই ছাড়তে পারব না তা হাইকম্যান্ডকে আমরা আগেই জানিয়ে দিয়েছি। তার যথার্থ কারণও রয়েছে। ওখানে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে।’’
গত বিধানসভায় ফরওয়ার্ড ব্লকের জয়ী আসনটি কেন হাতছাড়া করতে রাজি হল না কংগ্রেস? কংগ্রেস শিবিরের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভায় কংগ্রেস প্রার্থীর ৬১৪৫৮ ও বাম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫০৬৫১টি। আবার হরিশ্চন্দ্রপুরে ফরওয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক তজমুল হোসেন দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর দলে ভাঙনও ধরেছে। আর কিছুটা হলেও শক্তিশালী হয়েছে তৃণমল শিবির। ফরওয়ার্ড ব্লকের তেমন নিজস্ব সংগঠনও নেই। ভরসা সিপিএম। জোটের উদ্দেশ্য হল তৃণমূলকে আটকানো। কিন্তু ১০ বছরের বিধায়ক তজমুল সাহেবকে একমাত্র কংগ্রেসই রুখতে পারে। ফলে জোটের উদ্দেশ্য সফল করতে তাদের ওই আসনের দাবি অযৌক্তিক নয় বলে দাবি কংগ্রেসের। আর তাই এদিন থেকে পুরোদস্তুর প্রচারে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। তবে জোট না হওয়ায় তৃণমূল শিবির উচ্ছ্বসিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy