মালদহের মানিকচকে মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের বিরুদ্ধে তাঁরই দলের জেলা পরিষদ সদস্যকে প্রার্থী করার দাবি তুললেন কংগ্রেস সমর্থকদের একাংশ। শনিবার দুপুরে এমন দাবি তুলে কোতুয়ালি ভবনে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের ওই জেলা পরিষদ সদস্য গৌড়চন্দ্র মন্ডলের অনুগামীরাও। পরে ঘণ্টাখানেক ধরে তাঁরা জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম নূরের সঙ্গে বৈঠকও করেন। এ বিষয়ে জেলা কংগ্রেসের সভানেত্রী তথা সাংসদ মৌসম বলেন, ‘‘কিছু কর্মী আমার কাছে এসেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য শোনা হয়েছে। সকলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আর কোন এলাকায় কে প্রার্থী হবেন তা ঠিক করবেন আমাদের হাইকম্যান্ড।’’
তবে তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্যকে প্রার্থী করার দাবি ওঠায় প্রশ্ন উঠেছে কংগ্রেস এবং তৃণমূল, দু’দলের অন্দরেই। মানিকচক ব্লকের একাংশ নেতা কর্মীরা আবার গৌড় মন্ডলকে প্রার্থী করার বিরোধিতা করেছেন। এ বিষয়ে কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি অভিজিৎ মিশ্র বলেন, ‘‘গৌড় মন্ডল এখনও তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য। এ ক্ষেত্রে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে আমাদের দলের অনেকেই মেনে নিচ্ছেন না। এই বিষয়ে আমরা আমাদের নেতৃত্বদের জানাব।’’ মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন জেলা পরিষদের সদস্য তথা প্রাক্তন ব্লক সভাপতি গৌড়চন্দ্র মন্ডল। তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের বহু কর্মী আমাকে তাঁদের দলের প্রার্থী হিসেবে চাইছে। আমাকে যদি প্রস্তাব দেওয়া হয় অবশ্যই আমি তাতে সম্মতি দেব। কারন মানিকচকের মানুষ উন্নয়ন চাই, সন্ত্রাস থেকে মুক্ত পেতে চাইছেন।’’ যদিও এ বিষয়ে কিছু জানা নেই বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি এ নিয়ে কিছু জানি না। আর কেউ যদি অন্য দল থেকে প্রার্থী হন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আর গৌড়বাবু আমাদের দলের জেলা পরিষদের সদস্য রয়েছেন। সেই পদ থেকেও তাঁকে সরে দাঁড়িয়ে লড়াই করতে হবে তাঁকে।’’
মালদহের মানিকচক বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র। ওই কেন্দ্র থেকেই বিগত বিধানসভা নির্বাচনে দলের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। ওই কেন্দ্রে মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের ঘনিষ্ঠ ছিলেন গৌড়চন্দ্র মন্ডল। তিনি মানিকচক ব্লকের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভুতনি থেকে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। লোকসভা নির্বাচনের পর মালদহে তৃণমূলের জেলা কমিটি ভেঙে যায়। ফলে সেই সময়ে গৌড় মন্ডলকে ব্লক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া সাবিত্রীদেবীর আরেক ঘনিষ্ঠ নেতা সুনন্দ মজুমদারকে। এরপরেই গৌড় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বলে দল সূত্রে খবর। তাঁরপর থেকেই সাবিত্রীদেবীর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয় বলে জানাচ্ছেন কর্মীদের একাংশ। কোনও কর্মিসভাতেও দেখা যায়নি তাঁকে। দলীয় সূত্রে এও জানা গিয়েছে, মানিকচক থেকে প্রার্থী হতে চেয়ে জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও আবেদন করেছিলেন তিনি। এ দিন কোতুয়ালিতে কংগ্রেস সমর্থকদের বিক্ষোভের পিছনে গৌড়বাবুও যুক্ত থাকতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও এ বিষয়ে আমল দিতে নারাজ সাবিত্রীদেবী। তিনি বলেন, ‘‘মানিকচকের মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে। কে কী বলছে তাতে কিছু এসে যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy