Advertisement
০২ মে ২০২৪

তিন দশকেও হয়নি স্টেডিয়াম ক্ষোভ দিনহাটা মহকুমা জুড়েই

প্রতিশ্রুতিই সার। বছরের বছরের পর কেটে গেলেও হয়নি স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের জন্য চিহ্নিত মাঠের অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হয়েছে। মাঠের চারপাশের পাঁচিলের ইঁট খসে পড়েছে।

স্টেডিয়াম হয়নি। মাঠের অবস্থা এমনই।—নিজস্ব চিত্র।

স্টেডিয়াম হয়নি। মাঠের অবস্থা এমনই।—নিজস্ব চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৬ ০২:৪৩
Share: Save:

প্রতিশ্রুতিই সার। বছরের বছরের পর কেটে গেলেও হয়নি স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের জন্য চিহ্নিত মাঠের অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হয়েছে। মাঠের চারপাশের পাঁচিলের ইঁট খসে পড়েছে। কাজ না হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। হতাশ জেলায় ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত সকলেই। স্টেডিয়াম তৈরি নিয়ে টালবাহানার জেরে প্রশ্নও তুলেছেন তাঁরা।

এবার দিনহাটার পুটিমারির ওই স্টেডিয়াম তৈরির আশ্বাস দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে একপ্রস্থ আলোচনা করেছেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শীঘ্রই শুরু করা হবে।’’ দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে একটি প্রস্তাব জমা পড়েছে, যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিভুরঞ্জন সাহা বলেন, ‘‘খেলাধূলার দিক থেকে দিনহাটা বরাবার এগিয়ে। তিন দশক আগে স্টেডিয়াম তৈরির জন্য একটি জমি কেনা হয়। কারও সাহায্য না পাওয়ায় এখনও স্টেডিয়াম তৈরি করা যায়নি।”

দিনহাটায় ফুটবল, ক্রিকেটের পাশাপাশি খো খো, কবাডি, ভলিবল ও অ্যাথলেটিক্সের প্রতি ছেলেমেয়েদের ঝোঁক রয়েছে। ওই অঞ্চলে প্রায়শই বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন হয় যেখানে যোগ দেন প্রবীণরাও। রাজ্যস্তরের বহু প্রতিযোগিতা থেকেও পুরষ্কার নিয়ে এসেছেন দিনহাটার একাধিক খেলোয়াড়। কিন্তু এই এলাকায় খেলার মাঠের অভাব বরাবরের। একমাত্র সংহতি ময়দানের উপরেই নির্ভরশীল গোটা এলাকার মানুষ। খেলা ছাড়াও মেলা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জনসভা হয় সেই মাঠে। এ কারণে মাঠে খুঁটি পোতার জন্য মাঠ নষ্ট হয়ে যায় বলে খেলোয়াড়দের অভিযোগ।

এই সমস্যা মেটানোর জন্য ১৯৮৮ সালে দিনহাটা মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পুটিমারিতে ছ’একর জমি কিনে স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। মাঠে মাটি ফেলে চারদিক পাঁচিল দিয়ে ঘেরার জন্য উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। সেসময় ওই স্টেডিয়াম তৈরির জন্য রাজ্যসভার এক সাংসদ পাঁচ লক্ষ টাকা দেন। তা দিয়ে পাঁচিলের কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু পরে আর কাজ এগোয়নি। ধীরে ধীরে পাঁচিল নষ্ট হয়ে গরু চড়ানোর মাঠ হিসেবেই পরিচিত পেয়েছে ওই মাঠ।

মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিভুরঞ্জন সাহার আক্ষেপ, “খেলাধূলার মর্ম সবাই বোঝেন না। তাই জমি কিনেও স্টেডিয়াম তৈরি করতে পারিনি আমরা।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর আশ্বাসে ফের স্টেডিয়াম হওয়ার আশা দেখছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিনহাটার সংহতি ময়দানে আলাদা ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেই। দর্শকদের দাঁড়িয়ে খেলা দেখতে হয়। ওই মাঠে যতটুকু জায়গা আছে তাতে সেখানে গ্যালারির পরিকাঠামো তৈরি সম্ভব নয়। ফলে পুটিমারিতে থেমে থাকা স্টেডিয়ামের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান বাসিন্দারা। দিনহাটার প্রবীণ খেলোয়াড় চন্দন সেনগুপ্ত বলেন, “স্টেডিয়াম দ্রুত প্রয়োজন।’’ স্টেডিয়াম তৈরি হলে দিনহাটা খেলাধূলায় আরও এগিয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stadium Construction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE