Advertisement
০৩ মে ২০২৪

তদন্তের চাপে শৌচাগার, রান্নাঘর গড়ে দিচ্ছে ক্লাব

স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট করে পুজোর মণ্ডপ তৈরির ঘটনার তদন্ত শুরু করল শিক্ষা দফতর ৷ জলপাইগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) দফতর ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ শুক্রবার পৃথকভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷

শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে সোনাউল্লা স্কুলে। — সন্দীপ পাল

শৌচাগার তৈরির কাজ চলছে সোনাউল্লা স্কুলে। — সন্দীপ পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৩৭
Share: Save:

স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট করে পুজোর মণ্ডপ তৈরির ঘটনার তদন্ত শুরু করল শিক্ষা দফতর ৷ জলপাইগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) দফতর ও প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ শুক্রবার পৃথকভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে৷ তদন্তের পর যুবমঞ্চ ক্লাবের বিরুদ্ধে কড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কর্তারা৷ তবে যুবমঞ্চের কর্মকর্তারা গোটা ঘটনায় এখনও নিজেদের দোষ মানতে নারাজ৷

অনেক বছর ধরেই জলপাইগুড়ি সোনাউল্লা স্কুলের ময়দানে কালীপুজো করে আসছে শহরের বিগ বাজেটের পুজো বলে পরিচিত যুবমঞ্চ ক্লাব৷ ক্লাবের সম্পাদক আবার জলপাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু নিজেই৷ অভিযোগ, এ বছর পুজোর মণ্ডপ তৈরির জন্য বিনা অনুমতিতেই স্কুলের তিনটি শৌচাগার, মিড-ডে মিলের রান্নাঘর ও সীমানা পাঁচিলের একাংশ ভেঙে ফেলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ৷ শুধু তাই নয়, মাঠে মণ্ডপ ও অনুষ্ঠান মঞ্চ খোলার কাজ চলতে থাকায় এবং কয়েকটি ক্লাসরুমে পুজোর সরঞ্জাম থেকে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার নাম ডেকেই প্রায় সব ক্লাসের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় ৷ সেইসঙ্গে শুক্রবার ও শনিবার স্কুলের প্রাথমিক বিভাগে ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে৷ প্রাথমিক বিভাগের এক শিক্ষক জানান, ক্লাসরুম পঠন-পাঠনের জন্য উপযুক্ত নেই জন্যই দুদিন ছুটি দেওয়া হয়েছে৷ সোমবার এমনিতেই রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে৷ তাই মঙ্গলবার প্রথম দিকের ক্লাস শুরু হবে৷

এ দিকে সংবাদমাধ্যমে স্কুলের সম্পত্তি ভেঙে মণ্ডপ তৈরির খবর প্রকাশিত হতেই এ দিন নড়েচড়ে বসে শিক্ষা দফতর। পৃথক পৃথকভাবে শুরু হয় তদন্ত৷ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) স্বপন সামন্ত নিজে স্কুলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন৷ স্কুলের তরফে বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানানো হয়, ক্লাবটি শুধুমাত্র পুজোর জন্য মাঠ ব্যবহারের কথা বলেছিল৷ কোনও সম্পত্তি ভাঙার কথা জানানো হয়নি৷ স্বপনবাবু বলেন, ‘‘স্কুলের অনুমতি নিয়ে পুজোর জন্য কোনও ক্লাব মাঠ ব্যবহার করলেও স্কুলের কোনও পরিকাঠামোর ক্ষতি বা পড়াশোনা ব্যাহত করতে পারে না৷ তদন্তের পরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’’ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে৷ সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায় বলেন, ‘‘এমন ঘটনা কখনও শুনিনি যে পুজোর জন্য কোনও ক্লাব স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট করে৷ সংসদের তরফেও তদন্তের পর ক্লাবের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’’

তবে চাপে পড়ে এ দিন থেকেই অবশ্য স্কুলে নতুন শৌচাগার ও মিড-ডে মিলের রান্নাঘর তৈরির কাজ শুরু করেছে ক্লাবটি৷ সেই সঙ্গে সীমানা পাঁচিল গড়ার কাজও শুরু হয়েছে৷ ক্লাবের সম্পাদক মোহনবাবু বলেন, ‘‘মানুষের ক্ষতি বা স্কুল ধ্বংস করে যুবমঞ্চ পুজো করে না৷ বরং স্কুলের উন্নয়নে এই ক্লাব অনেক কাজ করেছে৷’’ তার দাবি, যে শৌচাগার তিনটি ভাঙা হয়েছে, সেগুলি বছরের অর্ধেক সময়ই ব্যবহার করা যেত না৷ মিড ডে মিলের রান্না ঘরটির অবস্থাও একই ছিল৷ তাই সেগুলি ভেঙে ফেলা হলেও ক্লাব নিজের খরচায় তা গড়ে দিচ্ছে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toilet Club
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE