জেলাশাসকের দফতরে গ্রেটার নেতারা। —নিজস্ব চিত্র
ভারতের রাষ্ট্রপতির শুভেচ্ছা বার্তা দেখিয়ে এ বারে ভারত ভুক্তি চুক্তি দিবস পালন অনুষ্ঠানের অনুমতি চাইল গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন (জিসিপিএ)। তবে প্রশাসন জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আমন্ত্রণপত্র পাঠালে সাধারণত শুভেচ্ছা পত্র পাঠানোই রেওয়াজ। কিন্তু তার মানে কখনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া নয়। প্রশাসনের বক্তব্য, ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ওই শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে কোচবিহার জেলাশাসক পি উল্গানাথনের দফতরে যান জিসিপিএ-র একদল প্রতিনিধি। জেলাশাসক অবশ্য তাঁদের আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সুনির্দিষ্ট কারণে ওই অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে মঙ্গলবারই প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে। পুলিশও জানিয়ে দিয়েছে, জোর করে অনুষ্ঠান করতে চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করার পরে গ্রেটারের কোচবিহার জেলার সহকারী সম্পাদক কৃষ্ণ কার্জি বলেন, “আমরা অনুষ্ঠান যাতে করতে পারি, সে জন্য আবেদন করেছি। ভারতের রাষ্ট্রপতি আমাদের অনুষ্ঠানের সাফল্য কামনা করে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সেই চিঠি দিয়েই আর্জি জানানো হয়েছে।”
সংগঠন সূত্রের খবর, আগামী ২৮ অগস্ট কোচবিহারের চকচকায় কোচবিহারের ভারত ভুক্তি চুক্তি দিবস পালনের ডাক দেয় গ্রেটার। সেই হিসেবে প্রস্তুতি নিতেও শুরু করেন তাঁরা। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ করা হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের অনুমতি চেয়ে আর্জি জানানোর পরে গ্রেটারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ‘নারায়ণী সেনা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করে তারা। গ্রেটারের প্রধান নেতা অনন্ত রায় (যিনি মহারাজ নামে পরিচিত) এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে নারায়ণী সেনা ‘গার্ড অফ অনার’ দেবে বলে জানিয়ে দেন তাঁরা। এ ভাবে সেনা নাম দিয়ে একটি সংগঠন তৈরি করে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া সংবিধান বিরোধী। নারায়ণী সেনাকে বিএসএফ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। বিএসএফ অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ ছাড়া, যে মাঠে গ্রেটার অনুষ্ঠান করতে চেয়েছে, সেই জায়গা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শিল্প নিগমের ওই জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। সব মিলিয়ে জিসিপিএকে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। নারায়ণী সেনার প্রশিক্ষণের উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তেমনটা হলে তাঁদের গ্রেফতার করা হবে বলে পুলিশ জানিয়ে দেয়।
জিসিপিএ জানিয়েছে, অনুমতি না পেলে তাঁরা অনুষ্ঠান করবেন না। তবে অনুমতি পেলে সেখানে অনুষ্ঠান সূচি অনুযায়ী নারায়ণী সেনা থাকবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতা কৃষ্ণবাবু। গ্রেটারের সভাপতি নির্মল রায় বলেন, “ভারত ভুক্তি চুক্তি দিবস পালনের জন্য এ বারে আমাদের অনুমতি দেওয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী। সেই অপেক্ষাতেই আছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy