Advertisement
E-Paper

ভ্যাট উপচে পড়া জঞ্জাল, ক্ষোভ শহরে

সাত সকালে বর্ধমান রোডের একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের সামনে ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বাসে ওঠাতে গিয়ে রোজই নাকে রুমাল চেপে থাকতে হয় অভিভাবকদের। স্কুলের কচিকাঁচাদের তো গা গুলিয়ে ওঠে। বিশাল রাস্তার একপাশে নোংরা, আবর্জনার ভ্যাট উপচে পড়ছে জঞ্জাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৪
ভ্যাট উপচে জঞ্জাল ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়। শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডে। সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

ভ্যাট উপচে জঞ্জাল ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়। শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডে। সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

সাত সকালে বর্ধমান রোডের একটি মার্কেট কমপ্লেক্সের সামনে ছেলে-মেয়েদের স্কুলের বাসে ওঠাতে গিয়ে রোজই নাকে রুমাল চেপে থাকতে হয় অভিভাবকদের। স্কুলের কচিকাঁচাদের তো গা গুলিয়ে ওঠে। বিশাল রাস্তার একপাশে নোংরা, আবর্জনার ভ্যাট উপচে পড়ছে জঞ্জাল।

চারদিকে আবার ছড়িয়ে ছিটিয়েও রয়েছে। বৃষ্টি জল, কাদায় রোদ পড়তেই পুতিগন্ধময় পরিস্থিতি। কয়েকশো মিটার এগোলেই বড় নার্সিংহোম। তার উল্টোদিকেও এক দশা। সেখানে দুটি বড়মাপের ভ্যাট। দিনভর কুড়ানিরা নাড়াচাড়া করে চারদিকে জঞ্জাল ছড়াচ্ছে। একই ছবি, শহরের বাবুপাড়ার জ্যোৎস্নাময়ী স্কুলের সামনে, কলেজপাড়ার কলেজের পিছনে, শিলিগুলি গার্লস স্কুলের মূল গেটের উল্টোদিকে বা দার্জিলিং মোড়ের।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার তরফে পাড়ায় পাড়ায় নিকাশি নালা ও আবর্জনা সাফাই চলে। ওয়ার্ডের ওই সমস্ত নোংরা এলাকায় যে ভ্যাটগুলিতে জমা করে কম্পাক্টর দিয়ে ট্রাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেই এলাকা পুরোপুরি অপরিস্কার হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেরই প্রায় একই অবস্থা। সাফাই কর্মীদের একাংশ সেগুলি তো ঠিকঠাক পরিস্কার করছেনই না, উল্টে, নোংরা নিতে গিয়ে এলাকায় আরও দূষণ ছড়াচ্ছেন। মশা, মাছির আতুর ঘরে পরিণত করে যাচ্ছেন। নিয়ম করে ভ্যাটগুলিকে পরিস্কার করানো, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কোনও বালাই নেই। এমনিতে, শিলিগুড়ি ম্যালেরিয়ায় প্রকোপের খবর সামনে আসছে। কিন্তু পুর কতৃর্পক্ষকে বিষয়টিতে ঠিকঠাক নজর দিচ্ছেন না। অভিযোগ জানানো হলে, সেই আশ্বাস ছাড়া আর কিছু নেই। প্লাস্টিক ক্যারিবাগের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে।

শুধু সাত সকালে নয়, বেলা ১২টার পরেও কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম, মহকুমা শাসকের বাড়ির সামনে, সুভাষপল্লি মোড় এলাকা, মিলনপল্লি সরকারি আবাসন, হিলকার্ট রোডের সিনেমা হল বা বিধান রোডে ঢোকার মুখ, মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়, ওভারব্রিজের পাশের রাস্তার ধারে, সবর্ত্র ভ্যাট উপচে নোংরা ছড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার ভ্যাটের থেকে নোংরা জল রাস্তা ভাসাচ্ছে। প্লাস্টিক, পচা ফল, সবজি খাবার, কাজ, বোতালের ছড়াছড়ি। ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দা সকলেরই প্রশ্ন, সকাল থেকে সঠিকভাবে শহর পরিস্কার করার দাবি করা হলেও এই হাল হয় কী করে? কিছু কিছু রাস্তা দিয়ে গন্ধে হাঁটাচলা করা দায় হয়ে পড়েছে।

বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরসভার পরিষেবা নিয়ে এমনিতেই নানা সময়ে বিরোধীরা অভিযোগ তুলে সরব হচ্ছেন। তৃণমূল তো বটেই কংগ্রেসের অনেক কাউন্সিলরের দাবি, এই ধরণের পুর পরিষেবায় বোর্ডের ঠিকঠাক নজরদারিও নেই। তাই শহরের এমন হাল হচ্ছে। পুরসভার কংগ্রেসের দলনেতা সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘প্রতিদিন ভ্যাট নিতে গাড়িও আসছে না। শহরের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার হাল খুব খারাপ।’’ আর বিরোধী দলনেতা, তৃণমূলের নান্টু পাল বলছেন, ‘‘শহরটা জঞ্জালগুড়িতে পরিণত হচ্ছে। আমরা নিজেরাই আমাদের ওয়ার্ডগুলিতে সাধ্যমত লোকজন নিয়ে সাফাই করব।’’

পুরসভার কয়েকজন অফিসার আবার সাফাই কর্মীদের একাংশকে পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন। তেমনিই, সকালে দফায় দফায় ভ্যাট পরিস্কারের পর তা ফের নোংরা ফেলে ভরা হচ্ছে। সাফাই গাড়িগুলিতে নজরদারির জন্য ‘জিপিএস’ পদ্ধতি লাগু করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

প্রবীণ বাসিন্দাদের অনেকে জানিয়েছেন, বড় শহরগুলিতে ভোরের আলো ফোটার আগেই সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়। সেখানে শিলিগুড়িতে অনেক পরে কাজ হয়। রাতে বাণিজ্যিক এলাকায় সাফসুতরা করা হলেও তা খুব কম জায়গায়। মেয়র অশোক ভট্টাচার্য সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তেমনিই, দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পরিষদ মুকুল সেনগুপ্ত বলেছেন, ‘‘ভ্যাট পরিষ্কারের জন্য শ্রমিক বাড়ানো হচ্ছে। ব্লিচিংও ছড়ানো হবে।’’

Garbage
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy