মৈনাক। নিজস্ব চিত্র।
দুই মাহুতের মৃত্যুর ঘটনায় সার্ভিস বুকে আগেই দাগ পড়েছিল। এরই মধ্যে আবার এক পাতাওয়ালার জখম হওয়ার ঘটনা ঘটল। যার জেরে আপাতত ‘ডিউটি অফ’ মৈনাকের। বাকি ‘বনকর্মী’দের মতো তাকেও কী করে শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা যায়, আপাতত সেই পথ খুঁজতেই ব্যস্ত জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে কর্মরত বনকর্তারা। সে জন্য হাতি প্রশিক্ষণের নতুন কী কী পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে তা নিয়ে দেশ জুড়ে বিভিন্ন রাজ্যে খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
মৈনাক জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের কুনকি হাতি। উত্তরের এই জাতীয় উদ্যানেই ১৯৯৪ সালে জন্ম মৈনাকের। মা জলদাপাড়ার আরেক পোষা হাতি মেনকা। কিন্তু ২৭ বছরের মৈনাক কখনওই মায়ের স্বভাব পায়নি বলে অভিযোগ। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পর মায়ের মতোই মৈনাকও ‘বনকর্মী’ হিসাবে বন দফতরের কাজে যোগ দেয়। বাকি বনকর্মীদের মতো মৈনাকেরও রয়েছে সার্ভিস বুক। প্রতি মাসে বেতন। কিন্তু অন্য কুনকি হাতিদের থেকে সে যেন কিছুটা আলাদা। বিশেষত, ব্যবহারে।
বনকর্তারা জানিয়েছেন, ‘ডিউটি’তে থাকাকালীন হোক, বা অন্য সময়, মাঝেমধ্যেই মেজাজ হারিয়ে ফেলে মৈনাক। যার জেরে ইতিমধ্যেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে দুই মাহুতের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি জখম হয়েছেন এক পাতাওয়ালা। এ ক্ষেত্রে কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন মাহুত। মৈনাকের এই সব কীর্তিই তার সার্ভিস বুকেও রেকর্ড করা হয়েছে। যার জেরে আপাতত মৈনাককে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সূত্রে জানা গিয়েছে।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের বনকর্তারা জানিয়েছেন, মেজাজ কমিয়ে মৈনাকের মধ্যে শৃঙ্খলায় নিয়ে আসাটাই আপাতত তাদের লক্ষ্য। তাই ফের এক বার তাকে প্রশিক্ষণ দিতে চান তাঁরা। সেজন্য এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোন পদ্ধতিতে কুনকি হাতিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেই খোঁজও শুরু করে দিয়েছেন বনকর্তারা। সেই অনুযায়ী খুব শীঘ্রই মৈনাকের ফের প্রশিক্ষণের জন্য অনুমতি চেয়ে রাজ্যে প্রস্তাব পাঠানো হবে। রাজ্য থেকে অনুমতি মিললে জলদাপাড়াতেই আবার মৈনাককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে বনকর্তারা জানিয়েছেন। জলদাপাড়ার ডিএফও দীপক এম বলেন, “মৈনাককে ডিউটিতে পাঠানো হচ্ছেনা। সে নিজেও এই মুহূর্তে একটু জখম থাকায় চিকিৎসা চলছে। মৈনাককে আবার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।” তারপরই তাকে আবার ডিউটিতে পাঠানো হবে বলে ডিএফও জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy