ক্ষতিপূরণের দাবিতে বাগডোগরায় ব্যাঙ্কের সামনে গ্রাহকদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্কের লকার থেকে ডাকাতি হওয়া সম্পদের ক্ষতিপূরণের দাবিতে তিন ঘণ্টা ব্যাঙ্কের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রাহকরা।
বুধবার সাড়ে ১০ টার সময় বাগডোগরায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ওই ব্যাঙ্কের তরফে কথা বলার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ডাকা হয়েছিল বলে দাবি। কিন্তু গ্রাহকরা গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ। কোলাপসিবল গেট বন্ধ করে রাখায় তাঁরা দীর্ঘক্ষণ নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এর পরেই বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজারকে ফোন করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে গ্রাহকদের অভিযোগ। ব্যাঙ্কের জেনারেল ম্যানেজারও এ দিন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েও ব্যর্থ হন গ্রাহকরা। ওই ব্যাঙ্ক আধিকারিক কথা না বলেই চলে যান বলে অভিযোগ। গ্রাহকদের দাবি, ওই আধিকারিক তাঁদের কথা দিয়ে যান তিনি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে শীঘ্রই এসে কথা বলবেন। কিন্তু তিনি আর আসেননি। শেষে রিজিওনাল ম্যানেজার উমেশ চন্দ্র গুছাইত নিচে গিয়ে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা একে একে এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলুক। তিনি তাদের বিষয়গুলি শুনবেন। তবে গ্রাহকরা এক সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। উমেশবাবু তাতে রাজি হয়নি। পরে গ্রাহকরা একে একে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।
গত ৪ মে রাতে বাগডোগরার ওই ব্যাঙ্ক থেকে ১৬ টি ‘লকার’ কেটে দুষ্কৃতীরা সেখানে রাখা গ্রাহকদের সোনার গয়না-সহ মূল্যবান সামগ্রী চুরি করে। মুখ্যমন্ত্রী সে সময় শিলিগুড়িতে ছিলেন। তার পরেও পুলিশি নিরাপত্তা যে যথাযথ ছিল না এই ঘটনাতেই তা স্পষ্ট বলে দাবি গ্রাহকদের। এ দিন গ্রাহকদের অনেকে অভিযোগ করেন, তাঁরা লকার দেখতে গেলে সাফাই কর্মী লকারের চাবি নিয়ে আসতেন। অনেক সময় এক মহিলা করণিকও আনতেন। নিয়ম মতো লকারের দু’টি চাবির মধ্যে ব্যাঙ্কের তরফে একটি খুলে দেওয়া হতো, অপরটি গ্রাহকেরা খুলতেন। ব্যাঙ্কের তরফে কোনও আধিকারিক না গিয়ে ওই সাফাই কর্মী লকারের চাবি খুলতেন বলে অভিযোগ। এ দিন রিজিওন্যাল ম্যানেজারকেও তারা ওই অভিযোগ জানান। রিজিওনাল ম্যানেজার উমেশ কুমার গুছাইত এ দিন বলেন, ‘‘এ ধরনের অভিযোগ ঠিক নয়। লকারের চাবি ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের কাছেই থাকে। তিনিই নিয়ে যেতেন।’’ গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ক্ষোভে এ ধরনের অভিযোগ করছেন বলে তাঁর দাবি।
রিজিওনাল ম্যানেজার বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের লকারে কার কি সামগ্রী ছিল তা বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। ১৬ জনের মধ্যে এখনও ছ’জন তা জানাননি। সাত দিন সময় নিয়ে আমরা সে গুলি দেখছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তাঁরাই নেবেন।’’
ক্ষতিগ্রস্ত লকারের গ্রাহক কানায়াইয়ালাল জৈন, বীণারানি রায় চৌধুরী, অমল সিকদার, মনোজিৎ পালরা এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দ্রুত অভিযুক্তদের ধরা না হলে এবং লকারের খোওয়া যাওয়া সামগ্রী ফেরৎ না পেলে বড় ধরনের আন্দোলন হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের আত্মীয় অশোক গোপ বলেন, ‘‘এর পরেও কিনারা না হলে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy