যে বুথে গত পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের অভিযোগে পুনর্নির্বাচন হয়েছিল, সে এলাকা থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু করাল জেলা পুলিশ।
জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুরের বজ্রাপাড়ায় গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বাসিন্দাদের আশ্বাসের সুরে জানালেন, তাঁরা চলে এসেছেন। বাসিন্দাদের আর কোনও ভয় নেই। নির্ভয়ে ভোট দিতে যেতে পারেন তাঁরা। বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে টহলে ছিলেন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার। তিনি বাসিন্দাদের বললেন, ‘‘দেখুন, কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। কোনও গোলমাল হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় ফোন করবেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে আসবে। আমরাও আসব।”
গত শুক্রবার জলপাইগুড়িতে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে। আইটিবিপি-র এক কোম্পানি জলপাইগুড়িতে পৌঁছয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কম্যান্ডান্টকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান কোতোয়ালি থানার আইসি। এ দিন টহলদারির সময়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য জলের বোতলের ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। এক পুলিশকর্মীকে দেখা যায় জওয়ানদের হাতে হাতে জলের বোতল তুলে দিতে। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গত পঞ্চায়েত ভোটে বুথ দখল, হুমকি, মারধরের একাধিক অভিযোগ উঠছিল। একাধিক বুথে সাধারণ ভোটাদাতারা ভোট দিতে পারেনি বলে অভিযোগ। সেই পাহাড়পুরের পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
কথা বলে ফিরে যাওয়ার পরে পাহাড়পুরের হাকিমপাড়ার বাসিন্দা বাবলি খাতুন বললেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন ছিল। গত বছর আমরা কেউ ভোট দিতে পারিনি।” আর এক বাসিন্দা শিবানী রায় হাজরা বলেন, “বাড়ির পাশেই বুথ, কিন্তু গত পঞ্চায়েত ভোটে ভোট দিতে পারিনি। কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখে মনে হচ্ছে, ভোট দিতে পারব। যারা গোলমাল করে, তারা সিভিক ভলান্টিয়ারদের আর পুলিশকে ভয় পায় না।” লাগোয়া পাতকাটা এবং পাহাড়পুরে মনোনয়ন নিয়ে এ বারও একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা।
জেলায় আপাতত দশ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে চলেছে বলে খবর। আইটিবিপি ছাড়াও, বিএসএফ, এসএসবি এবং সিআইএসএফের কোম্পানি আসার কথা রয়েছে। রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, মালবাজার এবং নাগরাকাটাতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি চলবে। জেলায় কত বুথ ‘স্পর্শকাতর’, তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)