—প্রতীকী চিত্র।
বড়দিনের আগে, সুখবর। প্রায় ২৩ বছর পরে, পাহাড়ে গঠন হওয়া দার্জিলিং ও কালিম্পং গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ১৩২ কোটি টাকা পঞ্চদশ অর্থ কমিশন থেকে মঞ্জুর হল। সরকারি সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই সরকারের তরফে বরাদ্দ ওই টাকা পাহাড়ের পঞ্চায়েতে পাঠানোর নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এর বাইরে, আলাদা করে পাহাড়ে ৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা করেছে রাজ্য। পাহাড় সফরে এসে ওই বরাদ্দের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপার সঙ্গে পঞ্চায়েতি ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ের ১১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই টাকা খরচ হবে।
এ বার দু’দশক পরে সরকারি পঞ্চায়েতি ব্যবস্থায় রাজ্য সরকার ১৩২ কোটি টাকা দিচ্ছে। এর মধ্যে ৫৮ কোটি ১৬ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা ‘টায়েড ফান্ড’ বা শর্তসাপেক্ষের তহবিল এবং ৭৩ কোটি ৫৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার ‘আনটায়েড ফান্ড’ বা শর্তহীন সাপেক্ষ তহবিল হিসাবে ভাগ করা হয়েছে। জিটিএ তরফেও পঞ্চায়েতি ব্যবস্থার নজরদারির নির্দেশ আগেই রাজ্য সরকার জারি করেছে। অনীত থাপা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান, সদস্যদের শুভেচ্ছা। মানুষকে দেওয়া কথা পালন করে চলেছি। পাহাড়ের গ্রামীণ স্তরে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে জোরদার ভাবে পরিকাঠামোর কাজ হবে।’’
গত মে মাসে পাহাড়ে ২৩ বছর পরে, দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। ত্রিস্তরীয় ভোট নিয়ে বিজেপি থেকে শুরু করে শাসক-বিরোধীরা সওয়াল করলেও রাজ্য দ্বিস্তরীয় ভোট করিয়েছে। সরকারের তরফে জানানো হয়, পাবর্ত্য পরিষদের পরে, পাহাড়ে তৈরি হয়েছে ‘জিটিএ’। জেলা পরিষদ গঠন করে নতুন ভাবে ত্রিস্তরীয় ভোট করতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন লাগবে। সংবিধান স্বীকৃত ব্যবস্থার জন্য আইনের সংশোধন প্রয়োজন, যা দিল্লিকে বলা রয়েছে। তবে দ্রুত তা করা সম্ভব নয়। সেখানে দুই দশকের বেশি সময় ধরে গ্রামীণ স্তরে পাহাড়ি মানুষ সমস্যায় আছেন। বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ যেমন নিচু স্তরে ঠিকঠাক হয়নি, তেমনই জনপ্রতিনিধি গ্রামে না থাকায় পরিকাঠামো থেকে শংসাপত্র পেতে মানুষকে হয়রান হতে হয়েছে বলে অভিযোগ।
ভোটে সব দলই শেষ অবধি ময়দানে নামলেও, ১১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৯২ শতাংশ বোর্ড শাসক, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাই দখল করেছে। পঞ্চায়েত সমিতিগুলিও শাসক দলের ঝুলিতে। ভোটের পরে প্রায় ছ’মাস পার হলেও, যথাযথ ভাবে পঞ্চায়েতগুলিতে কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না। এর মূল কারণ হিসাবে আর্থিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। শেষে, রাজ্য এবং জিটিএ-র আলোচনায় জট কাটে। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশে তহবিলে থাকা ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের হিসাব থেকে ১৩২ কোটি টাকা পাহাড়ের জন্য আলাদা করে বরাদ্দ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য প্রক্রিয়ায় লোকসভা ভোটের ছবি দেখছেন। বিজেপির দাবি, টাকার হিসাব নিয়ে সরকারকে কড়া নীতি বজায় রাখতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy