Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নিরাপত্তা নেই, বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্র

দুই রোগীর মৃত্যুতে বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১২ বেডের শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাসপাতাল এ ভাবে বন্ধ করা যায় না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৭ ০২:২৯
Share: Save:

গত দু’দিনে দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দফায় দফায় বিক্ষোভ এবং এক চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগে নোটিস দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হল হাসপাতাল। বৃহস্পতিবার এ ভাবে নোটিস দিয়ে হঠাৎ শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য শনিবার সকাল থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন।

শুক্রবার সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা এবং ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। এলাকার বাসিন্দা, রাজনৈতিক নেতা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। মৃত দুই রোগীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে আলাদা ভাবে হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে কাছে পেয়ে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানান বাসিন্দারা।

দুই রোগীর মৃত্যুতে বিক্ষোভের জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১২ বেডের শামুকতলা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য দফতর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাসপাতাল এ ভাবে বন্ধ করা যায় না। সাংসদ দশরথ তিরকে নিজেও এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে পারত। পুলিশ পিকেটও রয়েছে। তা সত্ত্বেও হাসপাতাল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।” আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক সভাপতি তৃণমূলের দেবজিৎ সরকার বলেন, ‘‘আমরা চাই চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা এবং সুস্থ স্বাস্থ্য পরিষেবা। হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া কাম্য নয়।’’

এ দিন দীর্ঘ আলোচনার পর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শনিবার থেকে হাসপাতাল খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কেন হাসপাতাল এক দিনের জন্য হলেও বন্ধ করা হল, সে কথা তিনি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, “ডাক্তার, নার্স ও কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় ইন্ডোর পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। শনিবার সকাল থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এ ব্যপারে বাসিন্দাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। গাফিলতিতে দুই রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের তদন্ত হবে।’’

মঙ্গলবার তুরতুরি গ্রামের ১৩ বছরের এক কিশোর শ্বাসকষ্ট নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে সেখান থেকে রেফার করা হয় ওই রোগীকে। জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায় ওই কিশোর। পরের দিন বুধবার আর এক যুবককে সাপে কাটে। তাঁকেও ওই হাসপাতাল থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা সদরে রেফার করার পথে মারা যান। এই দু’টি ঘটনায় দুই ডাক্তারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে বুধ ও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষেরা। বৃহস্পতিবার এক চিকিৎসককে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে নোটিস দিয়ে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়। মারধরের অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE