রীতাদেবীর হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: নারায়ণ দে।
সরস্বতী পুজোর সকালে বিদেশ থেকে মেয়ের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্য এসে পৌঁছল রীতার হাতে। এল প্রতিশ্রুতিও। আগামী দু’বছর প্রতি মাসে পাঁচশো টাকা করে পাবেন তিনি। তাঁর চার বছরের মেয়ে আভার পড়াশোনার জন্য। এর জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়েছে তাঁকে।
সুইৎজারল্যান্ডের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ পোদ্দারের পাঠানো এই আর্থিক সাহায্য এ দিন রীতা বিশ্বাস পাসোয়ানের হাতে তুলে দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি সমর ভট্টাচার্য। তিনি জানান, ইন্টারনেটে আনন্দবাজার পত্রিকায় রীতা ও তাঁর তিন সন্তানের দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে প্রসেনজিৎবাবু চিঠি লিখেছিলেন তাঁকে। তিনি বলেন, ‘‘চিঠিতে প্রসেনজিৎবাবু জানিয়েছেন, রীতার বড় মেয়ে আভার শিক্ষার জন্য আগামী দু’বছর তিনি প্রতি মাসে পাঁচশো টাকা করে পাঠাবেন।’’
বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলেন রীতা। তাই তাঁর সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখেনি তাঁর পরিবার। বিয়ের পরে আলিপুরদুয়ারেই ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন তিনি। কিন্তু পরপর তিন মেয়ে হওয়ায় তাকে ফেলে চলে যায় তাঁর স্বামী। ভাড়া বাকি পড়ায় ঘরও ছেড়ে দিতে হয়। হাঁড় কাঁপানো ঠান্ডায় বছর চারেকের আভা, আড়াই বছরের পূর্ণিমা ও সাত মাসের পূজাকে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাতো রীতা। পথচলতি মানুষজন তাঁদের ওই অবস্থায় দেখে এগিয়ে এলেও বিচ্ছিন্ন সেই সাহায্যে পুরোপুরি বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। আনন্দবাজারে তাঁদের খবর প্রকাশের পরই এগিয়ে আসেন অনেকে। সমরবাবু ও তাঁর সঙ্গীরা হাটখোলায় রীতার অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
ডুয়ার্স উৎসবে গান গাইতে এসে অতিথি শিল্পী কার্তিক দাস বাউলও দু’হাজার টাকা সাহায্য করেছিলেন রীতাকে। এখন একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন রীতা। সেখান থেকেই কোনও মতে অন্ন সংস্থান হয় তাঁদের। পরিবারটির বসবাসের জন্য শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একটি জায়গা দেখা হয়েছে। সবার সাহায্য নিয়ে রীতার জন্য ঘর বানানো হবে বলে সমরবাবু জানান।
অন্ন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা হলেও মেয়েদের ভবিষ্যৎ ভেবে ঘুম ছুটেছিল। প্রসেনজিৎবাবুর সাহায্য আসায় হাটখোলার অস্থায়ী ঘরে বসেই তাদের নিয়ে আবার স্বপ্ন দেখছেন রীতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy