Advertisement
০২ মে ২০২৪
North Bengal

বিপর্যস্ত তিস্তাবাজার, রংপোয় পুনর্বাসনে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি

রবিবারই পেশক বাংলোয় কালিম্পং জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা।

পেশকের পুর্ত দফতরের বাংলোয় কালিঙ্পঙের পুনর্বাসন, অনুদান নিয়ে বৈঠক।

পেশকের পুর্ত দফতরের বাংলোয় কালিঙ্পঙের পুনর্বাসন, অনুদান নিয়ে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৭
Share: Save:

উত্তর সিকিমের সঙ্গে কালিম্পঙের তিস্তার জলস্ফীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তাবাজার, রংপোর পুনর্বাসন নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হল। গত শনিবার পেশকের পূর্ত দফতরের বাংলোয় জিটিএ প্রধান, বিভিন্ন জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত এনএইচপিসি’র অফিসারেরা এবং কালিম্পঙের জেলা প্রশাসনের অফিসারেরা ছিলেন। গত ৪ অক্টোবরের বিপর্যয়ের পর থেকে বহু মানুষ গত ২৫-২৬ দিন ধরে ত্রাণ শিবিরে আছেন। চিকিৎসা, খাবারের বন্দোবস্তের পর জল নামতেই দমকল, স্বেচ্ছাসেবী এবং জিটিএ-র নিয়োগ করা কর্মীরা বাড়িগুলি পরিষ্কার করেছেন। পলি, কাদা বার করা হয়েছে। এ বার ধীরে ধীরে অক্টোবরের শেষে শীত পড়তেই তিস্তার জল কমেছে। আপাতত পরিস্থিতি দেখে নিয়ে পুনর্বাসনের কাজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এলাকার সমস্ত জিটিএ সদস্য, কালিম্পঙের বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচা, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সভাপতি, প্রধান ও সদস্যদের নিয়ে ‘পর্যবেক্ষণ কমিটি’ তৈরি হয়েছে। এঁদের সঙ্গে সমন্বয় করবে জিটিএ এবং এনএইচপিসি। তিস্তাবাজার, গেলখোলা, রংপো এবং রিয়াং এলাকার বাড়িঘর, দোকান, সম্পত্তি বা ব্যবসার গাড়ির ক্ষতির তালিকার তৈরি করা হবে। কমিটি সাত দিন পরে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবে। তার পরেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, ব্যক্তি ধরে ধরে সাহায্যের কাজ শুরু করা হবে। তবে বাড়ি ও দোকান ঘর তৈরির বিষয়টিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সিকিমের মতোই এই এলাকাগুলির পরিকাঠামো নতুন করে তৈরি করা হবে।

রবিবারই পেশক বাংলোয় কালিম্পং জেলার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। তিনি বলেন, ‘‘তিস্তার ধার ধরে কালিম্পং জেলার যা ক্ষতি হয়েছে তা কারও একার পক্ষে ঠিক করাটা সম্ভব নয়। সরকারি সাহায্য তো লাগবেই। তবে সকলে মিলে কাজ করলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আমরা লড়াইটা জিতে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারব।’’

বিপর্যয়ের পরে এলাকার ত্রাণ-সহ কাজের জন্য রাজ্য সরকার ২৫ কোটি টাকা দিয়েছে। এনএইচপিসি-কে জিটিএ প্রধান তিস্তা বরাবর শুধু বাঁধ দেওয়া কথা দু’দফায় বলেছেন। তেমনই, সিকিমের মতো ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতেও তাঁদের বলা হয়েছে। এর মধ্যে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও দাবি করেছেন, তিনি কালিম্পং জেলার রিপোর্ট দিল্লিতে দিয়েছেন। সেখান থেকে আর্থিক সাহায্যের বিষয়টি নিশ্চয়ই ভাবা হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে বরাদ্দ দুর্যোগ মোকাবিলার টাকা থেকে আরও বরাদ্দের দাবি তুলেছেন সাংসদ। জিটিএ-র অফিসারেরা জানান, দীপাবলির আগে কেন্দ্র, রাজ্য বা এনএইচপিসি’র তরফে সাহায্যের বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তার আগে তাই প্রয়োজন, বাড়িঘর ছাড়াও ঠিক কতজনের কী কী ক্ষতি হয়েছে তার হিসাব। সেই ক্ষতি টাকার মূল্যের কতটা তা আগাম তৈরি করা হচ্ছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কালিম্পং জেলা প্রশাসনের একটি রিপোর্ট অনুসারে, কমপক্ষে ৫৫০টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি ক্ষতি থেকে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরও রয়েছে। সব মিলিয়ে অন্তত ৬০০ পরিবার ক্ষতির মুখে পড়েছে। প্রশাসনের তরফে তা কলকাতায় জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE