বন্ধ: জিএসটি চালুর প্রতিবাদে কোচবিহারে প্রতিবাদ ব্যবসায়ীদের। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার মাঝরাত, ইংরেজি মতে যখন কিনা শনিবারের সূচনা, ঠিক সেই সময় থেকে দেশ জুড়ে চালু হয়ে গেল এক ও অভিন্ন কর ব্যবস্থা জিএসটি। সহজ ভাবে বললে, পণ্য-পরিষেবা কর। এত দিন পর্যন্ত যত রকম পরোক্ষ কর ও শুল্ক চালু ছিল, অর্থাৎ উৎপাদন শুল্ক থেকে পরিষেবা কর, সবই চলে এল এক করের মধ্যে।
কিন্তু এই কর ব্যবস্থায় কার লাভ হল? বিভিন্ন করের হার থাকায় এখনও সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী, কেউই বুঝতে পারছেন না, আখেরে তাঁদের পকেট ফাঁকা হবে, নাকি কিছু লাভের কড়িও জমবে। এই না-বোঝার বোঝা ঘাড়ে চেপেছে উত্তরবঙ্গেও। হাটেবাজারে সাধারণ দোকানি থেকে খদ্দের, বেশির ভাগই বলছেন, কী যে হতে চলেছে জানি না! ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির বেশির ভাগই অবশ্য তড়িঘড়ি এই কর ব্যবস্থা চালু করা বিরুদ্ধে। তাই তারা ব্যবসা বন্ধও ডেকেছে। সেই বন্ধে মিশ্র সাড়া মিলেছে। মালদহ থেকে দুই দিনাজপুর, শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার বা কোচবিহার, অনেক জায়গাতেই দোকান-বাজার বন্ধ থেকেছে। আবার অনেকে ব্যবসা খোলাও রেখেছেন। পরিবহণ ব্যবসায়ীরা এই বন্ধে অংশ নেননি।
কারা কী বলছেন, খোঁজ করে দেখল আনন্দবাজার
বণিক সংগঠনের বক্তব্য
ব্যবসায়ীদের কর দিতেই হয়। তা যে কাঠামোতেই হোক না কেন। জিএসটির প্রতিবাদে বন্ধে আমরা সামিল হতে পারিনি। কারণ, তাড়াহুড়ো জিএসটি চালু কিংবা তা নিয়ে চটজলদি বনধ কোনওটাই ঠিক নয়।
বিশ্বজিৎ দাস, সাধারণ সম্পাদক, ফোসিন
ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের পক্ষে জিএসটি আইন মেনে চলা অত্যন্ত কঠিন। কারণ, তাঁদের সেই আইন সম্পর্কে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি।
শঙ্কর কুণ্ডু, সাধারণ সম্পাদক, পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স
ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের স্বার্থরক্ষায় এই বন্ধ। কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই জিএসটি চালু করা হচ্ছে। আবার ২০ লক্ষ টাকার বেশি ব্যবসা হলেই জিএসটি-র আওতায় চলে আসবে বলে বলা হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই সীমা এক কোটি টাকা করতে হবে।
প্রসেনজিৎ দে, সাধারণ সম্পাদক, আলিপুরদুয়ার চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ
জিএসটি নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। তার যে আইনকানুন রয়েছে সেখানে পরিবর্তন দরকার। তা না হলে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা পথে বসে যাবে।
রানা গোস্বামী, বণিক সংগঠনের কর্তা, কোচবিহার
জিএসটি কর ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের জন্য ভাল। কয়েক মাসের মধ্যেই সে সুফল পাবেন প্রত্যেকে।
নিখিল রঞ্জন দে, কোচবিহার জেলা বিজেপি সভাপতি
কী ভাবে হিসেব রাখব, ইনভয়েস দেব, সেটা বুঝতে পারছি না৷ তাই এ দিনের ধর্মঘটে আমরা সামিল হয়েছি৷
বিকাশ দাস, সম্পাদক, জলপাইগুড়ি জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন
ব্যবসায়ীরা বলছেন
জিএসটি কী, তা-ই এখনও বুঝতে পারিনি। তাই দোকানও বন্ধ করিনি।
কমলেশ্বর সাহা, আনাজ ব্যবসায়ী
জিএসটি ব্যাপারাটা বুঝিনি। তাই দোকান খোলা রেখেছি।
সাধন রায়, পানের দোকান
জিএসটি বুঝি না। বন্ধ ডাকা হয়েছে। তাই দোকান বন্ধ রেখেছি।
তিলক রায়, লন্ড্রি মালিক
জিএসটি কী, জানি না। তেলের দাম বাড়বে বলে শুনিনি। তবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে শুনেছি।
বিজন দে, অটোচালক
এবং নাগরিক সমাজ
জিএসটি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ওয়ার্কশপ, সেমিনার হওয়া উচিত ছিল! কেন্দ্র আর একটু সময় নিয়ে ব্যবস্থাটি চালু করলে ভাল করত।
শুভেন্দু অধিকারী, রায়গঞ্জ করোনেশন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক
জিএসটি আদতে কী প্রভাব ফেলবে, বুঝতে পারছি না। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছে জিনিসের দাম বাড়বে। সাধারণ মানুষ কী করবে, সেটাই প্রশ্ন।
সুবীর ঘোষ, চাকরিজীবী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy