২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে জিততে, লোক দেখানো ‘টেট’ হয়েছিল। যার ফল আজও প্রকাশ করেনি জিটিএ।
পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যের পাহাড়ে নিত্যনতুন অভিযোগ বা দাবি সামনে আসছে। এ বার বিধানসভা, জিটিএ ভোটে জিততে পাহাড়ে ‘টেট’ নিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সামনে এল৷ বুধবার বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডদের দাবি, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে জিততে, লোক দেখানো ‘টেট’ হয়েছিল। যার ফল আজও প্রকাশ করেনি জিটিএ। তাতে প্রায় ৫০ হাজার ছেলেমেয়ে ২৭০ টাকা অনলাইনে ব্যাঙ্কে জমা করিয়ে আবেদন করেন। সে টাকার হদিস নেই। চাকরিরও দেখা নেই। পুরোটাই ‘ভুয়ো’ পরীক্ষা বলেই ধরে নেওয়া যেতে পারে।
প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিনয়ের অভিযোগ, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে এই পরীক্ষা হয়। তা জিটিএ স্কুল বোর্ড পরিচালনা করেছিল। তৎকালীন জিটিএ প্রধান ছাড়া, আরও তিন-চার জন এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন। আমিও তখন ওই দলের সঙ্গে ছিলাম।’’ তিনি জানান, এক জন চাকরি প্রার্থী আর তার বাড়ির লোক মিলিয়ে গড়ে তিন জন করে পরিবারপিছু ধরা হয়। তাতে দেড় থেকে দু’লক্ষ মানুষের মধ্যে বেশিরভাগের সমর্থন আদায়ের প্রসঙ্গ ছিল। পুরোটাই এখন দুর্নীতি বলে মনে হচ্ছে।’’
বিনয় অনৈতিক কাজের অভিযোগ করলেও, হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড পুরোটাই ‘দুর্নীতি’ বলে আশঙ্কা করেছেন। হাই কোর্টের দরজা নাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইডির হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গও এনেছেন অজয়েরা। তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের লিগাল সেলকে সব দেখে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ধরনের দুর্নীতির তদন্ত প্রয়োজন। পাহাড়ের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা হয়েছে। সুপারিশে চাকরি দিলেও ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা দাবির ঘটনাও সামনে আসছে।’’
জিটিএ সূত্রের খবর, ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি জিটিএ তরফে ‘টেট’-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। পুরোটাই অনলাইনে আবেদনের কথা বলা হয়। প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি অবধি পড়ানোর জন্য শিক্ষক নিয়োগের কথা বলা হয়। ২০১০ সালের ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন’-এর নিয়মের কথা বলে নির্দেশিকা জারি হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সালে শুধু পাহাড়ের জন্য ‘টেট’ নেওয়া হয়। যার ফল এখনও বেরোয়নি বলে অভিযোগ।
‘গোর্খা আনএমপ্লয়েড প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’-এর সভাপতি সুধান গুরুং বলেন, ‘‘পুরোটাই ভুয়ো পরীক্ষা নিয়ে টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে এর তদন্ত প্রয়োজন। পরীক্ষার ফল আজ অবধি বার হয়নি। উল্টে, বিভিন্ন স্কুলে সুপারিশ দিয়ে লোক ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি। যথা সময়ে সব জানানো হবে বলে তিনি দাবি করেছেন। তবে জিটিএ-র এক যুগ্ম সচিব জানান, পরীক্ষা হলেও পর পর বিধানসভা, পুরসভা, জিটিএ ভোট হয়েছে। আরও কিছু প্রশাসনিক সমস্যা, আর্থিক অনুমোদনের প্রশ্নে সব আটকে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy