Advertisement
E-Paper

সেতু নেই, ঝুঁকির পারাপারে উদ্বেগ

বর্ষার মরসুম শুরু হতেই কোচবিহারের সেতুহীন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নৌকোয় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জেলার ১২টি ব্লকে গড়ে ৩টি করে বড় ঘাট রয়েছে। সেখানে সেতু না থাকায় নৌকোয় যাতায়াত করতে বাধ্য হন এলাকার বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০১:২৯
সাইকেল-মোটরবাইক নিয়েই চলে নৌকায় পারাপার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

সাইকেল-মোটরবাইক নিয়েই চলে নৌকায় পারাপার। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

বর্ষার মরসুম শুরু হতেই কোচবিহারের সেতুহীন এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নৌকোয় ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, জেলার ১২টি ব্লকে গড়ে ৩টি করে বড় ঘাট রয়েছে। সেখানে সেতু না থাকায় নৌকোয় যাতায়াত করতে বাধ্য হন এলাকার বাসিন্দারা। ঘুরপথে দূরত্ব বেশি হয় বলে ভরা বর্ষাতেও ওই সব ঘাট থেকে নৌকোয় যাতায়াত চলে ঝুঁকি নিয়ে। এ বার কালনার নৌকাডুবির ঘটনার জেরে ওই যাতায়াত নিয়ে তাদের উদ্বেগ বেড়েছে।

প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, বর্ষায় নৌকো পারাপার নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের সচেতন করার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে ডাকা বৈঠকে সম্প্রতি ওই ব্যাপারে বিশদে আলোচনা হয়। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “জেলার প্রতিটি খেয়াঘাটে বর্ষায় নৌকো পারাপার নিয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নদীতে জল বাড়লে তা এলাকায় মাইকে প্রচার করে তা বাসিন্দাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। পঞ্চায়েতগুলির সাহায্য নিয়ে ঘাটে নজরদারিও চালানো হবে।”

গত কয়েক দিন ধরেই কোচবিহারে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী ১ জুন থেকে খাতায় কলমে ‘বর্ষার মরসুম’ও শুরু হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পাশাপাশি ব্লক, মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ব্লক প্রশাসন ও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সহযোগিতায় নৌকোগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নৌকোর ত্রুটিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা এড়াতেই ওই ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অতিরিক্ত যাত্রী বহন বন্ধে নজরদারি, অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের কর্মীদের সঙ্গে পারাপারের কাজে যুক্ত কর্মীদের যোগাযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনাও হয়েছে।

বাসিন্দারা অবশ্য এ সবের পরেও পুরোপুরি উদ্বেগমুক্ত হতে পারছেন না। তাঁদের অভিযোগ, কোচবিহার শহরের তোর্সার ফাঁসিরঘাট হয়ে টাপুরহাটের সঙ্গে যোগাযোগে কিছু দিন আগেও বাঁশের সাঁকো ছিল মূল ভরসা। আচমকা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় সাঁকো ভেসে গিয়েছে। ফলে নৌকোতেই পারাপার চলছে। দিনহাটার সাগরদিঘি ঘাটে সেতু তৈরির কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় সেখানেও ভরসা নৌকো। দিনহাটা-সিতাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগে তাই নৌকোয় যাত্রী পারাপার চলছে এখনও।

তুফানগঞ্জের বালাভূত-চরবালাভূতের সঙ্গে যোগাযোগে একই ভাবে কালজানি নদী, অন্দরান ফুলবাড়ির নয়নেশ্বরী এলাকার সঙ্গে তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার যোগাযোগেও রায়ডাক নদী ঝুঁকি নিয়ে ফি বছর বর্ষায় পারাপার করতে হয়। দিনহাটার গীতালদহের দরিবস ও জারিধরলা দু’টি এলাকাও সিঙিমারি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন। বক্সিরহাটের রামপুর-শালডাঙায় রায়ডাক, মেখলিগঞ্জের বেতালিঘাটে তিস্তা পারাপার করে হলদিবাড়ি এলাকায় যাতায়াত হয়। মাথাভাঙা, ঘোকসাডাঙাতেও বেশ কিছু এলাকায় মানসাই নদী পারাপার করেই যাতায়াত করেন বাসিন্দারা। কিছু ঘাটে যাত্রীদের সঙ্গে মোটরবাইকের মতো যানবাহনের পাশাপাশি গবাদি পশুও এক সঙ্গে পারাপার করানো হচ্ছে। তেমন নজরদারিও নেই।

নদী বিচ্ছিন্ন এলাকার দুই বাসিন্দা রাখাল রায়, বিমল সরকার বলেন, “অতিরিক্ত যাত্রী তোলা নিয়ে নজরদারি দূরঅস্ত, কোথাও নৌকোযাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেটই নেই। প্রাণ হাতে যাতায়াত করাই তাই আমাদের বিধিলিপি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’

Bridge Boat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy