Advertisement
E-Paper

পড়শিকে বাঁচাতে ঝাঁপ ভরা নদীতে

রবিবার রাত ১০টা নাগাদ ধূপগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বামনি নদীর ঘটনা। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বামনি নদীর পাড়ে একটি ছোট এক চালা টিনের ঘরে থাকেন ৮৫ বছরের মা রামপেয়ারি চৌধুরী ও পেশায় শ্রমিক ৩৫ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে বিরজু চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৬
রক্ষাকর্তা: ওই দু’জনের সঙ্গে মহেশ শাহ (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র

রক্ষাকর্তা: ওই দু’জনের সঙ্গে মহেশ শাহ (মাঝে)। নিজস্ব চিত্র

রাগের বশে বর্ষার ভরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়া মা ও ছেলেকে বাঁচালেন এক শ্রমিক।

রবিবার রাত ১০টা নাগাদ ধূপগুড়ির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বামনি নদীর ঘটনা। শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে বামনি নদীর পাড়ে একটি ছোট এক চালা টিনের ঘরে থাকেন ৮৫ বছরের মা রামপেয়ারি চৌধুরী ও পেশায় শ্রমিক ৩৫ বছরের প্রতিবন্ধী ছেলে বিরজু চৌধুরী। রবিবার রাতে খাওয়ার নিয়ে মা আর ছেলের মধ্যে বচসা শুরু হলে মা হাতের কাছে একটি লাঠি পেয়ে তা দিয়ে ছেলের পিঠে কয়েক ঘা বসান। ছেলেও মা’কে গালিগালাজ দিতে থাকেন। মা তা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে ঘর থেকে বেরিয়ে লাগোয়া বামনি নদীতে ঝাঁপ দেন। প্রতিবন্ধী ছেলেও মা’কে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন। কিন্তু, তিনি একে দুই পা ভাল ভাবে নাড়াতে পারেন না, তার উপরে সাঁতারও জানেন না।

মা-ছেলে একে অপরকে জড়িয়ে হাবুডুবু খেতে থাকেন দু’জনে। বর্ষায় নদীর জল বেশি। স্রোতও ছিল। নদী থেকে তাঁরা দু’জনে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার শুরু করলে প্রতিবেশী কয়েকজন শুনতে পান। তাঁরাও চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে, ধূপগুড়ি মাছ বাজারের শ্রমিক মহেশ শা নামে এক ব্যক্তি সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন। অন্ধকার নদীতে তিনিও মা-ছেলেকে নিয়ে হাবুডুবু খেতে থাকেন। ততক্ষণে পাড়া থেকে সবাই নদীর পাড়ে ভিড় করে। তিন জনে হাবুডুবু খেতে খেতে নদীর স্রোতে প্রায় দু’শো মিটার দূরে চলা যান।

তবে তারপরেও মা-ছেলেকে নিয়ে মহেশবাবু অনেক কষ্টে পাড়ে ফেরেন। পরে প্রতিবেশীরা তিন জনকেই ডাঙায় তুলে আনেন। কিন্তু এই ঘটনায় কাউকে হাসপাতালে যেতে হয়নি। প্রতিবেশিরাই তাঁদের সুস্থ করে তোলেন।

ত্রাণকর্তা মহেশবাবু বলেন, “যখন দেখলাম মা-ছেলে জলে হাবুডুবু খাচ্ছে, তখন অন্য কোনও চিন্তা না করে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁদের বাঁচানোর কথা আগে ভাবলাম। আমি একটু সাঁতার জানি। যাই হোক, পাড়ার মা-ছেলেকে বাঁচিয়ে মানুষের কর্তব্য করেছি। এটাই সবচেয়ে তৃপ্তির।”

জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নুরজাহান বেগম বলেন, “বৃদ্ধা মা-র এ ভাবে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়াটা দুর্ভাগ্যজনক। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মহেশবাবুকে পুরস্কার দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’’

Rain Dhupguri ধূপগুড়ি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy