Advertisement
E-Paper

মানছে না নিচুতলা

রায়গঞ্জ পুরভোটে কংগ্রেস ও সিপিএমের ভরাডুবির কারণ নিয়ে দু’দলের জেলা ও শহরের নেতাদের সঙ্গে নিচুতলার কর্মীদের মতবিরোধ শুরু হয়ে গিয়েছে। শহরের বাজার, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে জনবহুল যে কোনও জায়গায় কান পাতলে এই বিরোধের কথা শোনা যাচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:১৩

রায়গঞ্জ পুরভোটে কংগ্রেস ও সিপিএমের ভরাডুবির কারণ নিয়ে দু’দলের জেলা ও শহরের নেতাদের সঙ্গে নিচুতলার কর্মীদের মতবিরোধ শুরু হয়ে গিয়েছে। শহরের বাজার, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে জনবহুল যে কোনও জায়গায় কান পাতলে এই বিরোধের কথা শোনা যাচ্ছে। সেই তর্ক রাস্তার আড্ডা ছাপিয়ে কোথাও কোথাও দলীয় অফিসেও ঢুকে পড়ছে।

তাঁদের অনেকের যুক্তি, ভোটের দিন যাতে দলের সমর্থক-ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করতে দলের নেতারা কোনও আগাম পরিকল্পনা করেননি বলেই এমন হয়েছে। সে জন্য বেশ কয়েকটি বুথে কংগ্রেস-সিপিএমের কট্টর সমর্থকদেরও প্রতিবাদের সাহস পাননি। সে নিউ মার্কেটের আড্ডাই হোক বা বিদ্রোহীমোড়, কিংবা মিলনপাড়া রমেন্দ্রপল্লির সিপিএম পার্টি অফিসই হোক বা মোহনবাটির কংগ্রেস দফতরের সামনে চায়ের দোকানে আড্ডা, সর্বত্র সাধারণ কর্মী-সমর্থকদের মুখে একই কথা। দু’দলের কয়েক জন নেতা আবার ‘পুলিশের মদতে সন্ত্রাসের জন্যই কিছু করা যায়নি’ বলে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট-ও দেন। তাই দেখে নিচুতলার কয়েক জনের কটাক্ষ, ‘‘ভোটের ময়দান থেকে পালিয়ে ফেসবুকে বিপ্লব করে লাভ কী!’’

তৃণমূলকে রুখতে এ বছর কংগ্রেস ও সিপিএম জোট বেঁধে নির্বাচনে লড়েছিল। পুরসভার ২৭টির মধ্যে ১৮টি ওয়ার্ডে কংগ্রেস ও ৯টি ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী দেয়। কংগ্রেস দু’টির বেশি ওয়ার্ডে জিততে পারেনি। সিপিএমের প্রতি সমর্থন তলানিতে এসে ঠেকেছে। বরং সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠা একটি ওয়ার্ড জিতে নেয় বিজেপি।

ভোটে ভরাডুবির কারণ হিসেবে কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সিপিএমের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল ‘প্রশাসনের মদতে তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের দাপট, বোমা-গুলির’ কথা বলে সরব হয়েছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘গুলি ও বোমার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি।’’ কিন্তু নিচুতলার কর্মীরা তো বলছেন, আপনারা পালিয়ে গিয়ে তৃণমূলকে সুযোগ করে দিয়েছেন। তা হলে? এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিতে চাননি তাঁরা।

নিচুতলার কর্মীরা এই দাবি মানতে নারাজ! তাঁদের পাল্টা দাবি, কংগ্রেস-সিপিএম প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই দুই দলের জেলা ও শহুরে নেতারা একযোগে ভোট প্রচার ও সন্ত্রাস হলে রাস্তায় নেমে দুষ্কৃতীদের আটকাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রচারের গোড়ায় কিন্তু বেশির ভাগ ওয়ার্ডে জোটপ্রার্থীদের সমর্থনে কংগ্রেস-সিপিএম যৌথ প্রচার দেখা যায়নি। নির্বাচনের দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠলেও দু’দলের নেতা-কর্মীরা একযোগে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন। বদলে ওই দিন তাঁরা দুপুর একটা নাগাদ একযোগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন।

দুই দলের নিচুতলার কর্মীরা, যাঁরা বিভিন্ন বুথে শাসকদলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ভোট পরিচালনার কাজ করছিলেন, তাঁরা তখন হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন। অনেক বুথই বিরোধী শূন্য হয়ে পড়ে বলে দু’দলের নিচুতলার সমর্থকদের দাবি। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের বক্তব্য, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থে শহরের বাসিন্দারা মুখ্যমন্ত্রীকে পুরসভা উপহার দিয়েছেন। বিরোধীরা রামধনু জোট করেও আগাম পরাজয় বুঝতে পেরে নির্বাচনের মাঝপথেই সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ তুলে ঠান্ডাঘরে আশ্রয় নেয়।’’

Congress CPIM Raiganj Municipality Election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy