Advertisement
E-Paper

মোজমপুরের পর রণক্ষেত্র নওদা-যদুপুর

মোজমপুর শান্ত হতে না হতেই এবার কংগ্রেস- তৃণমূল সংঘর্ষের আঁচ কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে। দু’দলের সংঘর্ষে রবিবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। দু’দলের সমর্থকরাই পরস্পরকে লক্ষ করে বোমা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর উঠে আসে। ফলে থমকে যায় যান চলাচল। সড়কের ধারে বেশ কয়েকটা দোকান ও একটা মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে যুযুথান কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরে মালদহ থেকে ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৯
নওদা-যদুপুরে জ্বলছে দোকান। রবিবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

নওদা-যদুপুরে জ্বলছে দোকান। রবিবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

মোজমপুর শান্ত হতে না হতেই এবার কংগ্রেস- তৃণমূল সংঘর্ষের আঁচ কালিয়াচকের নওদা যদুপুরে। দু’দলের সংঘর্ষে রবিবার সকাল থেকেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। দু’দলের সমর্থকরাই পরস্পরকে লক্ষ করে বোমা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর উঠে আসে। ফলে থমকে যায় যান চলাচল। সড়কের ধারে বেশ কয়েকটা দোকান ও একটা মোটরবাইক জ্বালিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে যুযুথান কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরে মালদহ থেকে ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনীতির যোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন,“মারধরের একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।”

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নওদা যদুপুর এলাকার বছর পনেরোর কিশোর আজিজুর রহমান এ দিন সকালে সুতো কিনতে পাশের গ্রাম ভাগলপুরে যায়। বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় কিছু কংগ্রেস কর্মী তাঁকে মারধর করে বলে অভিযোগ। এরপরে সে গ্রামে পালিয়ে আসে। কংগ্রেসের অভিযোগ, এরপরেই নওদা যদুপুরের তৃণমূলকর্মীরা বোমা, মাসকেট নিয়ে ভাগলপুর এলাকায় চড়াও হয়ে যথেচ্ছ বোমা ছুড়তে শুরু করে। গুলিও চালানো হয় বলে বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া ভাগলপুর বাসস্ট্যান্ডে চার কংগ্রেস সমর্থকের দোকানে আগুন লাগানোরও অভিযোগ উঠেছে।

দোকানের ধ্বংসাবশেষ।—নিজস্ব চিত্র।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, এরপরেই ভাগলপুর থেকে কংগ্রেসের সমর্থকেরা নওদা যদুপুরের দিকে তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের লক্ষ করে বোমা, গুলি ছুড়তে থাকে। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দুই দিকে জড়ো হওয়া দুই দলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বোমা গুলির লড়াই চলতে থাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ জানায়, প্রায় আধঘণ্টা ধরে দু’দলের মধ্য বোমা গুলির লড়াই চলেছে। সংঘর্ষ থামার পরেও, প্রায় তিন ঘণ্টা এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। দুপুর একটার পর থেকে জাতীয় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষের পরে জাতীয় সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বোমার দাগের দেখা মিলেছে।

দু’দলের জেলা নেতারাই এই ঘটনায় পরস্পরের বিরুদ্ধে ঘটনার দায় চাপিয়েছে। মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের অভিযোগ, “কংগ্রেসের দলবল বিনা কারণে নওদা যদুপুর এলাকার একটি ছেলেকে মারধর করেছিল। এরপরই নওদা যদুপুর গ্রামের গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে ভাগলপুরে হামলা করেছে। এই হামলার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।” অন্য দিকে স্থানীয় কংগ্রেস সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “গত পঞ্চায়েত নিবার্চনে নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে আমরা একজনও প্রার্থী দিতে পারিনি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নওদা যদুপুরের ২৩ আসনই তৃণমূল কংগ্রেস দখল করে। এখন তৃণমূল থেকে অনেক নেতা-কর্মী কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তৃণমূল ভয় পেয়েছে। আর সে কারণেই পুলিশের মদতে তৃণমূল সন্ত্রাস চালাচ্ছে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত দখল করার পর প্রধান পদ নিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ ও পঞ্চায়েত সদস্য জাকির শেখের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। দলের অঞ্চল সভাপতি তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীকে প্রধান করার পরই সেই বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। তারপর থেকেই সংঘর্ষের শুরু বলে অভিযোগ। সম্প্রতি জাকির শেখ তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। গত শুক্রবার ভাগলপুর স্ট্যান্ডের কাছে নওদা যদুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানের স্বামীর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। ওই হামলায় জাহিদুর হক নামে এক তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। কংগ্রেসের জাকির শেখ সহ অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। সেই হামলার জেরেই এ দিন পাল্টা হামলা বলে মনে করছেন এলাকার বাসিন্দারা।

congress-tmc clash maldah kaliachowk nawda-jadupur state news online state news northbengal agitation heavy agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy