বছরভর রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষিনিবাসের আকর্ষণ বজায় রাখতে একাধিক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বুধবার সকালে পক্ষিনিবাস পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বন দফতর ও প্রশাসনের কর্তারা। পক্ষিনিবাসের সংরক্ষিত এলাকা ঘুরে দেখার পর নজরমিনারে উঠে তিনি পরিযায়ী পাখিদেরও দেখেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘পক্ষিনিবাস উত্তরবঙ্গের গর্ব। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর পক্ষিনিবাসকে ঘিরে একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতে কিছুটা সময় লাগবে। আপাতত, পক্ষিনিবাসকে ঘিরে সারা বছর পর্যটকদের আকর্ষণ বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ মন্ত্রী জানান, বন দফতরের অনুমোদন নিয়ে এখানে প্রজাপতি পার্ক, হরিণ উদ্যান ও কচ্ছপ পার্ক তৈরি হবে। কুলিক নদীর ধারে পর্যটকদের জন্য একাধিক বেঞ্চ, তাঁদের নিরাপত্তার স্বার্থে পক্ষিনিবাসে সীমানা পাঁচিল তৈরি ও পর্যটকদের জন্য পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা হবে।
পরিযায়ীরা সাধারণতঃ কুলিক নদীর মাছ, ব্যাঙ, সাপ, শ্যাওলা সহ বিভিন্ন ধরণের জলজ পোকামাকড় খেয়ে বেঁচে থাকে। ভবিষ্যতে কখনও নদীতে জলের অভাব হলে পরিযায়ীদের খাদ্য সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে এ দিন মন্ত্রী ডিএফও দীপর্ণ দত্তকে পক্ষিনিবাস চত্বরে বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রতি বছর মে মাস নাগাদ নাইটহেরন, ওপেন বিলস্টক, করমোন্যান্ট, ইগ্রেট সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিয়াযী পাখিরা পক্ষিনিবাসে আসে। প্রজননের পর ডিসেম্বর মাস নাগাদ তারা ফিরে যায়। সেইকারণে, প্রতি বছর জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পরিযায়ীদের দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পর্যটকেরা পক্ষিনিবাসে ভিড় জমালেও জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পর্যটকদের দেখা মেলে না।
রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দীপর্ণ দত্তের দাবি, পক্ষিনিবাসে শতাধিক প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে! তাই কোনও একটি এলাকা নির্দিষ্ট করে বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগিয়ে বাগান তৈরি করে প্রজাপতি পার্ক গড়ে তোলা সম্ভব। কুলিক খালের একটি অংশে কচ্ছপ ছেড়ে কচ্ছপ পার্ক গড়ে তোলা অসম্ভব কিছু নয়। তবে বন দফতরের অনুমতি ছাড়া হরিণ উদ্যান গড়ে তোলা সম্ভব নয়। বন দফতরের তরফে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে একটি প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।
রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ীর দাবি, পক্ষিনিবাসকে কেন্দ্র করে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠলে পর্যটকদের ভিড়ে রায়গঞ্জের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। পক্ষিনিবাস পরিদর্শনের পর রবীন্দ্রনাথবাবু উত্তরবঙ্গ দফতরের আর্থিক বরাদ্দে নির্মিত রায়গঞ্জের রবীন্দ্রভবন ঘুরে দেখেন। এরপর ইটাহার ব্লকে একাধিক সেতু নির্মাণের কাজও খতিয়ে দেখেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy