Advertisement
E-Paper

গান-নাটকেই প্রচার

কারও হাতিয়ার ভাওয়াইয়া গান। কারও আবার পথনাটিকা। অনেকে আবার ভরসা রাখছেন লোকনৃত্যে। ভোটারদের মন জয়ে ‘সাংস্কৃতিক দল’ গড়ে এবার কোচবিহারে প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি।

অরিন্দম সাহা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৫

কারও হাতিয়ার ভাওয়াইয়া গান। কারও আবার পথনাটিকা। অনেকে আবার ভরসা রাখছেন লোকনৃত্যে। ভোটারদের মন জয়ে ‘সাংস্কৃতিক দল’ গড়ে এবার কোচবিহারে প্রচারের প্রস্তুতি শুরু করছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি।

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় ভাওয়াইয়া শিল্পীদের দিয়ে বিভিন্ন সভায় অনুষ্ঠান করার ব্যাপারে জোর দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যে জেলা জুড়ে আড়াইশো জন শিল্পীকে নিয়ে সাংস্কৃতিক দল তৈরি করা হয়েছে। তাতে দু’শো জন ভাওয়াইয়া শিল্পী ছাড়াও রয়েছেন লোকনৃত্য শিল্পীরা। ইতিমধ্যে ঘরোয়া কর্মিসভাগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে ওই শিল্পীরা সামিল হচ্ছেন। জোরকদমে সভা, মিছিল ও অন্য প্রচার কর্মসূচি শুরু হলে ওই শিল্পীদের দিয়ে অনুষ্ঠান একরকম বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, “ভাওয়াইয়ার সঙ্গে কোচবিহারের বাসিন্দাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। জেলা জুড়েই বিভিন্ন প্রচার কর্মসূচিতে তাই তাঁরা ওই শিল্পীদের অনুষ্ঠান রাখছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রচার তুঙ্গে উঠলে প্রত্যেক প্রার্থীকে একাধিক সভায় বক্তব্য রাখতে হবে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে। একসঙ্গে কেউ একাধিক জায়গায় যেতে পারবেন না। তাই ওই সময় ভাওয়াইয়ার অনুষ্ঠান করে সেই শূন্যতা পূরণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নৃত্যশিল্পীরাও থাকছেন।’’

তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথবাবুর উদ্যোগে কয়েক বছর ধরে দুই বাংলার শিল্পীদের এনে ভাওয়াইয়া উৎসব করা হয় নায়েব আলির স্মরণে। সেই সুবাদে শিল্পীদের একাংশের সঙ্গে তৃণমূলের নেতাদের সখ্যতা গড়ে উঠেছে। তাদের মধ্যে প্রথম সারির কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে প্রচার সাংস্কৃতিক দল গড়া হয়েছে। ওই উৎসবের অন্যতম কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ ভাওয়াইয়া শিল্পীরা অনেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগাযোগ করেছেন। রাজ্য তথা জেলার নানা উন্নয়ন মূলক কাজ নিয়ে অনেকে গান লিখছেন। বাম জমানার অনুন্নয়ন, বঞ্চনার কথাও থাকবে। কুষাণ, বৈরাতির মত নৃত্যানুষ্ঠান হবে।”

বিজেপি’র কোচবিহার জেলা নেতারা অবশ্য ভাওয়াইয়ার তুলনায় বেশি ভরসা রাখছেন পথনাটিকায়। দল সূত্রের খবর, চারজন শিল্পী অভিনীত ‘সোনার বাংলারে’ পথনাটিকায় একসঙ্গে বাম ও তৃণমূল জমানার ব্যর্থতা, অনুন্নয়নের নানা অভিযোগ কৌশলে তুলে ধরা হবে। মাথাভাঙার একটি গোষ্ঠী ওই নাটক মঞ্চস্থ করার দায়িত্বে থাকবে। প্রাথমিকভাবে দৈনিক অন্তত ৫-৬টি এলাকায় ওই পথনাটিকা মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তথা প্রাক্তন কোচবিহার জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মন বলেন, ‘‘শুধু জনসভা করে বক্তব্য শোনার চেয়ে অনেক মানুষ আছেন যারা পথনাটিকার অপেক্ষাকৃত মনোযোগ দিয়ে উপভোগ করেন। দীর্ঘসময় অপেক্ষার চেয়ে ওই বাসিন্দাদের কাছে তাই পথনাটিকার মাধ্যমেই নিজেদের অবস্থান, বক্তব্য ধরতে চাইছি।’’ বিজেপি সূত্রের খবর, ভাওয়াইয়া সংগীত পরিবেশনেও একঝাঁক শিল্পী নিয়ে সাংস্কৃতিক দল তৈরি রাখছেন তাঁরা। প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই প্রচার হবে।

বসে নেই বামেরাও। ফ্রন্ট সূত্রের খবর, বাম জমানা থেকেই বামেদের সাংস্কৃতিক গণসংগঠন যথেষ্ট মজবুত। আগেও বিভিন্ন নির্বাচনে ওই দলের সদস্যরা সময়োপযোগী সংগীত পরিবেশন করে নির্বাচন প্রচার মঞ্চ মাতিয়েছেন। এবারেও ওই শিল্পীদের তৈরি রাখা হচ্ছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলি বলেন, “ভাওয়াইয়ার অনুষ্ঠান বিভিন্ন সভায় নতুন নয়। আগেও আমাদের শিল্পীরা প্রচারের কর্মসূচিতে ওই সংগীত পরিবেশন করেছেন। এবারেও ওই শিল্পীরা তৈরি রয়েছেন।” কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী অবশ্য বলেন, “ রাজীব গাঁধী, ইন্দিরা গাঁধীকে নিয়ে লেখা বিভিন্ন গান দলের কর্মসূচিতে আমন্ত্রিত শিল্পীরা পরিবেশন করেন। প্রচার শুরু হলে এসব ভাবা হবে।”

coochbihar election campaign
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy