Advertisement
E-Paper

অবাধে অবৈধ নির্মাণ চলছে পঞ্চনই নদীতে

প্রশাসনিক উদাসীনতায় নদীর চর দখল করে নির্মাণের প্রবণতা বেড়েই চলেছে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি শহরের মধ্যে দার্জিলিং মোড় লাগোয়া পঞ্চনই নদীর চর দখল করে নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৬ ০১:৫২
নদীর চরে বাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।

নদীর চরে বাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।

প্রশাসনিক উদাসীনতায় নদীর চর দখল করে নির্মাণের প্রবণতা বেড়েই চলেছে শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি শহরের মধ্যে দার্জিলিং মোড় লাগোয়া পঞ্চনই নদীর চর দখল করে নির্মাণ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নদীর চরে কংক্রিট দিয়ে এলাকা দখল করা হয়েছে। এমনকী সিমেন্ট দিয়ে লেপে নদীর চর দখল করে মালিকানা প্রতিষ্ঠারও চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের অনেকেরই ভোটার কার্ড নেই। কোথা থেকে তারা এসেছেন তারও সদুত্তর মিলছে না। এভাবে অজ্ঞাত পরিচয় কিছু লোক শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থলে নদী দখল করে নির্মাণ করলেও তার কোনও খবর নেই স্থানীয় পাথরঘাটার পঞ্চায়েত প্রধান প্রফুল্ল বর্মনের কাছে।

যদিও এমন অভিযোগ তাঁর কানেও এসেছে বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার। দ্রুত বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রয়োজনে প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। তাপসবাবু বলেন, ‘‘আমি সোমবারই সেচ দফতরকে চিঠি লিখব। নদীর চর দখল মেনে নেওয়া হবে না।’’ সেচ দফতরের পক্ষ থেকে খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস আগে থেকে দালালদের সাহায্যে বহিরাগত কিছু লোক এখানে নদীর চর দখল করছে। কাঠা-বিঘার কোনও হিসেব নেই। দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা জমির এলাকা হিসেবে বিক্রি হয়েছে। এখন নদীতে জল নেই। সেই সুযোগে স্থায়ী কাঠামো তৈরি করে নিয়েছে ওই বহিরাগতরা বলে দাবি স্থানীয় কিছু লোকের। ওই এলাকার পুরোনো বাসিন্দা জয়কান্ত বর্মনের দাবি, ‘‘এখানে নদীর চর বিক্রি করছে কিছু লোক। তাঁদের মধ্যে অনেকেই শাসক দলের লোক।’’

এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপির বর্ষা প্রধানরায়। তিনি সব জানেন বলেও অভিযোগ। তিনি অবশ্য বহুবার বলা সত্ত্বেও লোকে বারণ শুনছে না বলে জানান। তবে কাউকে এ বিষয়ে জানাননি কেন? তার সদুত্তর দিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘‘বলা হয়নি। এবার বলব। চিঠি দেব সভাধিপতি থেকে সেচ দফতরেও।’’

চর দখল শুধু নয়, নদীর অন্য পার থেকে মাটি কেটে নিজেদের দখল করা চর উঁচু করে তাতে নির্মাণেরও অভিযোগ উঠেছে। এই মাটি কাটা নিয়ে কয়েকদিন আগে অন্য পারের বাসিন্দাদের সঙ্গে গোলমাল বাঁধে। তবে সেখানকার পঞ্চায়েত সদস্যের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সেই সময়ের জন্য মিটে যায়। নদীর অন্য পাড়টি চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের বিজয়কৃষ্ণ দে বিশ্বাস সমস্যার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘গত ৬-৭ মাস থেকে ওই এলাকায় প্রচুর নতুন ঘর হতে দেখছি। পাড় থেকে নদীর ভিতর দিকে অন্তত পঞ্চাশ মিটার চর দখল হয়েছে গত কয়েক মাসে। এ পাড় থেকে মাটি কাটায় এ পাশের বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। তাই কিছু লোক বাধা দিলে, কয়েকশো লোক পাথরঘাটার দিক থেকে মারতে আসে। আমি বিষয়টি হস্তক্ষেপ করে মিটমাট করি। না হলে বড় ধরণের গোলমাল হতে পারত।’’

পাথরঘাটার নতুন দখল করা এলাকায় বেশিরভাগই তাদের নাম জানাতে চাননি। ভোটার কার্ড আছে কিনা জানতে চাইলে তাও দেখাতে চাননি। এক বাসিন্দা নাম জানালেন সাদেক। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা পয়সা দিয়ে কিনে নিয়েছি।’’ কাগজ আছে বলে দাবি করলেও কাগজ দেখাবেন না বলেও জানান। কার কাছ থেকে কিনেছেন? এ প্রশ্নের অবশ্য উত্তর দেননি তিনি।

Darjeeling River Illegal construction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy