Advertisement
০২ জুন ২০২৪
জর্জরিত

জ্বর রুখবে কে, উদ্বেগ

জেলায় এ বছর ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে ৭২ জন, ম্যালেরিয়ায় ৮৭ জন ও জেই-তে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন৷ স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, শুধুমাত্র জুন ও জুলাই মাসেই ডেঙ্গিতে ৬৮ জন ও ম্যালেরিয়ায় ৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন৷ ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া বা জেই-তে এ বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যু না হলেও অজানা জ্বরে ইতিমধ্যেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ১০:৪০
Share: Save:

প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে জ্বরের রোগী৷ জেলা জুড়েই বাড়ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ও জাপানি এনসেফ্যালাইটিস (জেই) আক্রান্তের সংখ্যাও৷ অথচ, মাঝেমধ্যে কিছু বাড়িতে গিয়ে জ্বর হয়েছে কি না খোঁজ নেওয়া ছাড়া শহরে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে পুরসভা সে অর্থে কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়িতে৷

জেলায় এ বছর ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে ৭২ জন, ম্যালেরিয়ায় ৮৭ জন ও জেই-তে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন৷ স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, শুধুমাত্র জুন ও জুলাই মাসেই ডেঙ্গিতে ৬৮ জন ও ম্যালেরিয়ায় ৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন৷ ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া বা জেই-তে এ বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যু না হলেও অজানা জ্বরে ইতিমধ্যেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ তাই উদ্বেগ বাড়ছে৷

এমনিতেই জলপাইগুড়ি মশাবাহিত রোগের জেলা হিসাবে পরিচিত৷ প্রতি বছরই এই জেলায় অনেকে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন৷ ব্যতিক্রম নয় জলপাইগুড়ি শহরও৷ পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, ২০১৩ সালে জলপাইগুড়িতে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৬ জন৷ ২০১৪ ও ২০১৫ সালে তিনজন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন৷ ২০১৬ সালে ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ফের বেড়ে হয় ৩৫৷

অথচ, এ বছর এখনও কতজন মানুষ ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন, কিংবা আদৌ আক্রান্ত হয়েছেন কি না সেই হিসেবই এখনও করে উঠতে পারেননি পুরকর্তারা৷ অভিযোগ, কবে স্বাস্থ্য দফতর সেই পরিসংখ্যান দেবেন সেই অপেক্ষাতেই রয়েছে পুরসভা৷

খামতির এখানেই শেষ নয়৷ অভিযোগ, জলপাইগুড়ি পুরসভার কোনও পতঙ্গবিদ নেই৷ তাছাড়া পুরসভার দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের একটিতে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও অপরটিতে এখনও সেই পরিকাঠামোই নেই৷ একটিতে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা হলেও অপরটিতে হয় না৷ কোনও রোগীর ডেঙ্গি হয়েছে বলে সন্দেহ হলে চিকিৎসকেরা তড়িঘড়ি তাঁকে জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেন৷

পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘বছরের পর বছর এ ভাবেই কাজ চলছে৷’’ তবে মশাবাহিত রোগের প্রবণতা বেশি থাকায় পুরসভায় যে একজন পতঙ্গবিদ থাকা জরুরি তাও মেনে নেন ওই চিকিৎসক৷ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগটি দেখেন চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল সৈকত চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর কথায়, ‘‘পতঙ্গবিদ নেই ঠিকই, কিন্তু মশার লার্ভা পরীক্ষা করার পরিকাঠামো আমাদের রয়েছে৷’’

পুরকর্তাদের আরও দাবি, ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে তারা যথেষ্ট তৎপর। এ জন্যই এ বছর বাড়িতে স্বাস্থ্যকর্মীদের যাওয়া গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে৷ কিন্তু অভিযোগ উঠছে, শহরের অনেক এলাকাতেই নর্দমায় জল জমে থাকছে৷ যা থেকে জন্মাচ্ছে মশা৷ মশা মারার স্প্রেও যে সব এলাকায় ঠিক-ঠাক হয় না, সেই অভিযোগও রয়েছে৷ তবে সৈকতবাবুর দাবি, ‘‘বর্ষাকাল বলেই কোনও কোনও নর্দমা মাঝে মধ্যে ভরে যাচ্ছে৷ দ্রুত সেই জল সরেও যাচ্ছে৷’’ স্প্রে নিয়ে অভিযোগও তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dengue Fever Municipality ডেঙ্গি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE