Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

হোম-স্টে করে দিশা দেখাচ্ছেন দুর্গা-হীরামায়া

পাহাড়, নদী, জঙ্গল নিয়ে প্রকৃতির মনোরম হাতছানি। জঙ্গলে হরিণ, হাতি, ময়ূর থেকে হরেক পাখির সমাহার। রয়েছে বাঘ দেখার সম্ভবনাও। আর এ সব কিছুর সঙ্গেই রয়েছে বাড়ির পরিবেশে রাত কাটানোর সুযোগ। দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে যা হোম স্টে ট্যুরিজম নামে পরিচিত।

এই বাড়িগুলিতেই তৈরি হচ্ছে হোম-স্টে। — নিজস্ব চিত্র

এই বাড়িগুলিতেই তৈরি হচ্ছে হোম-স্টে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

পাহাড়, নদী, জঙ্গল নিয়ে প্রকৃতির মনোরম হাতছানি। জঙ্গলে হরিণ, হাতি, ময়ূর থেকে হরেক পাখির সমাহার। রয়েছে বাঘ দেখার সম্ভবনাও। আর এ সব কিছুর সঙ্গেই রয়েছে বাড়ির পরিবেশে রাত কাটানোর সুযোগ। দেশ বিদেশের পর্যটকদের কাছে যা হোম স্টে ট্যুরিজম নামে পরিচিত।

ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব বিভাগের জঙ্গল ঘেরা ময়নাবাড়ি, কাঞ্জালিবস্তির দুর্গা রাউথ ছেত্রী, সানে সুব্বা ও হীরামায়া মঙ্গরের মতো মহিলারা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্য নিয়ে শুরু করেছেন হোম স্টে ট্যুরিজম। কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের নানা জায়গা থেকে আসতে শুরু করেছেন পর্যটকরা। রাজ্য সরকার যখন হোম স্টে ট্যুরিজমকে গুরুত্ব দিচ্ছে তখন এই উদ্যোগে রীতিমতো সাড়া পড়েছে। পরিবর্তন এসেছে ওই মহিলাদের পরিবারের আর্থিক সঙ্গতিতেও। হোম স্টে ট্যুরিজমের হাত ধরে স্বচ্ছলতার মুখ দেখছে পরিবারগুলি। দুর্গা রাউথ ছেত্রী জানান, তাঁদের সামান্য কয়েক বিঘা জমিতে হাতির হামলার আশঙ্কায় চাষ করা কঠিন। তাঁর স্বামী রাজকুমার ছেত্রী সংসার চালাতে ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক শুভাশিস তরফদার ও রনজিৎকুমার বৈশ্যের কথায়, তাঁদের সাহায্যে তিনি হোম স্টে ট্যুরিজম শুরু করেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে বলেছি ওকে আর ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে হবে। জুলাই মাসে কাজ ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসবেন।’’ তবে কিছু সমস্যা রয়েছে, যা সরকারি সাহায্য পেলে মিটে যাবে বলে জানান দুর্গাদেবী। একই অভিজ্ঞতা হীরামায়া মঙ্গরেরও। তাঁর স্বামীও দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করেন। হোম স্টে ট্যুরিজম চালু করে তিনিও স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন। শুধু হীরামায়া ও দুর্গাদেবী নন ময়নাবাড়ি ও কাঞ্জালিবস্তির অন্তত ১০টি পরিবার হোম স্টে ট্যুরিজম চালু করে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। এতে আগ্রহ পাচ্ছেন বাকিরাও।

রেওয়াজের সম্পাদক শুভাশিসবাবুর কথায় বক্সার মনোরম বনাঞ্চলের কাছেই ভুটানঘাট, ফাঁসখোয়া, জয়ন্তী, রায়ডাকের মতো আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। ময়নাবাড়িতে বাড়ির পরিবেশে থেকে ওই পর্যটন কেন্দ্রগুলি ঘোরার সুযোগ মিলছে। এ ছাড়া এখানকার কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গেও পরিচিত হতে পারছেন পর্যটকরা। এই কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে এলাকার আর্থ সামাজিক দিকের ব্যাপক উন্নতি সম্ভব হবে বলে জানান শুভাশিসবাবু। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা বাসিন্দাদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করছি। সরকারি ভাবে সাহায্য পেলে এ কাজ আরও ভাল ভাবে করা সম্ভব হবে।’’

ময়নাবাড়ির মহিলাদের এমন উদ্যোগে খুশি এলাকার বিধায়ক তথা আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী জেমস কুজুর। তিনি বলেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ। রাজ্য সরকার হোম স্টে ট্যুরিজম চালুর উপর গুরুত্ব দিয়েছে। শীঘ্রই ওঁদের কাজ দেখতে যাব।’’ আলিপুরদুয়ারের সাংসদ দশরথ তিরকেও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

homestay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE