অশনি সঙ্কেত: ফণীর প্রভাবে উত্তরবঙ্গেও বৃষ্টি হবে, পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। সেই আভাসই দেখা গেল বৃহস্পতিবার, যখন জলপাইগুড়িতে দিনেই নামল সন্ধ্যা। ছবি: সন্দীপ পাল
দশ বছর আগে আয়লা আসেনি। তবে তার প্রভাব পড়েছিল উত্তরবঙ্গেও। হয়েছিল প্রবল ঝড়বৃষ্টি। ফণীর বেলাতেও একই আশঙ্কা করছে আবহাওয়া দফতর। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস— ফণীর প্রভাব পড়তে পারে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দার্জিলিং, দুই দিনাজপুর জেলায়। তাই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এর ফলে যাতে অযথা আতঙ্ক তৈরি না হয়, সে দিকেও নজর রাখছে প্রশাসন। একই সঙ্গে ধান কাটার ফরমানও দিয়েছে প্রশাসন।
খেতের অনেকটা এলাকা জুড়ে ধানে সোনালি রং ধরেছে। কৃষকরাও অপেক্ষা করেছেন পুরো খেতের ধান পেকে যাক, তার পরে কাটা হবে। হঠাৎ করে ফণীর আগমনবার্তায় কৃষি দফতর এখন বলছে, সব ধান না পাকলেও আগামী শনিবারের মধ্যে সব ধান কেটে ফেলতে হবে। কৃষি আধিকারিকদের দাবি, এটি কোনও নির্দেশ নয়। কৃষকদের ক্ষতি কমাতে সচেতন করা হয়েছে মাত্র। তাঁদের যুক্তি, ফণীর ধাক্কা এ দিকে পড়লে বোরো চাষ ব্যাপকক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জলপাইগুড়ি জেলায় কুড়ি হাজার সাতশো হেক্টর জমিতে এ বছর বোরো চাষ হয়েছে। রাজগঞ্জ, সদর, মালবাজার ও ময়নাগুড়ি ব্লকের তিস্তা উপকূলে বোরো চাষ হয়েছে প্রায় পনেরো হাজার হেক্টর জমিতে। এই ধানের ৭৫ শতাংশ পেকে গেলে তা কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধান কাটার ক্ষেত্রে যন্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করবে কৃষি দফতর। জেলায় ১৯টি কৃষি দফতরের কাস্টমার হায়ারিং কেন্দ্র রয়েছে। সেই সেন্টারগুলি থেকে কৃষকেরা ধান কাটার মেশিন সরকারি মূল্যে ভাড়া নিয়ে কাজ করতে পারবেন বলে জানালেন কৃষি দফতরের ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের ডেপুটি ডাইরেক্টর অশোককুমার মোহান্ত। তিনি বলেন, ‘‘ঝড়ে ক্ষতি হতে পারে। তাই এই সর্তকতা।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন রাজ্যের সচিবস্তরের কর্তারা ভিডিয়ো কনফারেন্সে জেলাগুলোর সঙ্গে কথা বলেন। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘আমাদের এ দিকে ফণীর প্রভাব সেভাবে পড়ার কথা নয়। তবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’
ফণীর ধাক্কায় বদলেছে রেলের সময়সূচিও। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা জানান, ডিব্রুগড়-তাম্বরম এক্সপ্রেস বৃহস্পতিবার ও আগামী ৫ মে তার নির্ধারিত রুটের বদলে বিজয়ওয়াড়া, নাগপুর, ইটারসি, জব্বলপুর, পাটলিপুত্র, শোনপুর হয়ে চলাচল করবে। এর আগে এই ট্রেনটিকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিকের দফতর থেকে জানানো হয়েছে, পূর্ব উপকূল রেলের ৪০টি ট্রেন বাতিল হয়েছে।
প্রভাব বেশি পড়ুক বা কম, উত্তরের বিপর্যয় মোকাবিলা দল কিন্তু তৈরি হয়েছে, জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রেই। জলপাইগুড়ি জেলার বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক দীপঙ্কর হালদার বলেন, “আগে থেকে বিপর্যয় মোকাবিলার সব প্রস্তুতি সেরে রাখতে বলা হয়েছে।” আলিপুরদুয়ার জেলায় বন্যার জন্য খোলা কন্ট্রোল রুমকে ফণীর মোকাবিলায় ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সব ব্লককেও আবহাওয়া নিয়ে খোঁজখবর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমগুলি আপাতত দিনের বেলায় চলছে। প্রয়োজন হলে সেগুলি রাতেও খোলার ব্যবস্থা হবে বলে জানানো হয়েছে। হলদিবাড়ির বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিত জানিয়েছেন, সব গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে একটি করে কুইক রেসপন্স টিমও তৈরি রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy