Advertisement
০৫ মে ২০২৪
তদন্তে বেরলো অনিয়মের তথ্য

অনুমতি ছাড়াই বছরখানেক ধরে চলছে শিশুদের হোম

লাইসেন্স ছাড়াই বছরখানেকের বেশি সময় ধরে হোম (ওপেন শেল্টার) চলছে। কোনও শিশু উদ্ধার হলে সরকারি নির্দেশে সেই হোমেই পাঠানো হচ্ছে। হোমের পরিচালনায় রয়েছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এক কর্তার স্ত্রী।

নিজস্ব সংবাদদতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

লাইসেন্স ছাড়াই বছরখানেকের বেশি সময় ধরে হোম (ওপেন শেল্টার) চলছে। কোনও শিশু উদ্ধার হলে সরকারি নির্দেশে সেই হোমেই পাঠানো হচ্ছে। হোমের পরিচালনায় রয়েছেন রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এক কর্তার স্ত্রী। নানা সময়ে ওই প্রাক্তন পুলিশ কর্তাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেই হোম বেআইনি ভাবে চলছে বলে অভিযোগ ওঠায় তদন্তে নেমেছে সিআইডি। জেলা প্রশাসনের তরফে তদন্তে জানা গিয়েছে ওয়েবসাইটে দেওয়া হোমের রেজিস্ট্রেশন নম্বরটির কোনও অস্তিত্ব নেই। অনিয়ম হচ্ছে কি না দেখা যাদের দায়িত্বে ছিল তারাই নিয়ম ভেঙেছে বলে অভিযোগ।

শিশু বিক্রি নিয়ে সিআইডির সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে তদন্ত চালাচ্ছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনও। সেই তদন্তেই উঠে এসেছে অনিয়মের তথ্য।

তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃত শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ একটা সময়ে ওই হোমেই কাজ করেছেন। পরে তিনি শিশু সুরক্ষা আধিকারিক হন। ঘটনাচক্রে, ওই সময়ে তাঁর স্ত্রী সাস্মিতাও জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিকের পদে বসেন। ফলে, ওই দু’জনের নিয়োগের আড়ালে কোনও প্রভাব কাজ করেছে কি না, তা নিয়েও সিআইডির কাছে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন অনেকে। তবে ওই হোমের তরফে তাপস কর্মকার যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘লাইসেন্স নেই এমন নয়। নতুন আইন অনুযায়ী লাইসেন্সের আবেদন করা হয়েছে। শুনেছি লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। অন্য যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন।’’ প্রাথমিক তদন্তে সিআিডির কাছে খবর পৌঁছেছে, এনজেপির ওই হোমে কিছুদিন থাকার পরে প্রশাসনকে না জানিয়ে শিশু নিয়ে যাওয়া হতো ধৃত চন্দনা চক্রবর্তীর জলপাইগুড়ির হোমে। এক-দু’ মাস নয় বছরখানেকেরও বেশি সময় ধরে এমনই চলছে। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি দুই জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিকের মদত থাকায় অনিয়ম ধামাচাপা পড়ে বলে অভিযোগ।

নিউ জলপাইগুড়ির ওই হোমে উদ্ধার হওয়া শিশু কিশোরদের রাখা হয়। হোমটি জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে হওয়ায় সেই জেলার শিশু কল্যাণ সমিতির নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা। যদিও দার্জিলিঙের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সরাসরি জলপাইগুড়ির ওই হোমে শিশুদের পাঠাতেন বলে অভিযোগ। এমনকি এক্তিয়ার না থাকলেও ওই হোমের আবাসিকদের সরাসরি জলপাইগুড়ির আশ্রয় হোমে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন দার্জিলিঙের আধিকারিক। তাঁর স্ত্রী তথা জলপাইগুড়ির শিশু সুরক্ষা আধিকারিক নিজের জেলার হোমে অনিয়ম হলেও চোখ বুজে ছিলেন বলে অভিযোগ। সিআইডি হেফাজতে থাকা মৃণালবাবুর বা তাঁর স্ত্রী সাস্মিতা কেউই কোনও মন্তব্য করেননি। ওই হোমে বর্তমানে ৩৮ জন আবাসিক রয়েছে। তাদের সরানো নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। জেলাশাসক রচনা ভগৎ জানিয়েছেন, হোমের নথিপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Child Homes Illegal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE