— প্রতীকী চিত্র।
আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঢাকে কাঠি পড়বে। অতীতে এই সময় শ্বাস ফেলার সময় পেতেন না দক্ষিণ দিনাজপুরের মালাকার পাড়ার শিল্পীরা। এখন সেই ব্যস্ততা আর চোখে পড়ে না। কাজের অভাবে ধুঁকছেন ডাকের সাজের শিল্পীরা। কেউ নিজের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে কাজের খোঁজে পাড়ি দিয়েছেন ভিন্ রাজ্যে। আবার কেউ অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন।
১০ বছর আগেও ছবিটা ছিল অন্য রকম। মালাকার পাড়ার বাড়িতে বাড়িতে প্রায় সারা বছর ব্যস্ততা থাকত তুঙ্গে। সে সময় প্রতিমার সাজ মানেই শোলার তৈরি ডাকের সাজ। কিন্তু এখন দিন পাল্টেছে। পাল্টেছে মানুষের অভিরুচি। তাই ডাকের সাজের বাজার দখল করেছে রঙচঙে রোল গোল্ড এবং প্লাস্টিকের তৈরি পোশাক। এখন বিয়ের মুকুট তৈরি করেই যেটুকু রোজগার। নতুন প্রজন্ম আর এ কাজে আসতে চায় না। ফলে আগামী দিনে হারিয়ে যেতে পারে ডাকের সাজ।
যে শিল্পীরা এখনও এই পেশায় রয়েছেন, তাঁদের চিন্তা বাড়িয়েছে শোলার অভাব। জলা জায়গাতে জন্মায় শোলা। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এখন জলাশয়, পুকুর পরিষ্কার করে মাছ চাষ করা হয়। কেটে ফেলা হয় শোলা গাছ। ফলে শোলার জোগান কমেছে। বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেই কাজ চালান শিল্পীরা। ফলে দাম বেড়েছে শোলার। বালুরঘাটের মৃৎশিল্পী দিলীপ মালাকার জানান, প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গার সজ্জা তৈরির কাজে যুক্ত তিনি। কম পয়সা পেলেও কাজের নেশায় প্রতি বছর একটা-দু’টো করে পোশাক তৈরি করেন তিনি। তাতে লাভ হয় না। বালুরঘাটের আর এক শিল্পী সত্যজিৎ বর্মন বলেন, ‘‘সারা বছর বিয়ের টোপর-মুকুট তৈরি করি। কিন্তু পুজো এলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। বছরে একবার দেবীর গায়ে পোশাক তৈরি করতে পারব না ভেবে দুঃখ হয়। তাই ছোট করে হলেও কিছু পোশাক বানাই। যদিও তার চাহিদা নেই আর বাজারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy