Advertisement
০৫ মে ২০২৪

এ বার শুরু অন্য ডার্বির প্রস্তুতি

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ডার্বির উত্তেজনা কমার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার জোর কদমে শুরু হয়ে গেল মাঝ এপ্রিলের আরেক ডার্বির উত্তাপ। রবিবার দেরি না হলে সাত সকাল থেকেই ‘মাঠে’ নেমে পড়লেন প্রার্থীরা।

(বাঁ দিকে) কুলো নিয়ে প্রচার বাম প্রার্থী দিলীপ সিংহের সমর্থনে। (ডান দিকে) প্রচারে বেরিয়ে কালীমন্দিরে গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

(বাঁ দিকে) কুলো নিয়ে প্রচার বাম প্রার্থী দিলীপ সিংহের সমর্থনে। (ডান দিকে) প্রচারে বেরিয়ে কালীমন্দিরে গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:০৫
Share: Save:

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে ডার্বির উত্তেজনা কমার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার জোর কদমে শুরু হয়ে গেল মাঝ এপ্রিলের আরেক ডার্বির উত্তাপ। রবিবার দেরি না হলে সাত সকাল থেকেই ‘মাঠে’ নেমে পড়লেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে, কংগ্রেস-সিপিএম জোট কর্মীরা শুরু করলেন জোর প্রচার। শিলিগুড়ির বাম প্রার্থী অশোক ভট্টচার্যকে সামনে রেখে সাত সকাল থেকে পাড়ায় পাড়ায় কোথাও সাইকেল র‌্যালি, লোকশিল্পীদের মিছিল, একাধিক পদযাত্রা তো হলই, বাদ থাকল না জোটের কর্মিসভাও। বিভিন্ন পাড়ায় উপস্থিত থাকলেন কংগ্রেসের কাউন্সিলর থেকে শুরু করে জেলার নেতারাও। একই ভাবে, মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস প্রার্থী শঙ্কর মালাকারও সকাল থেকে নেমে পড়েন জন সংযোগে। সিপিএমের নেতাদের নিয়ে করে বিভিন্ন এলাকায় পদযাত্রাও। মাটিগাড়া, নকশালবাড়ির বিভিন্ন চা বাগানে প্রার্থীকে নিয়ে ঘুরে বেড়ালেন জোট কর্মীরা। তবে শনিবারের খেলার মাঠের আমেজ যে এখনও কাটেনি তা কর্মীদের কথাতেই স্পষ্ট।

উৎসাহী কংগ্রেস, সিপিএমের কর্মীদের কথায়, ‘‘শনিবার সন্ধ্যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে আবির খেলা হয়েছে। আরেকটা আবির খেলা শুধু সময়ের অপেক্ষা। ১৭ এপ্রিল অবধি এখন ফরওয়ার্ড থেকে মিডফিল্ড, ডিফেন্স সব জোরদার করে মাঠের দখল রাখতে হবে। কোনও ভাবেই বিপক্ষে গোল বক্সে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। আবার শিলিগুড়ি কেন্দ্রে বিপক্ষের ফরওয়ার্ড যখন ভাইচুং ভুটিয়া তখন বাড়তি সতর্কতা তো থাকবেই।’’

সতর্কতা যে রয়েছে, তা টের পাওয়া গেল সকাল থেকেই। যেমন পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। বাম প্রার্থী অশোকবাবু সকালে স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টু ঘোষ, জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কুন্তল গোস্বামী, সিপিএমে জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারকে নিয়ে ঢুকে পড়েন ওই ওয়ার্ডে। বিদ্যাসাগর রোড, ঘোষপাড়া, বিদ্যাসাগরপল্লি, বর্ধমান রোড-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচার সারেন। তবে তার আধঘণ্টার মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যান তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং। তিনি জেলার নেতা দীপক শীল, মদন ভট্টাচার্য-সহ স্থানী নেতা-কর্মীদের নিয়ে একই এলাকাগুলিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারে নামেন। তার আগে অবশ্য ভাইচুং ঘুরে এসেছেন অশোকবাবু পাড়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডে।

মাঠের ডিফেন্স ঠিক রাখতে তাই আবার সন্ধ্যার মধ্যে এলাকায় পৌঁছে যান অশোকবাবু। ৪ নম্বর ওয়ার্ড়ে ঝংকার মোড়ের একটি বড় ভবনে নির্বাচনী কার্যালয়ে জোটের কর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করে। তার পরে সোজা গিয়ে ঢোকেন ৬ নম্বর ওয়ার্ড়ে। তিনি এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও। সেখানে এলাকার যুবকদের নিয়ে সভা করেন। এর আগে গত কযেকদিন, কংগ্রেস কাউন্সিলর সুজয় ঘটক, সীমা সাহা বা প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের ওয়ার্ডে সভা, বৈঠক, মিছিলও করে ফেলেছেন জোট কর্মীরা। তার আগে সকালে ২৪, ৫, ৩০, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড এবং বিকালের পর থেকে ২৯, ২২, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে একই কায়দায় প্রচার করেছেন অশোকবাবু।

কোথাও সিপিএমের লাল পতাকা থেকেছে কোথাও তাতে জুড়েছে কংগ্রেসের তিরাঙ্গা। অশোকবাবুর কথায়, ‘‘আজ, সোমবার থেকে ভোট পর্ব রাজ্যে শুরু হয়ে গেল। মানুযের জোট এবার রাজ্যে। তৃণমূলকে হঠিয়ে রাজ্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই। জোটবদ্ধভাবে আমাদের প্রচার চলছে। ভোট যত এগিয়ে আসবে, তা ততই বাড়বে। সবর্ত্র মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে সাড়া দিচ্ছেন। নিজেরাই মিছিলে
ঢুকে যাচ্ছেন।’’ পিছিয়ে থাকেননি মহকুমায় আরেক জোট প্রার্থী কংগ্রেসের শঙ্করবাবু। রাত অবধি বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় তিনি সিপিএম কর্মীদের নিয়েই প্রচার করেছেন। সকালে মাটিগাড়ায় শিশুডাঙি, কলাইবকতরি পদযাত্রার পর বিকালে শিবমন্দির এলাকায় জোটের ছাত্র, যুব মহিলারা বিরাট মিছিল করে গোটা এলাকায় পরিক্রমা করেন। দেবাডাঙাতেও জোটের কর্মিসভা হয়। তার পরে কখনও মাটিগাড়া, কখনও বেলগাছি চা বাগান, কখনও কিরণচন্দ্র চা বাগান আবার কখনও নকশালবাড়ির বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে জোট প্রার্থীর প্রচার হয়। প্রার্থীর সঙ্গে সব সময় ছিলেন মহকুমা পরিষদের সিপিএমের সভাধিপতি তাপস সরকার থেকে জেলার নেতা গৌতম ঘোষেরা। ছিলেন কংগ্রেসের অমিতাভ সরকার, অলোক মিত্রওরাও।

জোট কর্মীরা জানান, এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভ রয়েছে। তাই অনেক জায়গায় বিক্ষুব্ধরা তলতলে আমাদের হয়ে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে রাহুল গাঁধীর আসার কথা রয়েছে। সেই সভায় অনেক তৃণমূল নেতা কর্মী দল ছাড়বেন বলেও ঠিক হয়েছে। প্রার্থী শঙ্করবাবু জানান, মানুষ তো দেখেছে। উন্নয়য়নের কথা মুখে বলে আসলে ক্ষমতা, দাদাগিরি, সিন্ডিকেট ছাড়া কিছুই হয়নি। তাই গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ জোট
করে দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

preparation derby
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE