দার্জিলিং পাহাড়ে টানা ১০৪ দিনের বন্ধের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেনি শিলিগুড়ির বাণিজ্য মহল। একাধিক বণিক সংগঠন সূত্রের দাবি, শিলিগুড়ি শহর ও লাগোয়া এলাকার খুচরো ও পাইকারি বাজারে বন্ধের আগের মাস অবধি যা লেনদেন হত, তা আর হচ্ছে না।
উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস হিসেব কষে দেখেছেন, এখন শিলিগুড়িতে প্রতিদিনের গড় লেনদেনে অন্তত ৫ কোটি টাকার ঘাটতি হচ্ছে। এই ক্ষতি কবে পূরণ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘শিলিগুড়িতে গড়ে প্রতিদিন ১২ কোটি টাকার লেনদেন হয়। পাহাড় বন্ধের সময়ে এই লেনদেনে ধস নেমেছিল বলা যায়। ব্যবসা তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল। এখন কিছুটা উন্নতি হলেও ৪০ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। তা কবে মিটবে বুঝতে পারছি না।’’
উত্তরবঙ্গের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে শিলিগুড়ি পরিচিত। উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির শিরদাঁড়া হিসেবে চা-শিল্পকে ধরা হয়। দার্জিলিং চায়ের রফতানির সঙ্গে যুক্ত শিলিগুড়ির বহু সংস্থা। চা শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের দাবি, দার্জিলিং চায়ের সেকেন্ড ফ্লাশ এ বারে বাজারে আসেনি। তার প্রভাব পড়েছে তরাইয়ের বাণিজ্যেও। সিআইআই-এর বর্তমান চেয়ারম্যান রাজীব লোচন বলেন, ‘‘দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে তরাই-ডুয়ার্সের চা-ও ভিন রাজ্যে যায়, বিদেশে রফতানি হয়। ডুয়ার্স-তরাইয়ের চা-ও মার খেয়েছে অনেকটাই। এর প্রভাব অবশ্যই শিলিগুড়ির বাজারেও পড়েছে।’’
সিআইআই-এর দাবি বেকারি, কৃষিজাত শিল্প, মুরগি ফার্ম এবং ডেয়ারি সহ যে সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকায় রয়েছে, সেগুলির অর্থনৈতিক ক্ষমতা অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে। হাঁস-মুরগির ফার্মগুলি পাহাড়ের উপরেই নির্ভরশীল। নির্মাণ সামগ্রীর বড় বাজারও রয়েছে শিলিগুড়িতে। যার মূল ক্রেতা দার্জিলিং এবং সিকিম পাহাড়ের বিভিন্ন এজেন্সি এবং বাসিন্দারাও। ধুঁকছে সেই বাজারও। হার্ডঅয়্যার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রদ্যুম্নসিংহ চহ্বানের কথায়, ‘‘দিনের শেষে রোজ হিসেবের খাতাকলম নিয়ে বসি প্রতিদিনই ৫০ শতাংশ ঘাটতি হিসেব পাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy