Advertisement
০২ মে ২০২৪

পাম্পেও এ বার হানা দেবে পুলিশ

হেলমেট নিয়ে কড়াকড়ির জেরে এ বার পাম্পগুলিতেও নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিল পুলিশ। কোচবিহারে পুলিশ পেট্রোল পাম্পে হঠাৎ হানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসলামপুরে পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে আরোহীদের সচেতন করতে বলেছে পুলিশ।

হেলমেটহীন আরোহীদের ধরে জরিমানা আদায় করছে পুলিশ। শুক্রবার কোচবিহারে। — নিজস্ব চিত্র

হেলমেটহীন আরোহীদের ধরে জরিমানা আদায় করছে পুলিশ। শুক্রবার কোচবিহারে। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার ও ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৬ ০২:০৩
Share: Save:

হেলমেট নিয়ে কড়াকড়ির জেরে এ বার পাম্পগুলিতেও নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিল পুলিশ। কোচবিহারে পুলিশ পেট্রোল পাম্পে হঠাৎ হানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইসলামপুরে পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে আরোহীদের সচেতন করতে বলেছে পুলিশ।

হেলমেটহীন আরোহীদের ধরতে এর আগে সাধারণত বিভিন্ন রাস্তায় অভিযান চালানো হত। সেক্ষেত্রে মোটরবাইকের কাগজপত্র খতিয়ে দেখার সঙ্গে হেলমেট রয়েছে কি না তা দেখা হত। রাজ্য সরকার হেলমেট ছাড়া বাইক চালানোর প্রবণতা বন্ধে তৎপর হওয়ায় এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তারপরেও কোচবিহারের বিভিন্ন পাম্পে হেলমেট না নিয়েও মোটরবাইক চালকদের অনেকে পেট্রোল নিতে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। পাম্প মালিক সংগঠনের কর্তারা জানিয়েছেন, সোমবার থেকে জেলার কোনও পাম্পে একজনকেও হেলমেট না থাকলে পেট্রোল দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পুলিশ অবশ্য এ ব্যাপারে সামান্য সুযোগ দিতেও রাজি নয়। তাই এ বার পাম্পগুলিতে আচমকা অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “পেট্রোল পাম্পগুলিতেও ওই ব্যাপারে আচমকা অভিযান চালানো হবে। আইন ভাঙা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পুলিশের ওই উদ্যোগে অস্বস্তিতে পড়েছেন পাম্প মালিকদের অনেকেই। তাদের একাংশের বক্তব্য, সাংগঠনিকভাবে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কার্যকর করার ব্যাপারে গ্রাহকদের সচেতন করতে কিছুটা সময় দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। সচেতনতা বাড়াতে প্রচারের পরিকল্পনাও হয়। সেইসূত্রেই জেলার পাম্পগুলিতে ব্যানার, হোর্ডিং লাগানো হচ্ছে। তবে প্রকাশ্যে পাম্প মালিক সংগঠনের কর্তারা এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি নন। নর্থ বেঙ্গল পেট্রোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোচবিহারের এক কর্তা দীপঙ্কর বণিক বলেন, “ সোমবার থেকে জেলার ৪৫টি পাম্পের কোথাও হেলমেট ছাড়া কোন চালককেই পেট্রোল না দিতে সাংগঠনিকভাবে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। মাঝের সময়টাতে পাম্পগুলিতে পুলিশ অভিযান চালাবে কিনা সেটা তাদের ব্যাপার।’’ তিনি জানান, কিছু পাম্প হেলমেট বিক্রির কথাও ভাবছে। জরুরি কারণ দেখালে হেলমেট কিনে তবে তেল নেওয়ার সুযোগ দেবে তারা।

উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতে লাগাতার অভিযান চললেও পুলিশের সক্রিয় নজরদারি না থাকায় ইসলামপুরে হেলমেট ছাড়াই দেদার চলাচল করছেন বাইক আরোহীরা। শহরের প্রায় ৮০ শতাংশ বাইক আরোহীই যে হেলমেট ব্যবহার করে না তা স্বীকার করে নিয়েছে পুলিশও। এই ছবিটা পাল্টে দিতেই এ বার উদ্যোগী হল পুলিশ। নো হেলমেট নো পেট্রোল এই স্লোগান সামনে রেখে শুক্রবার বিকেলে পাম্প মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন পুলিশ কর্তারা। হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দেওয়া যাবে না বলে নির্দেশ জারি করা হয়। ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ পেট্রলপাম্পগুলির হাতে ফেস্টুনও তুলে দেওয়া হয়। আজ, শনিবার থেকে সমস্ত পাম্পে সেই ফেস্টুন লাগানো হবে বলে পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পুলিশ কর্মীদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করা হবে বলে ট্রাফিক পুলিসের পক্ষে জানানো হয়েছে।

পুলিশের একাংশের অভিযোগ, ইসলামপুরের বাইক আরোহীদের মাথায় হেলমেট তো দূরের কথা, তাঁদের কাছে গাড়ির ন্যূনতম কাগজ পর্যন্ত থাকে না। তাঁদের ধরা হলে অনেক সময়েই ছোটবড় নেতাদের ফোন এসে যায়। বাধ্য হয়েই ফাইন না করে ছেড়ে দিতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

helmet no helmet no petrol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE