পাশে: মৃত দুই শিশুর বাড়িতে বুধবার যান সাংসদ। নিজস্ব চিত্র
দিনহাটার গোর্খা বিলে নৌকো উল্টে দুই শিশুর মৃত্যু নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ঘটনার জেরে বর্ষার মুখে নৌকো পারাপারে প্রশাসনের নজরদারি নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভরা বর্ষায় বিপদের আশঙ্কা এড়াতে ফেরিঘাটগুলি নিয়ে সতর্কতা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। পরিস্থিতির জেরে কাল, শুক্রবার মহকুমার সমস্ত ফেরিঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা, তাদের প্রতিনিধি, গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান ও বিডিওদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন দিনহাটার মহকুমা শাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ। মহকুমা শাসক বলেন, “ডিঙি নৌকোয় যাত্রী পারাপার নিয়ন্ত্রণ থেকে সতর্কতামূলক সমস্ত ব্যাপারেই বৈঠকে আলোচনা হবে।” বুধবার গীতালদহের ওই এলাকায় যান কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “চিহ্নিত ফেরিঘাটগুলির বাইরে জেলার কোথাও যাতে যাত্রী পারাপার না করা হয়, তা দেখা দরকার। কোথাও যাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য নজরদারি বাড়ানো হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দিনহাটার গীতালদহ এলাকার বিশাল ওই বিলে ডিঙি নৌকোয় চেপে ফিরছিলেন অন্তত ১০ জন যাত্রী। তাদের মধ্যে কয়েকজন শিশু ও মহিলাও ছিলেন। জগন্নাথ গ্রাম থেকে রাতে ঘুঘুমালির দিকে আসার সময় আচমকা নৌকোটি উল্টে যায়। সকলেই জলে পড়ে যান। বড়রা সাঁতরে ওঠেন। শিশু দু’টিকেও তারা উদ্ধার করে পাড়ে তোলেন। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে প্রিয়াঙ্কা দাস (৯) ও বিশ্বনাথ দাস (৬) নামের ওই দুই শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, যাত্রী পারাপারের জন্য চিহ্নিত তালিকায় ওই ফেরিঘাট নেই। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নদী বা বিল বিচ্ছিন্ন এলাকায় পরিস্থিতির জেরেই তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রশাসন দায় এড়াতে পারে না। নৌকায় বেশি যাত্রী তোলার জন্য ওই দুর্ঘটনা হয়েছে।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কোচবিহারের ১২টি ব্লকে গড়ে তিনটি করে বড় ফেরিঘাট রয়েছে। সব মিলিয়ে চিহ্নিত ফেরিঘাটের সংখ্যা ৫০টির বেশি। ওই তালিকায় সিতাইয়ে সিঙিমারি নদীর আদাবাড়ি ঘাট, সাগরদিঘি ঘাট, কোচবিহার সদরে তোর্সায় ফাঁসির ঘাট, তুফানগঞ্জে রায়ডাকের উল্লারখাওয়া ঘাট, মেখলিগঞ্জে তিস্তায় বেলতলির ঘাট উল্লেখযোগ্য। মাথাভাঙাতেও একাধিক ফেরিঘাট রয়েছে। অভিযোগ, অতিরিক্ত যাত্রী তোলা, লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার, নৌকার ত্রুটি নজরদারির ব্যবস্থা নেই। দিনহাটা নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “বিপদের আশঙ্কা এড়াতে সর্বত্র দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।” প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এ নিয়ে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy