Advertisement
E-Paper

বেপরোয়া গাড়ি রুখতে পুলিশ কী করছে, প্রশ্ন মাটিগাড়ায়

সকাল থেকে সারাদিন গাড়ির লাইনে এলাকায় চলাফেরা করা দায়। অথচ সন্ধে হলেই এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। তখন দূরপাল্লার গাড়ির পাশাপাশি যে অল্প সংখ্যক সিটি অটো চলে তারাও বেপরোয়া হয়ে পড়ে।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৪

সকাল থেকে সারাদিন গাড়ির লাইনে এলাকায় চলাফেরা করা দায়। অথচ সন্ধে হলেই এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। তখন দূরপাল্লার গাড়ির পাশাপাশি যে অল্প সংখ্যক সিটি অটো চলে তারাও বেপরোয়া হয়ে পড়ে। দার্জিলিং মোড় থেকে শুরু করে, খাপরাইল মোড়, ফাঁসিদেওয়া মোড় হয়ে মেডিক্যাল মোড় পর্যন্ত এলাকা তখন বেপরোয়া গাড়ি চালকদের দখলে চলে যায়।

মাটিগাড়া থানার অধীন এই বিস্তীর্ণ রাস্তায় মাঝে মধ্যেই লেগে থাকে দুর্ঘটনা। বুধবারই রাতে মদ্যপ চালকের ভুলে বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের সন্দেহ। তার পরেও বৃহস্পতিবার সারাদিনে পুলিশের ভূমিকায় কোনও বদল দেখা যায়নি। এলাকার লোকজন দায়ী করছে পুলিশের ভূমিকাকেই। যদিও পুলিশ মনে করছে তাঁদের পক্ষ থেকে যথাযথ ভূমিকা গ্রহণ করা হচ্ছে। তাতে কোনও গাফিলতি নেই। তবে গোটা রাস্তাতে পুলিশ মোতায়েন করা কখনওই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।

শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ট্রাফিক শ্যাম সিংহ পুলিশের ভূমিকা যথাযথ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘‘বুধবারের দুর্ঘটনা একটি বিক্ষিপ্ত ব্যপার। ওই চালক মদ্যপ অবস্থায় থাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর চেয়ে পুলিশের আর কী করার থাকতে পারে?’’ তিনি জানান, এলাকায় সারাদিনে নিয়মিত মাটিগাড়া থানার পুলিশ ভ্যান টহল দেয়। সিটি সেন্টারের সামনে সারদিনই পুলিশ মোতায়েন থাকে। রাতে সব জায়গায় পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান তিনি। তবে গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে পুলিশ পাহারা থাকে বলেও জানানো হয়েছে। যদিও শিলিগুড়ির মেয়র তথা শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যও অভিযোগ করেন এলাকায় পুলিশি নিয়ন্ত্রণ নেই। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকায় রাতের পরে যাতায়াত মুশকিল হয়ে পড়ে গাড়ির দৌরাত্ম্যে। পুলিশের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে আরও সচেতন থাকা প্রয়োজন।’’

এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, দিনের বেলায় সিটি সেন্টারের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নিয়মিত তল্লাশি চালায় পুলিশ কর্মীরা। ফলে কাজের সময়ে গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বাসিন্দা মোক্তার বিশ্বাসের দাবি, ‘‘সিটি সেন্টারের উল্টো দিকে একটু এগিয়ে আমাদের বাড়ি। ফলে কোনও কাজে হেঁটেই যাওয়া যায়। কিন্তু গাড়ির যানজটের কারণে এপার ওপার হওয়া যায় না।’’

সন্ধ্যার পরে এলাকায় চেহারা আরও ভয়ঙ্কর। স্থানীয়দের একাংশ জানাচ্ছে, পুলিশ মোতায়েন করা থাকে না। ফাঁকা রাস্তায় ঝড়ের গতিতে সব ধরণের গাড়ি চলাচল করে। স্থানীয় সিটি সেন্টারের কর্মী শুভঙ্কর দে বলেন, ‘‘আমরা কয়েকজন প্রধাননগর এলাকায় থাকি। অটোয় সিটি সেন্টারে যাই প্রতিদিন। কিন্তু সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরতে ভয় করে। একাধিকবার চোখের সামনে দুর্ঘটনা ঘটতে ও ঘটার পরে দেখেছি। মাঝে মধ্যে নিজেদেরও এমন হতে পারে বলে আতঙ্কে থাকি।’’ এর আগে বছর খানেক আগে এক সন্ধ্যায় মাটিগাড়ার পরিবহণ নগরীর সামনে স্কুটারের পিছন থেকে পড়ে গিয়ে পিছনের একটি ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হন এক মহিলা। মাস কয়েক আগে ট্রাক-বাস মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হয় চালকের। গত বছর শীতের রাতে বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে পিক ভ্যান উল্টে মৃত্যু হয় চালক সহ একাধিক ব্যক্তির। তার পরেও পুলিশের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। শিলিগুড়ি পুলিশের এসিপি পশ্চিম রাজকরণ নায়ার বলেন, ‘‘পুলিশি নিয়ন্ত্রণ না থাকার অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশের পক্ষ থেকে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হচ্ছে না।’’ তবে মানুষকে সচেতন হতে হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

reckless driving matigarah
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy