রাজাভাত চা বাগানে খাঁচাবন্দি হল একটি পূর্ণবয়স্ক চিতাবাঘ। শনিবার উমেশ মুণ্ডা নামে এক বালক চিতাবাঘের আক্রমণে প্রাণ হারায়। তাকে চিতাবাঘটি খেয়ে ফেলে। এই চিতাবাঘটি সেটিই কি না, তা এখনও বোঝা যায়নি। এ দিকে মাদারিহাটে সোমবারই চিতাবাঘের হামলায় জখম হয়েছেন এক দম্পতি।
সোমবার ভোরে বাগানের ১৪ নম্বর সেকশনে খাঁচা বন্দি হয় স্ত্রী চিতাবাঘটি। শনিবার বেলা এগারোটা নাগাদ বাবার জন্য ভাত নিয়ে যাওয়ার সময়েই উমেশকে মেরে খুবলে খায় একটি চিতাবাঘ। তার পরেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পাতা হয় খাঁচা। ওই এলাকায় একাধিক চিতাবাঘের আনাগোনা রয়েছে বলে বন দফতর খবর পেয়েছে। তাই বন্দি চিতাবাঘটিই মানুষখেকো কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে বন দফতর। সে জন্য চিতাবাঘটিকে আপাতত জঙ্গলে ছাড়া হবে না বলে বন দফতর জানিয়েছে। সেটিকে ফালাকাটার কাছে খয়েরবাড়ি লেপার্ড রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাস জানান, যেখান কিশোরটিকে মেরে চিতাবাঘ খেয়েছিল সেখানেই ধরা পড়ছে পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী চিতাবাঘটি। ওই চিতাবাঘটির পায়ের ছাপ আগেই সংগ্রহ করা হয়েছিল। এখন এই চিতাবাঘের পায়ের ছাপের সঙ্গে তা মেলানো হবে। তার পরেই নিশ্চিত হওয়া যাবে এই চিতাবাঘটি
নরখাদক কি না।
গত শনিবার রাজাভাত চা বাগানের নীচ লাইনের বাসিন্দা দশ বছরের উমেশ তার দুই বন্ধু লাল ও মুকের সঙ্গে ভাত নিয়ে যাচ্ছিল বাবার জন্য। ১৪ নম্বর সেকশনে ম্যানেজারের বাংলোর কাছেই আচমকা চা গাছের ঝোপ থেকে বেড়িয়ে আসে চিতাবাঘটি। আচমকাই উমেশের উপর আক্রমণ করে এবং তাকে ঝোপের ভিতর টেনে নিয়ে যায়। ভয়ে মুকে ও লাল সেখান থেকে পালিয়ে নিজেদের বাড়ি চলে যায়। প্রথমে তারা কিছু বলতে চায়নি, পরে বিষয়টি জানাজানি হলে উদ্ধার হয় উমেশের আধখাওয়া দেহ।
বনদফতরের কর্তারা স্বীকার করে নেন চিতাবাঘ একাধিকবার ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় চা শ্রমিকদের উপর আক্রমণ করলেও, মানুষ মেরে খাওয়ার ঘটনা বিরলতম। কী কারণে চিতাবাঘটি মানুষ মেরে খেল তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) প্রদীপ ব্যাস বলেন, “চিতবাঘটি কোন রোগগ্রস্ত কি না, তা দেখা হবে।”
সোমবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের রাজাভাতখাওয়া রেঞ্জের বিট অফিসার সৌভিক ঝা বনকর্মীদের নিয়ে চিতাবাঘটিকে বনদফতরের গাড়িতে তোলার তোড়জোর করছেন। এ দিন চিতবাঘ ধরার খবর পেয়ে চুপচাপ নিজের বাড়ির উঠোনে বসে কাঁদছিলেন মৃত উমেশের বাবা প্রীতম মুণ্ডা ও মা মিনু।
মাদারিহাটের নবীপুর গ্রামে এ দিন পাট কাটছিলেন খাদেমুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী। পাট খেতে লুকিয়ে থাকা চিতাবাঘটি তাঁদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাঁদের উদ্ধার করা হয়। জাল ফেলে চিতাবাঘটিও ধরা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy