এনজেপি ফাঁড়িতে আটক চোরাই গাড়ি।—নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়িতে ধরা পড়ল আন্তঃ রাজ্য গাড়ি পাচারের একটি চক্র। গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্ধার হয়েছে একটি ট্রাক, একটি এসইউভি গাড়ি সহ তিনটি গাড়ি। গাড়িগুলোর প্রত্যেকটির নম্বর বদল করা হয়েছে। গোটা দেশের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গেও এই পাচার চক্রের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে বলে ধৃতেরা প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, অসমে গাড়িগুলির নকল কাগজ তৈরি হয়েছে। ধৃতদের রবিবারই জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে তোলা হয়। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘চক্রটি দীর্ঘ দিন শিলিগুড়িকে করিডর করে দেশের বিভিন্ন অংশে এমনকী বাইরেও চোরাই গাড়ির ব্যবসা চালাচ্ছে। গোটা চক্রটিকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া নিয়ে এই ব্যবসা চালাচ্ছিল। ধৃতদের নাম বিধান রায়, দেবেন্দ্র শর্মা এবং অবধেশ যাদব। এর মধ্যে বিধানের বাড়ি শিলিগুড়ির বিদ্যাচক্র কলোনিতে। দেবেন্দ্র বিহারের মুজঃফরপুরে। এখানে ইস্টার্ন বাইপাসে একটা গ্যারেজ খুলে ব্যবসা চালাচ্ছিল। শিলিগুড়ির একটিয়াশালে ভাড়া থাকত। অন্যজন উদ্ধার হওয়া একটি গাড়ির চালক। সে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। সেখান থেকে গাড়িটি চালিয়ে শিলিগুড়ি আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে নিউ জলপাইগুড়ি এলাকা থেকে একটি পিক আপ ভ্যান ধরে এনজেপি ফাঁড়ির পুলিশ। ওই গাড়ির চালক বিধানকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাকে জেরা করেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার, এডিসিপি ভোলানাথ পাণ্ডে। জেরায় সে জানায় ইস্টার্ন বাইপাসে একটি গ্যারেজে বাইরে থেকে আনা চোরাই গাড়িগুলির ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর ও নম্বর প্লেট বদল করা হয়। সেখানে নতুন নকল চেসিস নম্বরও ও ইঞ্জিন নম্বর বসানো হয়। ফোন করে অসমের গুয়াহাটিতে চক্রের অন্য একটা অংশকে জানিয়ে দেওয়া হয় ওই নতুন নম্বরগুলি। সেখানে ওই নম্বরের কাগজপত্র তৈরি হয়। এরপরে কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হলে গাড়িগুলি ফের বিক্রি করে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, মূলত বিহার, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে গাড়িগুলি চুরি করে পাচার করা হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর, মেঘালয়, অসম, ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ডে। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরার পর আরও তথ্য মিলবে বলে পুলিশের আশা। চক্রটি আরও কতগুলি গাড়ি চুরি করে কোথায় কোথায় পাচার করেছে তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy