তিন পুলিশকর্মী খুনে অভিযুক্ত গ্রেটার কোচবিহার নেতা বংশীবদন বর্মন সহ ৪৩ জন বেকসুর খালাস হওয়ার পরে শাসক দলের বিরুদ্ধে এই ঘটনার তদন্তকে প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম। রবিবার সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বিচারকের নির্দেশের প্রতি পূর্ণ আস্থা জানিয়ে বলেন, “এক সময় তৃণমূল নেতা মুকুল রায় জেলে গিয়ে বংশীবদন বর্মনের সঙ্গে দেখা করেন। এর পর ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকার অভিযুক্তদের জামিন দেয়। তিন জন পুলিশকর্মী খুন হয়ে গেলেন, অথচ দোষীদের চিহ্নিত করা গেল না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কেউ না কেউ তাঁদের খুন করেছে। সেক্ষেত্রে শাসক দল এই তদন্ত প্রভাবিত করেছে বলে সন্দেহ করছি।’’
পৃথক কামতাপুর আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন নেতাকে এর আগেই রাজ্য সরকার মুক্তি দিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিশাখাপত্তনম থেকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও বলেছেন, ‘‘ক্ষমতায় আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নানা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। এখন সেই সংগঠনগুলিকে প্রতিদান দেওয়া হচ্ছে।’’ মুকুলবাবু অবশ্য তারিণীবাবুর দাবি সম্পর্কে বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’
তৃণমূলের দাবি, সিপিএম মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ওই ঘটনায় সেই সময়ের বাম সরকার আসল খুনিকে না ধরে কিছু নিরপরাধ মানুষকে জেলে বন্দি করে রাখে। দীর্ঘ দিন তাঁরা কষ্টের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন। তাঁদের মুক্তিতে আমরা খুশি হয়েছি। তারিণীবাবু এখন তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।”
বংশীবদনবাবুর অভিযোগ, সেই সময়ের বাম সরকার ষড়যন্ত্র করে তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখে দেয়। তিনি বলেন, “সিপিএমের লোকেরা শান্তিপূর্ণ সভায় ঢুকে গণ্ডগোল তৈরি করে। এর পরে নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। বাম সরকার ষড়যন্ত্র করে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। তদন্তে নিরপরাধ মানুষ ছাড়া পেয়ে সত্যের জয় হয়েছে।” বংশীবদনবাবু ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।
পুরভোটের মুখে এই তরজায় উত্তপ্ত কোচবিহারও। সে দিনের ঘটনা নিয়ে আদালতে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছিল, তাতে বেশ কিছু অস্পষ্টতা ছিল বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশ মহলেও। পুলিশের এক কর্তার কথায়, গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলার ব্যাপারে যথেষ্ট যত্নবান না হওয়াতেই ওই খামতি তৈরি হয়। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “আদালতের রায়ের প্রতিলিপি এখনও পাইনি। সেটা পেলে আমাদের আইন শাখার সঙ্গে আলোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট পাঠান হবে।” তবে গ্রেটার সংগঠনের আইনজীবী শিবেন রায়ের দাবি, মিথ্যা মামলা সাজান হয় বলেই নানা অসঙ্গতি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, সত্যকে কোনও ভাবে আড়াল করা যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy