Advertisement
০৮ মে ২০২৪

সস্তায় পুষ্টি কীসে, লড়াই কড়াইয়ে

কম খরচে স্কুল পড়ুয়াদের পাতে বাহারি মিড-ডে মিল তুলে দিতে মঙ্গলবার এমনই রন্ধন প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল মালদহ কলেজ মাঠে ‘আহারে বাহার’ মেলায়।

ব্যস্ত: মালদহ কলেজ মাঠে চলছে ‘আহারে বাহার’। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: মালদহ কলেজ মাঠে চলছে ‘আহারে বাহার’। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:২২
Share: Save:

বেলা এগারোটা বাজতে না বাজতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মধ্যে সাজ সাজ রব। আনাজপাতি কেটে, মশলা সাজিয়ে রান্নার গ্যাস ওভেনের সামনে কোমর বেঁধে তৈরি তাঁরা। বেলা ১২টা বাজতে না বাজতেই বাজল ঘণ্টা, শুরু হল রান্নার পালা।

পনেরোটি ব্লক ও দু’টি পুরসভার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কেউ রাঁধলেন পালং পনির, কেউ বা সয়াবিন পোলাও। আবার কেউ আলু-মটরের দম থেকে শুরু করে মাশরুম, নবরত্ন, ভেজিটেবল ডাল ফ্রেজিও তৈরি করলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সকলকে টেক্কা দিয়ে বাজিমাত করল বাংলার চিরাচরিত পাঁচ মিশেলি তরকারিই।

কম খরচে স্কুল পড়ুয়াদের পাতে বাহারি মিড-ডে মিল তুলে দিতে মঙ্গলবার এমনই রন্ধন প্রতিযোগিতার আয়োজন ছিল মালদহ কলেজ মাঠে ‘আহারে বাহার’ মেলায়।

প্রশাসন সূত্রেই খবর, মিড-ডে মিল খাওয়াতে প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য মাথা পিছু বরাদ্দ মাত্র ৪ টাকা ১৩ পয়সা ও উচ্চ-প্রাথমিক পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ ৬ টাকা ১৮ পয়সা। সরকারের তরফে চাল দেওয়া হলেও জ্বালানী ও ডাল-তেল-নুন-আনাজ দিয়ে এই অগ্নিমূল্যের বাজারে এই বরাদ্দ খুবই কম বলে অভিযোগ। কিন্তু মিড-ডে মিল তো বন্ধ করা যাবে না। তাই, কম খরচেও কী ভাবে মিল চালানো যায় তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ‘আহারে বাহার’।

সোমবারই দুর্গাপুরের এনএসএইচএমের সুব্রত পাল, রমেন চৌধুরীরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের শিখিয়েছেন, কম খরচে পুষ্টিকর ও বাহারি খাবার কী ভাবে তৈরি করা যায়। গতানুগতিকের বাইরে তাঁরা জিরা রাইস, টম্যাটো ডাল ও ভেজিটেবল ঝাল ফ্রেজি রান্না করা শেখান। কথা ছিল, উত্সাহ বাড়াতে এ দিন নতুন শেখা পদগুলি নিয়েই রন্ধন প্রতিযোগিতা হবে। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা তাঁদের সেরা রান্নার পদগুলি এ দিন প্রতিযোগিতায় তুলে ধরেন।

বামনগোলার উষা মণ্ডল, বিশাখা রায়, দুলালী মৃধারা ফুলকপি, গাজর, সিম, বেগুন, মটরশুঁটি, টম্যাটো দিয়ে তৈরি করেন পাঁচ মিশেলি তরকারি। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের কিরণ চৌধুরী, সুলেখা ঘোষরা তৈরি করেন পালং পনির, কালিয়াচক ৩ ব্লকের চন্দনা লালা, প্রতিভা সিংহরা রেঁধেছিলেন সয়াবিন, গাজর, বিনস, মটরশুঁটি ও চাল দিয়ে সয়াবিন পোলাও। রান্না শেষে সে সব চেখে দেখলেন দুর্গাপুরের শিক্ষকেরা।

পাঁচ মিশেলি তরকারি করে প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান পেলেন বামনগোলা ও চাঁচল ২ ব্লকের মহিলারা এবং আলু-মটর দম করে তৃতীয় স্থান পেলেন ইংরেজবাজার পুরসভার মহিলারা। মিড-ডে মিলের মালদহের জেলা আধিকারিক পূর্বিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধ্যের মধ্যে থাকা টাটকা আনাজ বা ডিম, সয়াবিন দিয়েই বেশির ভাগ দিন মিল করতে হয়। কিন্তু সেই রান্নায় যাতে একঘেয়েমি চলে না আসে সে কারণেই ওই আনাজ দিয়েই বাহারি খাবার রান্নার এই মেলার হয়।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক পদম সুনম বলেন, ‘‘এই প্রতিযোগিতায় মহিলারা আরও সমৃদ্ধ হলেন। পড়ুয়াদের ভাল মানের মিড-ডে মিল খাওয়ানোয় আশা করি তা সহায়ক হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooking competition Malda Midday meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE