Advertisement
২৪ মার্চ ২০২৩

শেফার্ড দেখেই বন্দুক ফেলে ভাগলবা

 বেলজিয়ামের প্রশিক্ষিত শেফার্ড নিয়ে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হতেই জঙ্গলে বন্দুক ফেলে পালিয়েছে একদল চোরাশিকারি। ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ঘটনা। রবিবার রাতে বনকর্মীরা তল্লাশি চালাতে গিয়ে একটি গাছের তলায় কাঠকুটো দিয়ে চাপা দেওয়া দিশি রাইফেলটি উদ্ধার করে।

খোঁজে: বেলজিয়ামের শেফার্ড উত্তরের অরণ্যে। নিজস্ব চিত্র

খোঁজে: বেলজিয়ামের শেফার্ড উত্তরের অরণ্যে। নিজস্ব চিত্র

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৬
Share: Save:

বেলজিয়ামের প্রশিক্ষিত শেফার্ড নিয়ে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হতেই জঙ্গলে বন্দুক ফেলে পালিয়েছে একদল চোরাশিকারি। ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ঘটনা। রবিবার রাতে বনকর্মীরা তল্লাশি চালাতে গিয়ে একটি গাছের তলায় কাঠকুটো দিয়ে চাপা দেওয়া দিশি রাইফেলটি উদ্ধার করে। ওই এলাকায় বহিরাগতদের আনাগোনার স্পষ্ট চিহ্নও মিলেছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক কর্তা জানান, বেলজিয়ামের শেফার্ড থাকায় কোথাও চোরাশিকারিদের মধ্যে ধরা পড়ার ভয় আরও বেড়েছে। সে জন্যই বন্দুক জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রেখে পালিয়েছে বলে বনকর্তার দাবি।

Advertisement

অবশ্য শুধু বক্সা নয়, গরুমারা, জলদাপাড়া, সুকনা বনাঞ্চলেও চোরাশিকারিরা চুপিসাড়ে ঢুকে বন্দুক লুকিয়ে রেখে রাখছে কি না, সেটাও খেয়াল রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন বনকর্তারা। এক কর্তা জানান, ইদানীং সুকনা ও জলদাপাড়া দু’টি জার্মান শেপার্ড দিয়ে বনপথে যাতায়াতকারী যানবাহনে তল্লাশি চলছে। বক্সায় কাজ করছে বেলজিয়ামের শেফর্ডটি। সকলেই বন্যপ্রাণ পাচার রুখতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।

বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘‘কুয়াশার সুযোগ নিতে চোরাশিকারিরা এখনও সক্রিয়। তাই তল্লাশি জোরদার হয়েছে। প্রশিক্ষিত কুকুর থাকায় কাজে অনেক সুবিধাও হচ্ছে। আরও প্রশিক্ষিত কুকুরের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’’

নভেম্বরের গোড়ায় ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরোর পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, মিজোরামের একটি দল উত্তরবঙ্গে হাতি-গণ্ডার শিকারের ছক কষেছে। বন দফতরের একাংশের আশঙ্কা, উত্তর পূর্ব ভারতের মিজোরাম থেকে ঢোকা চোরাশিকারিদের দলটি বক্সা, জলদাপাড়া বনাঞ্চলের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে। কারণ, এই মুহূর্তে ওই বনাঞ্চলে হাতির একটি বড় দল রয়েছে। গণ্ডার, বাইসন, চিতাবাঘ, হরিণ, পাইথনের সংখ্যাও অনেক। সে কথা মাথায় রেখেই গত মাসে তিনটি প্রশিক্ষিত কুকুর এনেছে বন দফতর।

Advertisement

যে কুকুরেরা গন্ধ শুঁকে আহত বন্যপ্রাণ, কিংবা বুনো জন্তুর দেহাংশ কোথাও লুকানো থাকলে চট করে ধরে ফেলতে পারে। এমনকী, বন্দুক কিংবা শিকারিদের ব্যবহৃত সামগ্রী শুঁকেও চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে পারে তারা। বক্সায় পাওয়া বন্দুকটি উদ্ধারের সময়ে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। সে সময়ে অনেকে বন্দুকটি হাত দিয়ে ধরেছিলেন বলে বন্দুকের সূত্রে কুকুরটিকে দিয়ে কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি বন দফতর। তবে বনকর্মী ও স্থানীয় বনবস্তিবাসী একজোট থাকায় এখনও অবধি চোরাশিকারিদের দলটি সুবিধা করে উঠতে পারেনি বলে অফিসারদের দাবি। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘সুকনা থেকে জলদাপাড়া, বক্সা থেকে গরুমারা, সর্বত্রই বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে।’’ ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “বন ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় কর্মীদের শূন্যপদ পূরণের ব্যাপারেও জোর দেওয়া উচিত। তা না হলে উদ্বেগ পুরোপুরি কমবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.